খুলনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে আসতে উন্মুখ সাবেক ছাত্রনেতারা

0
2391

এমজে ফরাজী:
দীর্ঘ ১৩ বছর পর আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে সামনে রেখে গঠন করা হয়েছে প্রস্তুতি কমিটি। নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন আয়োজন করতে কাজ করে যাচ্ছে এ কমিটি। এবারের সম্মেলনে শীর্ষ দুই পদের জন্য আলোচনায় আছেন বেশ কয়েকজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। যারা নেতৃত্বে আসতে উন্মুখ হয়ে আছেন।
দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় এবং একই কমিটি দিয়ে ১৩ বছর চলায় পদ বঞ্চিত আছেন গত দুই-তিন টার্মের ছাত্রলীগ নেতারা। নতুন করে সম্মেলনের ঘোষণা আসায় অন্তত ৮ জন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাল ধরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সভাপতি পদের জন্য তিনজন এবং সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য পাঁচজন প্রার্থীর নাম জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছে।
সভাপতি পদের জন্য আলোচনায় আছেন সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহবায়ক ও কমার্স কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস মীর বরকত আলী, সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য সচিব ও কমার্স কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি এম এ নাসিম ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেব দুলাল বাড়ৈ বাপ্পী।
সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আলোচনায় আছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. তমাল কান্তি ঘোষ, নগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম হোসেনুজ্জামান হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আসাদুজ্জামান রাসেল, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান জিয়া, সদস্য আহমেদ ফিরোজ ইব্রাহিম তন্ময়।
সভাপতি প্রার্থী মীর বরকত আলী জানিয়েছেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগের জন্য দীর্ঘ এক যুগ ধরে কাজ করছি। দল স্বীকৃতি দিলে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করব।’
সভাপতি প্রার্থী দেব দুলাল বাড়ৈ বাপ্পী বলেন, ‘খুলনার রাজনীতির অভিভাবক শেখ পরিবার ও খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেকসহ দলের সিনিয়র নেতারা আমাকে দায়িত্ব দিলে সৎ ভাবে দল পরিচালনা করব।’
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হোসেনুজ্জামান হোসেন বলেন, ‘এর আগে আমি খুলনা মহানগর ছাত্রলীগ ও কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক পদে দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানে সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজেকে সাংগঠনিক কর্মকা-ে সক্রিয় রেখেছি। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের দায়িত্ব দেওয়া হলে সংগঠনটিকে যথাসাধ্য সংগঠিত করতে আমি আপ্রাণ কাজ করে যাবো।’
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আসাদুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘আমি ২০১৫ সাল থেকে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। এই সময়ে সাধ্যমতো ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করেছি। এখন ছাত্ররাজনীতির শেষ পর্যায়ে এসেছি। খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগকে আরও বেশি সুসংগঠিত করতে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছি। শেখ পরিবার এবং খুলনার সিনিয়র নেতারা এখন যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই আমি মেনে নেব।’
এ বিষয়ে খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মোশাররফ হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। এখন সম্মেলনের মাধ্যমে নতুনদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে চাই। যাদের হাত ধরে সংগঠনটি এগিয়ে যাবে এবং সাংগঠনিক তৎপরতা আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, ৮ নভেম্বর সম্মেলনের আয়োজনের ব্যাপারে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি কাজ করে যাচ্ছেন। আশাকরি নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’
উল্লেখ্য, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রথম এবং একমাত্র সম্মেলন হয়েছিল ২০০৬ সালের ১ জুন। শহীদ হাদিস পার্কে আয়োজিত ওই সম্মেলনে আলহাজ্ব শেখ মোশাররফ হোসেনকে সভাপতি এবং জেড এ মাহামুদ ডনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে ৭১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে জেড এ মাহামুদ ডন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং আলহাজ্ব শেখ মোশাররফ হোসেন সদস্য হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের যোগদান করেন। ফলে এক প্রকার অভিভাবকশূণ্য হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী এ সংগঠনটি।