খুলনা মহানগরীতে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয় স্কুল শিক্ষার্থীদের

0
864

নেই জেব্রা ক্রসিং ও সিগন্যাল লাইট

খুলনা টাইমস:
সময় বেলা ২টা। নগরীর নৌ পরিবার শিশু নিকেতন স্কুল ছুটি হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী নওশীন সাইয়ারা অর্পিতা অপেক্ষা করছে তার নানার জন্য। স্কুল ছুটির পর নানা শফিকুল ইসলাম তাকে মোটরসাইকেলে করে নিতে আসেন। নানা শফিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান,‘নগরীর মুজগুন্নি এলাকায় অবস্থিত স্কুলটির প্রধান ফটকের সামনে ছুটির সময় অভিভাবকদের প্রচন্ড ভীড়। তাই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অভিভাবকদের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। স্কুলের সামনের সড়কটিতে কোন জেব্রা ক্রসিং বা সিগন্যাল লাইট নেই। সারাক্ষণ এই সড়কে শত শত প্রাইভেট কার,রিকশা,মাহেন্দ্র, ইঞ্জিনচালিত অটোবাইক ও রিকশা চলাচল করছে। যা প্রতিটি শিশুর জন্য চরম ঝুঁকির।’
প্রথম শ্রেণীর ছাত্র শান। শেরে বাংলারোডের আমতলা মোড় এলাকায় জোহরা খাতুন শিশু বিদ্যা নিকেতনের ছাত্র। তার বাবা শহীদ হোসেন রনি জানান, ‘প্রতিদিন দুপুর দেড়টা থেকে ২টা পর্যন্ত স্কুলের সামনে প্রচন্ড ভীড় হয়। ট্রাফিক ব্যবস্থা হালচাল ঐখানে একদিন গেলেই বুঝতে পারবেন। শত শত গাড়ি ও অভিভাবকদের চাপে শিশুরা দিক বেদিক ভাবে ছুটাছুটি করে। স্কুলের সামনে গাড়িগুলোর গতি নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা নেই। এমনকি নিরাপদ জোন বা জেব্রা ক্রসিংয়ের কোন ব্যবস্থা। ফলে ভয়ঙ্কর ভাবে প্রতিদিনই দূর্ঘটনা হয়। দূর্ঘটনার মূল কারণ ইঞ্জিনচালিক ইজিবাইক ও রিকশা।’
অপির্তা বা শান নয়। নগরীর আনাচে কানাচে অবস্থিত সকল স্কুল প্রতিষ্ঠানের সামনেই একই চিত্র। প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের স্কুলে পৌছে দিতে এবং ছুটির সময় অভিভাবকদের দুশিন্তায় থাকতে হয়। বিশেষ করে গল্লামারী, নিরালা মোড়, নিউ মার্কেট, পাওয়ার হাউস মোড়, ময়লা পোতা, সাতরাস্তা সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে এমন চিত্র নিত্য দিনের। অন্যদিকে অপরিকল্পিত ইজিবাইক, মহেন্দ্র, ফুটপাত দখল করে ব্যবসা বাণিজ্য নগরীর যানজট এবং ভোগান্তির অন্যতম কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ব্যাপারে এসি ট্রাফিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমাদের একটি টিম স্কুল টাইমে ডিউটি করে। অন্যান্য স্থানে জেব্রা ক্রসিং, সিগন্যাল লাইট ও গতিরোধক না থাকলে সেটির বিষয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। কারণ স্কুলের সামনে এসবগুলোর ব্যবস্থা করার দায়িত্ব তাদের
এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইকবাল হোসেন জানান, আমি সঠিকভাবে জানি না। এগুলো ইঞ্জিনিয়ার সেকশন দেখাশুনা করে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে অবশ্যই জেব্রা ক্রসিং, সিগন্যাল লাইট ও গতিরোধক থাকা উচিৎ। যদি না থাকে তাহলে ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা জেলা শাখার উদ্যোগে মহানগরীর কিন্ডার গার্ডেন, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, প্রাইমারী ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সামনে জেব্রা ক্রসিং, সিগন্যাল লাইট ও গতিরোধক না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্কুল ভিত্তিক সড়ক নিরাপত্তা ও সচেতনতা মূলক এক অনুষ্ঠানে তারা অবিলম্বে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবি করেছেন।