ডুমুরিয়ায় আত্মহত্যার প্রবনতা বৃদ্ধি গত এক বছরে ৬৫ জন

0
425

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি: ডুমুরিয়ায় আত্মহত্যার প্রবনতা উদ্বেগ জনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনে দিনে জনসচেনতা, জীবন যাত্রার মান ও শিক্ষার হার বৃৃদ্ধি পেলেও কমছে না এর প্রাদূর্ভাব। যা গত ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সালে ৯জন বৃদ্ধি পেয়েছে। পরকীয়া প্রেম, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, নারী-নির্যাতন ও সচেতনতার অভাব এর মুল কারন বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারনা। তাহলে কিসে এর প্রতিকার এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলছে ‘আত্মহত্যা মহাপাপ’-সকল ধর্মের এ বাণী সকলের কাছে পৌছে দিতে পারলে কিছুটা হলেও এর প্রভাব কমবে। তবে এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন থাকলেও মিলছে না এর স্থায়ী কোন সমাধান। থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে ডুমুরিয়ায় ৫৬ জন নারী-পুরুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯ সালে এর সংখ্যা দাড়ায় ৬৫ জন। যা বিগত এক বছরের তুলনায় আরও ৯জন বেশী। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশী নারী। ২০১৯ সালের আত্মহত্যার তালিকায় যাদের নাম উঠে এসেছে, এদের মধ্যে রয়েছে ৫জানুয়ারী উপজেলার উলা গ্রামের শাহানারা বেগম (৪৫), ৭জানুয়ারী ঝরঝরিয়া এলাকার স্কুলছাত্রী ববিতা সরদার (১৫), ১৭জানুয়ারী কুলবাড়ীয়া এলাকার ইরানী খাতুন (১৩), ২৭ জানুয়ারী কাটেঙ্গা এলাকার ইসলাম শেখ (৪০), ৬ফেব্রুয়ারী আরশনগর এলাকার বৃদ্ধা রিংকু বেগম (৭০), ২১ফেব্রুয়ারী মাগুরাঘোনা এলাকার স্কুলছাত্রী রিয়া খাতুন (১৪), ২২ফেব্রুয়ারী বালিয়াখালী এলাকার নাসরিন খাতুন (১৯), একই দিনে কোড়াকাটা এলাকার লাবনী সরকার (১৮), ২০মার্চ রামকৃষ্ণনগর এলাকার সৌমিত্র মল্লিক (৪০), ২১মার্চ কাঞ্চনপুর এলাকার শিশু উজ্জ্বল মন্ডল (১২), ২৮মার্চ পাতিবুনিয়া এলাকার সনজিত মন্ডল (৪৪), ৪এপ্রিল আন্দুলিয়া এলাকার ইমান সরদার (১৬), ৫এপ্রিল খর্ণিয়া এলাকার ইব্রাহিম গাজী (৩০), ১৫এপ্রিল টোলনা এলাকার মুক্তা বেগম (২৮), ২৩এপ্রিল হোগলাবুনিয়া এলাকার সুনিত বৈদ্য (৩৮), ৩০এপিল রুপরামপুর এলাকার অভিষেক ম্ন্ডল (২৯), ৯মে কুলবাড়ীয়া এলাকার আবু তাহের (২৪), ১২মে কৃষ্ণনগর এলাকার যুগল বালা (২৮), ১৮মে উখড়া এলাকার রিক্তা বেগম (২৪), ১৯মে হাজিডাঙ্গা এলাকার সাগর মন্ডল (১৭), ২৭মে মেছাগ্রাম এলাকার আছাদুল মোড়ল (৩৮), ৩১মে গোলনা এলাকার আরতি দাস (২৮), ১০জুন মাগুরাঘোনা এলাকার ফরিদা বেগম (৪৫), ১১জুন কৃষ্ণনগর এলাকার ঠাকুর দাসী (৮০), ১২জুন হাজিবুনিয়া এলাকার মোহন রায় (৭০), ১৬জুন খড়িবুনিয়া এলাকার খোকন রায় (৬৫), ৩০জুন জিয়ালতলা এলাকার বিমলা সরকার (৬৫), ২৩জুলাই মির্জাপুর এলাকার শুভজিত মন্ডল (২০) সহ বিভিন্ন বয়সী ৬৫ জন নারী-পুরুষ। কিন্তু কেন আত্মহত্যার এত প্রবনতা ? আর কিসেই বা এর প্রতিকার এ নিয়ে কথা হয় অধ্যাপক মুফতি আব্দুল কাইয়ুম জমাদ্দার, পুরোহিত কৃষ্ণপদ চক্রবর্ত্তী ও ওসি মোঃ আমিনুল ইসলামের সাথে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মুফতি আব্দুল কাইয়ুম জমাদ্দার ও পুরোহিত কৃষ্ণপদ চক্রবর্ত্তী একই সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, আত্মহত্যা মহাপাপ-সকল ধর্মের এ বাণী সকলের কাছে পৌছে দিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে, তাহলে কিছুটা হলেও এর প্রভাব কমবে। পরকীয়া প্রেম, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, নারী-নির্যাতন ও সচেতনতার অভাব আত্মহত্যার মুল কারন এমনটি উল্লেখ করে ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, রাগ-মান-অভিমান, দুঃখ-কষ্ট সবার জীবনে কম বেশী থাকবে এর অর্থ এই নয়, যে আত্মহত্যার করতে হবে। আর প্রতিকারে সর্বস্তরের লোক এগিয়ে আসতে হবে।