জয় দিয়ে বছর শেষ করলো লিভারপুল, চেলসি, সিটি

0
263

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : লিগ টেবিরের সপ্তম স্থানে থাকা উল্ফসের বিপক্ষে ১-০ গোলের কষ্টার্জিত জয়ের মাধ্যমে বছর শেষ করেছে শীর্ষে থাকা লিভারপুল। বছর শেষে ১৩ পয়েন্টের লিড ধরে রাখার জন্য অবশ্য লিভারপুলকে ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তা নিতে হয়েছিল। এদিকে মিকেল আর্তেতার অধীনে প্রথম হোম ম্যাচে আর্সেনালকে জিততে দেয়নি চেলসি। পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ব্লুজরা। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি সার্জিও আগুয়েরো ও কেভিন ডি ব্রুইনার দ্বিতীয়ার্ধের গোলে শেফিল্ড ইউনাইটেডকে পরাজিত করে দ্বিতীয় স্থানে থাকা লিস্টারের সাথে পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়েছে। যদিও মৌসুমের মাঝামাঝিতে এসে লিভারপুলের সাথে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান এখনো ১৪। এ্যানফিল্ডে বিতর্কিত ম্যাচটিতে ৪২ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেছেন সাদিও মানে। এই নিয়ে লিগে ঘরের মাঠে টানা ৫০ ম্যাচ অপরাজিত থাকলো রেডরা। ম্যাচ শেষে লিভারপুল বস জার্গেন ক্লপ বলেছেন, ‘এভাবে এতগুলো ম্যাচ একবারে জেতা যদি সহজ হতো তবে অনেক দলই সেটা করে দেখাতো। কাজটা মোটেই সহজ নয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের ওপর আস্থা রাখতে হয়। অনেক দিনই আমাদের সামনে কঠিন সময় এসেছে। কিন্তু ছেলেরা শেষ পর্যন্ত তা করে দেখিয়েছে। সত্যিকার অর্থেই আমি তাদের নিয়ে গর্বিত।’ বিরতির তিন মিনিট আগে মানের গোলটি প্রাথমিক ভাবে এডাম লালানার হ্যান্ডবলের কারনে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভিএআর প্রযুক্তি অন-ফিল্ড রেফারি এন্থনী টেইলরের সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত করে দেয়। মিনিটখানেক পরে পেড্রো নিয়েটোর লো শটে এলিসন বেকার পরাস্ত হলে সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল উল্ফস। কিন্তু আবারো সেই ভিএআর প্রযুক্তি অল্পের জন্য উল্ফস ডিফেন্ডার জনির অফ-সাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়। উল্ফস অধিনায়ক কনর কোয়াডি বলেছেন, ‘আজ আমরা সত্যিকার অর্থেই দূর্ভাগ্যের শিকার। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। অনেকেই হয়ত এটাকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলবে। কিন্তু আমার পুরো দল এটাকে সঠিক বলতে নারাজ। আমার কাছে এই প্রযুক্তির কোন অর্থ নেই।’ শুক্রবার ম্যানচেস্টার সিটিকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে দারুন আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নেমেছিল উল্ফস। বিরতির পরও অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ার আরো কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল উল্ফস। ডিয়োগো জোটাকে হতাশ করেন বেকার। আর রাউল জিমিনেজ ও এডামা ট্রায়োরের শট অল্পের জন্য ডিফ্লেকটেড হয়ে বাইরে চলে যায়। গত ১৫ লিগ ম্যাচে মাত্র দুটিতে পরাজিত উল্ফস চতুর্থ স্থানে থাকা চেলসির থেকে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে বছর শেষ করলো। ফ্র্যাংক ল্যাম্পার্ডের চেলসি এমিরেটস স্টেডিয়ামে নাটকীয় ম্যাচে জয়ী হয়ে শেষ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই বাড়ি ফিরেছে। ম্যাচ শুরুর ১৩ মিনিটের মধ্যে পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াংয়ের গোলে অক্টোবরের পর প্রথমবারের মত ঘরের মাঠে জয়ের সুবাতাস পাচ্ছিল আর্সেনাল। মৌসুমে এটি ছিল গানার্সদের অন্যতম সেরা শুরু। তিনজন ভিন্ন ম্যানেজারের অধীনে আরো একবার রক্ষনভাগের দূর্বলতার কারনে সেই লিড ধরে রাখতে পারেনি আর্সেনাল। ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে ম্যাসন মাউন্টের ফ্রি-কিক থেকে বদলী খেলোয়াড় জর্জিনহো গোলরক্ষক বার্নাড লেনোকে পরাস্ত করলে সমতায় ফেরে চেলসি। ৮৭ মিনিটে কাউন্টার এ্যাটাকে উইলিয়ানের ক্রস থেকে টামি আব্রাহাম দলের জয় নিশ্চিত করেন। মাত্র ৩৪ মিনিটে এমারসনের পরিবর্তে জর্জিনহোকে নামিয়ে দারুন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ল্যাম্পার্ড। আর কোচের এই আস্থার প্রতিদান ঠিকই দিয়েছেন ইতালিয়ান এই মিডফিল্ডার। ল্যাম্পার্ড বলেন, ‘৩০ মিনিট পর্যন্ত আমরা কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম, নার্ভাসও ছিলাম। দ্বিতীয়ার্ধটা কৌশল ছাড়া আর কিছুই ছিল না। গতি আর লক্ষ্য দিয়েই আমরা ম্যাচ শেষ করেছি। ইতিহাদ স্টেডিয়ামেও কালকের ম্যাচে ভিএআর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যদিও ঘরের মাঠে সিটিজেনরা তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি। বিরতির ঠিক আগে অফ-সাইডের কারনে শেফিল্ডের একটি গোল বাতিল করা হয়, যার পিছনে মূল কারিগর ছিল ভিএআর প্রযুক্তি। ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার লিস মৌসেটের এই গোলের পর আরেকটি সুযোগও হাতছাড়া হয়। গোলরক্ষক ক্লডিও ব্র্যাভোকে একা পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি মৌসেট। ডি ব্রুইনার বাড়ানো বলে আগুয়েরো ৫২ মিনিটে সিটিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। ম্যাচ শেষের আট মিটি আগে ডি ব্রুইনা নিজেই গোল করে সিটির জয় নিশ্চিত করেন।