গুন্ডাতন্ত্র কাকে বলে : কামালকে কাদেরের প্রশ্ন

0
334

টাইমস ডেস্ক:

দেশে গুণ্ডাতন্ত্র চলছে গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেনের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গুন্ডাতন্ত্র কাকে বলে তা সবিনয়ে কামাল হোসেনকে জিজ্ঞাসা করতে চাই?

মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোথায় কি হচ্ছে সেটা আমরা জানি। সরকার কিছু জানে না, সেটা ভাবলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। সবকিছুই আমরা জানি। সবকিছুই আমাদের নলেজে আছে। কত ষড়যন্ত্র হয়েছে, শত বৈঠক হয়েছে ব্যবস্থা নিলে কারো জেলের বাইরে থাকার কথা ছিল না। কিন্তু আমরা ধৈর্য ধরছি।

তিনি বলেন, আমাদের আহত কর্মীকে হাইজ্যাক করা হয়েছে। তা গণমাধ্যমেও দেখলাম, এ সংবাদ শুধু দেশে নয়, কিছু কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থাও করছে। আজকে দেশের বাইরেও অপপ্রচারে লিপ্ত।

তিনি আরও বলেন, সব দোষ আওয়ামী লীগের, আমাদের ছাত্রলীগের। ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হয়েছে। এখনও তারা ভালো করে গুছিয়ে উঠতে পারেনি। এ এলাকায় ছাত্রলীগের (ধানমন্ডি) কোনো কমিটি ছিল না। যারা আহত হয়েছে তাদের বেশিরভাগই সাবেক ছাত্রনেতা, বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্যরা। তাদের মধ্যে ৪৬ আহত হয়েছে। আক্রান্ত হলাম আমরা কিন্তু এখন দেশে-বিদেশে সুপরিকল্পিতভাবে অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। আমাদের আক্রমণকারী চিহিৃত করে দলের এবং ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

কাদের বলেন, কানাডার আদালতে প্রমাণিত সন্ত্রাসী দল বিএনপি তাদের চিহিৃত সন্ত্রাসীদের জন্য যে কলঙ্ক অর্জন করেছিল তা আজকে চাপিয়ে দিতে চেয়েছে আওয়ামী লীগের ওপর, আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর। আমরা এ ঘৃণ্য অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানাই।

আমাদের উপর যত অপবাদ ও ষড়যন্ত্র হোক না কেন। আমরা উন্নয়ন কাজ করে তার জবাব দিব। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে যতটা সম্ভব ধৈর্য সহনশীলতা প্রদর্শন করব। কিন্তু ধৈর্যের বাদ ভেঙে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এ সময়ে যারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চান, তারা টার্গেট করেন সাংবাদিকদের। কারণ সাংবাদিকদের টার্গেট করে ফায়দা তোলার চেষ্টা এ দেশে অনেকবার হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই এটা হয়। আমাদের দেশেও আমরা তা বারবার লক্ষ্য করেছি। ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল আমি সাংবাদিকদের বলেছি, ছাত্রলীগের ওপর অপবাদ আসছে। আপনারা আমাকে তালিকা দিন। কারা কারা এতে জড়িত আছে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো। সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থাও আমরা নিবো। শেখ হাসিনার সরকারে আমলে অন্যায় ও অপকর্ম করে কেউ রেহাই পায় না। ছাত্রলীগের কেউ যদি সাংবাদিক নির্যাতনে জড়িত থাকে তাহলে আমরা কোন অবস্থায় ছাড় দিব না। এটা আমাদের নীতি এবং সিদ্ধান্ত।

শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে জাতিসংঘের এমন বিবৃতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘে জানিয়েছি এগুলো অপপ্রচার।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে চলমান আন্দোলন নিয়ে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, তা কবে হবে এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, আটঘাট বেঁধে তদন্ত হচ্ছে। যাতে ধরা পড়লে কেউ জাল ছিঁড়ে বের না হতে পারেন।

সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী তানজীম আহমেদ সোহেল তাজের ফেসবুক স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের রাজনীতির বাইরে আছেন। এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, রমিজউদ্দিন কলেজ সংলগ্ন রাস্তায় আন্ডারপাস দ্রুততার সঙ্গে নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিয়েছি। আগামী রোববার প্রধানমন্ত্রী এ আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করবেন। আরেকটি হলো বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত। এ দুটি আন্ডারপাস নির্মাণে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে সচিব ও প্রধান প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দিয়েছি।

আন্দোলন প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফিরে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, অভিভাবক, শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। কিশোর-কিশোরী শিক্ষার্থীরা রাজপথ থেকে ঘরে ফিরে গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, গোলাম রাব্বানী চিনু, মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।