জনতা ব্যাংকে কেএমপিআই শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

0
621

বেল্লাল হোসেন সজল : জনতা ব্যাংকের আলমনগর শাখায় দীর্ঘলাইন। এ লাইন গত দু’দিন ধরে। উদ্দেশ্য খুলনা মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ফরম ফিলাপের টাকা জমা দেওয়া। ব্যাংকের জনবল সংকট ও সময় সল্প হওয়ায় শিক্ষার্থীদের দূরভোগ ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খুলনা মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা ফরম ফিলাপের টাকা জমা দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে আশংকা।

খুলনা মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট তাদের ১২’শ শিক্ষার্থীর জন্য চার দিন সময় বেধে দিয়েছে। ৭ থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ৩’শ জন করে মোট ১২’শ শিক্ষার্থীকে চার দিনে ফরম ফিলাপের টাকা জমা দিতে হবে। তা না হলে ১১ অক্টোবর থেকে জরিমানা দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হবে।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন সকল সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাক্রমের সকল পর্বের নিয়মিত, অকৃতকার্য বিষয়ের ও অনিয়মিত শিক্ষার্থীর ফরম ফিলাপের জন্য গত ৩ অক্টোবর তাদের ওয়েব সাইটে এক নোটিশ প্রকাশ করা হয়। যাহাতে ফরম ফিলাপের শেষ সময় ১৪ অক্টোবর ধার্য করা হয়েছে। ৩০০ টাকা জরিমানা দিয়ে ১৫ অক্টোবর ফরম ফিলাপ করা যাবে।

ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ৭ অক্টোবর ৪৩ জন, ৮ অক্টোবর ১৪০ জন ও ৯ অক্টোবর ২৩০ জন টাকা জমা দিতে পেড়েছে। হাতে সময় একদিন থাকলেও শিক্ষার্থী বাকি রয়েছে ৭৮৭ জন। সূত্রমতে, একদিনে ৭৮৭ জন শিক্ষার্থীর ফরম ফিলাপের টাকা জনতা ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষাথীদের উপচে পরা ভিড়। শত শত শিক্ষার্থীরা রাস্তার পাশে ধুলা-বালির ও প্রচন্ড রোদে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কারো মাথায় ছাতা, কেউবা বই-খাতা মাথায় দিয়ে রোদ আড়াল করছে। ব্যাংকে লেনদেন করতে আশা গ্রাহকেরা সিঁড়ি দিয়ে উঠতে ভোগান্তিতে পড়ছে। শিক্ষার্থীদের গাঁ ঘেষে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হচ্ছে ব্যাংকে। ব্যাংকের ভেতরে দেখা যায়, একজন কমকতা ই ফরম ফিলাপের টাকা ও অন্যান্য গ্রাহকের টাকা গ্রহন করছে।

খুলনা মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ কাজী নেয়ামুল শাহীন জানান, ব্যাংকের সাথে আমাদের সব সময় কথা হয়। তারা এই বিষয় কিছু বলেনি। ব্যাংকের সাথে আমাদের চুক্তি রয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দেবে। তারা চাইলে আমরা শিক্ষক দিবো। ব্যাংক ব্যতিত অনলাইনে টাকা নিতে গেলে দেখা যাবে সার্ভার কাজ করছে না। তখন শিক্ষার্থীরা বলবে টাকা দিয়েছি আমরা বলবো টাকা পাইনি। এই নিয়ে আরেকটি ঝামেলা হবে। আর আমাদের শিক্ষার্থী কম এর জন্য অন্য বিকল্প নেই। এছাড়া টাকা টা আমরা নিজেরা নিতে পারি। কিন্তু সচ্ছতার জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা নেওয়া হচ্ছে।
জনতা ব্যাংক আলমনগর শাখার ব্যবস্থাপক কাজী সালাহ্ উদ্দিন জানান, আমরা আমাদের পূর্ণতা দিয়ে কাজ করছি। আরেকটু সময় হলে ভাল হত। আমাদের দু’জন অফিসার ও একজন পিয়ন ফরম ফিলাপের টাকা জমা নেওয়ার কাজ করছে।

জনতা ব্যাংক আলমনগর শাখায় সঞ্চয় টাকা জমা দিতে আসা ইসলাম নামের এক গ্রাহক বলেন, ব্যাংকে এত পরিমাণ ভিড় যেন ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। আর একজন ব্যাক্তিই সকলের টাকা নিচ্ছে। ব্যাংকের জনবল খুবই কম। শিক্ষার্থীরা যেভাবে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আছে তাতে কোন প্রকার ধাক্কা লাগলে বড় আকারের বিপদ হতে পারে।

দীর্ঘলাইনে দাড়িয়ে থাকা এক শিক্ষার্থী জানান, গতকাল দীঘলাইন দিয়ে ও টাকা জমা দিতে পারিনি। তাই আজ সকাল ৯টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন জানি না কত সময় প্রয়োজন ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করতে। কারন, ব্যাকের ভেতরে মাত্র ১০ জন শিক্ষার্থী প্রবেশ করতে পারে। আরেক শিক্ষার্থী জানায়, কলেজ থেকে ব্যাংকে আসা যাওয়ার জন্য ২০টাকা ভাড়া লাগে। আর তার উপর রাস্তায় দীর্ঘলাইন। যদি কলেজে বিভাগ ভাগ করে ফরম ফিরাপের টাকা জমা নেওয়া হত। তবে আমাদের জন্য অনেক ভাল হত।