খুলনা জেলা স্কুলের ছাত্রকে শিক্ষক কর্তৃক বেদম প্রহার

0
471

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাটাইমস;

শিক্ষকের প্রহারে গুরুতর আহত হয়েছে খুলনা জিলা স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সৃজন বড়াল তুর্য (১২)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত তুর্য খুলনা জেলা কারাগারের ফার্মাসিস্ট তুহিন কান্তি বড়াল এবং জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স তপতী রাণীর ছেলে। তার রোল নম্বর ৫১, ডে শাখা। এদিকে, শিক্ষক কর্তৃক সন্তানের এ পরিস্থিতিতে হকবাক ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন অভিভাবকরা। তবে, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অনুতপ্ত হয়েছেন শিক্ষক ফরহাদ গাজী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও তুর্যের পরিবারের সূত্র জানান, সৃজন বড়াল তুর্য বৃহস্পতিবার টিফিন পিরিয়ডে ক্লাস রুমের বাইরে বের হয়। ঠিক ওই সময় সহকারী শিক্ষক (গেমস) ফরহাদ গাজী মাঠে অন্য ছাত্রদের খেলাধুলা করাচ্ছিলেন। টিফিন থাকায় তুর্য কিছু সময় দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিল। এ সময় ফরহাদ গাজী তাকে চলে যেতে বলে। কিন্তু যেতে কিছুটা দেরি হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে পেছন থেকে তাকে ধরে টেনে-হেঁচড়ে ক্লাস রুমে নিয়ে প্রচণ্ড মারধর করেন। এমনকি বাইরে ফুল বাগান থেকে লাঠি নিয়েও তাকে বেদম প্রহার করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার চিৎকারে অন্যান্য শিক্ষকরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। এ সময় শিক্ষকরা তার আঘাতের স্থানে বরফ লাগিয়ে কিছুটা উপশমের চেষ্টা করেন। পরে একাই তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
তুর্যের পিতা তুহিন কান্তি বড়াল বলেন, তার ছেলে বাসায় এসে শরীরে প্রচণ্ড ব্যাথার কারণে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে পারছিল না। এ সময় তার মা জিজ্ঞাসা করলে সে বিষয়টি প্রকাশ করে। তাকে ধরে বাসায় নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথা এবং হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মানুষ গড়ার কারিগর খ্যাত একজন শিক্ষকের এ ধরনের আচরণে তিনি হতবাক ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
খুলনা জিলা স্কুলের শিক্ষক ফরহাদ গাজী বলেন, ‘তুর্যের কোন দোষ ছিল না, বিনা কারণেই তাকে মেরেছেন তিনি, তবে হঠাৎ উত্তেজিত হওয়ার কারণ বলতে পারেননি তিনি। তিনি বলেন, তুর্যকে মারার পর থেকে তিনি বুকে ব্যাথা অনুভব করছেন, অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ অপরাধের কারণে তিনি সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

এ ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই খুলনা দুই আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান, খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল সহ দলীয় নেতাকর্মীরা দ্রুত জেনারেল হাসপাতালে যান এবং তুর্যর সার্বিক খোজ খবর নেন।