খুলনা মহানগরীসহ অধিকাংশ বাজারে চলে এসেছে শীতকালীন সবজি

0
679

ফকির শহিদুল ইসলামঃ
গরুর মাংস বিক্রির বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না । মাংস বিক্রিতারা নিজস্ব চার্ট তৈরি করে ৪৮০-৫০০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করছে খুলনা মহানগরীসহ অধিকাংশ বাজারের মাংস পট্রিগুলোতে। তবে সিটি কর্পোরেশনের আলাদা কোনো চার্ট চোখে পড়েনি। তবে কয়েকজন মাংস বিক্রেতা ৪৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি করলেও মাংস ক্রেতারা দাবি করছেন ৫০০ টাকাতেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস।

অন্যদিকে বেশ আগেভাগেই বাজারে চলে এসেছে শীতকালীন সবজি হিসেবে সমধিক পরিচিত শিম। তবে দাম বেশ চড়া। নগরীর বিভিন্ন বাজারে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকায়। শিমের পাশাপাশি চড়া দামে বক্রি হচ্ছে ফুলকপি, পাকা টমেটো ও উস্তে। তবে দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসায় নগরীর বাজারে কমতে শুরু করেছে সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম। গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। মরিচের ঝাঝও কমে এসেছে।

শুক্রবার মহানগরীর বড়বাজার, নতুন বাজার, ময়লাপোতা বাজার,দৌলতপুর বাজার,নিউ মার্কেট বাজার,চিত্রালী পৌর সুপার মার্কেটসহ নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

নিজেদের বেঁধে দেওয়া দামে মাংস বিক্রি প্রসঙ্গে বিক্রেতা আরজু বলেন, যারা আমাদের গরুর মাংসের মুল্য বেধে দেয় তারাতো আমাদের গরু সরবরাহ করেনা । তারা শুধু দাম বেঁধে দেয়। তাদের দামে আমরা হাট বাজারে গরু পাই না। মাংস কিভাবে ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবো।

এদিকে বন্যা, অতিবৃষ্টি ও সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে উচ্চমূল্যে বিক্রি হলেও অবশেষে বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় কমে এসেছে কাঁচা মরিচের দাম। সরবরাহ ঠিক থাকলে মরিচসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়বে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

মরিচের বাজার ঘুরে দেখা যায়,গত সপ্তাহে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া মরিচ বাজারভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের অজুহাতে প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রি হয়েছে প্রতিটি সবজি। গত সপ্তাহে বাজারে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া সবজি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪৫ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কম ছিল। খুলনার আশ পাশের জেলার পরিবহন মালিকরা ট্রাক,কর্ভাড ভ্যান পাঠাতে আতঙ্কে ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ না থাকায় বর্তমানে খুলনাসহ সারাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করায় বাজারে সব রকম সবজির সরবরাহ ভালো। তাই দাম কমতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, করলা ৫০ টাকা এবং প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়।

গত সপ্তাহের মতোই খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। আর পাইকারি বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১০ টাকায়। খুচরা বাজারগুলোতে প্রতি হালি ডিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায় আজ।

এদিকে স্থিতিশীল রয়েছে মাছ ও মুরগির দাম। বাজারে গত সপ্তাহের মতো বয়লার মুরগি ১৪০-১৫০ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগি ২২০-২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি জোড়া কর্ক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৬০ টাকা।

মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রুই ২৮০-৩৬০ টাকা, কাতলা ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-২০০, আইড় ৪০০-৬০০ টাকা, বাইলা ৩৬০-৫০০ টাকা, বাইন ৪০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৪৫০-৬০০ টাকা, পুঁটি ১৮০-২০০ টাকা, পোয়া ৪০০-৬০০ টাকা, মলা ৩২০-৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৫০০ টাকা, বোয়াল ৪৫০-৫০০ টাকা, শিং ৪০০-৭০০, দেশি মাগুর ৫০০-৭০০ টাকা, শোল ৫০০-৬০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৪০-১৬০ টাকা, চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়।