খুলনা জেলা আ’লীগের কমিটি নিয়ে তৃণমূলের প্রত্যাশা

0
450

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ত্যাগী ও পরীক্ষীত নেতারাই আসুক খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে। গুরুত্বপূর্ণ পদে হাইব্রীডদের বদলে সক্রিয় মুজিব সৈনিকরাই যেন ঠাঁই পান। বারংবার উপেক্ষিতরা আর যেন বঞ্চিত না হয়। সাবেক ছাত্র ও যুব নেতাদের অগ্রাধিকার যেন প্রযোজ্য হয়। পরিবার-পরিজন ছেড়ে দলের জন্য দীর্ঘদিন যারা শ্রম, মেধা ও রাজপথের আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন, তারাই যেন কমিটিতে প্রাধান্য পান। দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের কাছে এমন সব দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রাণ বলে খ্যাত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক এসএম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ত্যাগী, পরীক্ষীত, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে, তারা ১/১১, জোট সরকারের নির্যাতন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সংগ্রাম করেছেন, তারাই যেন দলের জেলা কমিটিতে প্রাধান্য পান।
উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, এক এগারো’র সময় অনেকেই জয় বাংলা স্লোগান দিতে ভয় পেতো, জোট সরকারের আমলে রাজপথে মিছিল করা যেতো না, তখন সেই দূর্সময়ে কামরুজ্জামান জামাল এর নেতৃত্বে আমরা বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদের সাথে মিছিল-মিটিং করেছি। এজন্য জামালের মতোন ত্যাগী নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনার জোর দাবি তোলেন তিনি। একই সাথে হঠাৎ এসে জুড়ে বসা ব্যাক্তিদের যেন কমিটিতে ঠাঁই না মেলে, সেজন্য দলের সভানেত্রী-সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাবেক এই যুবনেতা।
দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও চালনা পৌরসভার মেয়র সনৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, আওয়ামী লীগকে যারা ভালোবাসে, যারা নৌকাকে ভালবাসা, এমন নেতাকর্মীরাই যেন জেলা আওয়ামী লীগের জেলা কমিটিকে আসেন। যারা ব্যাক্তি লীগ করে , তারা যেন পদে না আসেন এমনটা প্রত্যাশা করেন তিনি।
কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার সরদার বলেন, যারা রাজনীতিকে অভিজ্ঞ ও পরীক্ষীত, যারা ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রামে পরীক্ষীত ও ত্যাগী সৈনিক, তাদের নাম আমরা জেলা কমিটিতে প্রত্যাশা করি। একই সাথে আমরা চাই, দলের মধ্যে জামায়াত-বিএনপি এবং বিতর্কিত লোকের যেন জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে ঠাই না হয়। মোটকথা আমরা স্বচ্ছ ও সঠিক নেতৃত্ব চাই।
বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ হালদার বলেন, বিগত দিনে যারা দলের পরিশ্রম দিয়েছেন। যারা জেল-জুলুম সইয়েছেন, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী এমন নেতাকর্মীকে চাই আমরা। এখন দেখি অনেকের কোঠায় অপরিচিতরা পদে আসেন। যা মোটেই কাম্য নয়।
উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ সাবেক নেতা হুমায়ন কবির ববি, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি বাবলু, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বিএম জাফরসহ অনেকেই বাদ পড়েছে খসড়া কমিটি থেকে। বাদ পড়েছেন তিনি নিজেও, এমনকি অনেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের নাম আসেনি ওই কমিটিতে। এ ব্যাপারে তিনি দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল হাসান টিপু বলেন, আমাদের তেমন চাওয়া-পাওয়া নেই। জেলা আওয়ামী লীগের দুইজন অভিভাবক আছেন। তারা যেটা ভালো মনে করেন, সেভাবেই কমিটি করবেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে আছেন। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ পরপর ছয় দফা সভাপতি নির্বাচিত হন, এর আগে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, করেছেন ছাত্র ও যুব রাজনীতি। সুতরাং দল পরিচালনা করতে তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন বলে বিশ্বাস করি। তাছাড়া সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারীও দীর্ঘদিন রাজনীতিতে সক্রিয়, দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এজন্য জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতা দল পরিচালনায় ও চাঙ্গা রাখতে সঠিক নেতৃত্ব বেছে নেবেন বলে প্রত্যাশা তার।
দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জয়ন্তী রাণী সরদার বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনামতে, যারা দীর্ঘদিন দলে শ্রম দিয়েছেন, যারা পরীক্ষীত মুজিব সৈনিক তারাই কমিটিতে প্রাধান্য পায়। তাছাড়া জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে নারীর ক্ষমতায়ন। সুতরাং কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নারী নেতৃত্বের অগ্রাধিকার দেয়া হোক। দলের দুর্সসময়ে যারা রাজপথে ছিলেন তারা কমিটিতে আসুক। কোন মাই ম্যান যেন কমিটিতে ঠাঁই না পান। মোটকথা দলের খুলনা জেলা সভাপতি প্রবীন রাজনীতিক শেখ হারুনুর রশীদ এবং অভিজ্ঞ-পরীক্ষীত সৈনিক সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারীর নেতৃত্বে একটি স্বচ্ছ কমিটি তৃণমূল অচিরেই উপহার পাবেন বলে বিশ্বাস তার।