জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী

0
310

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন ১০ জানুয়ারি থেকে। আর ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ, অর্থাৎ জাতির পিতার এক জন্মদিন থেকে আরেক জন্মদিন পর্যন্ত বছরটি উদযাপিত হবে মুজিব বর্ষ হিসেবে। সে হিসাবে আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো মুজিব বর্ষ। নানা আয়োজনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালিত হবে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং বাংলাদেশে আক্রন্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ৮ মার্চ বাংলাদেশ সরকার এবং জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি জনস্বার্থে ও জনকল্যাণে ১৭ মার্চের পূর্ব ঘোষিত অনুষ্ঠান ছোট পরিসরে করার ঘোষণা দেয়। একইসাথে আমন্ত্রিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সফরও বাতিল করা হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়।
এই সংকটের মধ্যেও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মুজিব বর্ষ উদযাপনের নানা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে বছরব্যাপী মহাযজ্ঞের মধ্যে থাকছে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিবস ঘিরে বড় পরিসরের কর্মসূচির পাশাপাশি পুরো বছরে থাকছে বিভিন্ন আয়োজন। এছাড়া আনন্দ আয়োজন, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, আন্তর্জাতিক প্রকাশনা, বাংলা ও ইংরেজিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জন্মশতবার্ষিকী স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ। বছরব্যাপী উৎসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবের প্রতি গভীর অনুরাগ প্রকাশ করা হবে। গান, কবিতা, নৃত্যায়োজন, নাটক, সিনেমাসহ সব মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে বঙ্গবন্ধুর কীর্তি। সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থা-সংগঠন, রাজনীতিবিদ, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিকর্মীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সমস্ত আয়োজনের মধ্য দিয়ে কৃতজ্ঞ জাতি মহান নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানবে। প্রিয় পিতার জন্মশতবর্ষ হয়ে উঠবে বাঙালির নতুন করে জেগে ওঠার বড় উপলক্ষ।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই ১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মের শত বছর পূর্ণ হচ্ছে। আর ঠিক পরের বছর ২৬ মার্চ বাংলাদেশ উদযাপন করবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এদুটিই বাঙালি জাতির জন্য অনেক বড় পাওয়া। তবে ঘটা করে মুজিববর্ষ শুধু পালন করলেই হবে না। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে তা যদি জীবনে ও দেশের কাজে লাগানো যায়, তা হবে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা ও স্মরণ করার শ্রেষ্ঠ উপায়। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এই স্বাধীন দেশে মানুষ যখন পেট ভরে খেতে পাবে, পাবে মর্যাদাপূর্ণ জীবন; তখনই শুধু এই লাখো শহীদের আত্মা তৃপ্তি পাবে।’ বঙ্গবন্ধুর সেই বাংলাদেশ আজ অনেক পাল্টে গেছে। এই ইতিবাচক পরিবর্তন, এই অদম্য বাংলাদেশের রূপকার শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।