টার্গেট ৮ ফেব্রুয়ারি, মাঠ দখলে সরকারি দল এগিয়ে

0
447

টাইমস প্রতিবেদক : এমনিতেই বিরোধীদলগুলো এখন ম্রিয়মান। আওয়ামী লীগ সরকারি দল হিসেবে নাশকতা প্রতিহত করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। মাঝখান দিয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শ এখন পতনের মুখে পড়েছে। এখন কোন দল যে গণতন্ত্র চাচ্ছে তা ঠাহর করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্রের কথা বলছে সব রাজনৈতিক দল কিন্তু রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি চোখে পড়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সংসদ অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় গণতান্ত্রিকভাবে কার্যকর হতে পারছে না।
প্রখ্যাত রাজনীতি বিজ্ঞানী ড. রওনক জাহান রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন, নির্বাচন ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, কালোটাকার প্রভাব বৃদ্ধি ও রাজনীতির দুবৃত্তায়ন রাজনৈতিক মহিমান্বিত ঐতিহ্যকে ঘিরে ফেলেছে।
এর জবাবে রাজনৈতিকদলগুলোর পারস্পরিক দোষারোপ ছাড়া করার কিছু নেই। ষাটের ও সত্তরের দশকে যে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা- ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় আন্দোলনকে প্ররোচিত করে মতাদর্শগত রাজনীতিতে গতি সৃষ্টি করত তা এখন বন্ধ্যা প্রায়। এখন চলছে মাঠ দখলের রাজনীতি।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ওইদিন থেকে মাঠ দখলে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রায় যা-ই হোক বিএনপিকে রাস্তায় কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে শক্তভাবে দমন করা হবে। এ দমন কি বিশৃঙ্খলার সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে কি না এর জবাব কে দেবে?

অন্যদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যেনতেন রায় জনগণ মেনে নেবে না। ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ কোনো রায় দেয়া হলে বিএনপি ও জনগণ রাস্তায় নেমে আসবে। ন্যায়বিচার না হলে পথে নামার জন্য প্রস্তুতি নিতে তিনি দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি শনিবার আহ্বান জানিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার রায় ঘিরে দেশে যাতে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য সারাদেশে সতর্ক রয়েছে আওয়ামী লীগ। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজপথসহ সারাদেশের মাঠ দখলের রাখার টার্গেট নিয়েছে দলটি। দলের একাধিক নেতা বলছেন, রায়কে ঘিরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কোন সুযোগই বিএনপি পাবে না। কারণ মাঠ থাকবে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির দখলে।

ইতিমধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নেতারা সারাদেশ সফরে নেমে পড়েছেন। আর এ সফরের মাধ্যমে দেশবাসীকে জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি প্রতিহত করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। মাঠ দখলে রাখতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরও নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি সরকারও নাশকতা প্রতিহত করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

একই সঙ্গে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা প্রতিহত করতে সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অতীতে যারা আগুন সন্ত্রাসে জড়িত ছিলেন তাদের নজরদারিতে রাখা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি তাদের আহ্বানে জনগণ বেশ সাড়া দিচ্ছে।

অতীতের মতো ফের জ্বালাও-পোড়াও হলে তা প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশবাসীও। এতে আওয়ামী লীগের মধ্যে আস্থা বাড়ছে। এ কারণে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি জনগণই প্রতিহত করবে, আওয়ামী লীগের কোন প্রয়োজন পড়বে না।

যা কিছু চলছে রাজনীতির নামে তার মধ্যে রাজনীতি কতটুকু রয়েছে বলা মুস্কিল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান আরো বলেছেন, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, মাস্তান, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে একটি চক্র গড়ে উঠেছে। এ চক্রই রাজনীতিকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। ফলে কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে গণতন্ত্রকে আরো মজবুত করা সম্ভব হচ্ছে না।