খুলনায় স্কুল শিক্ষক হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা

0
1083

নিজস্ব প্রতিবেদক : খুলনায় নিখোঁজের ১৩ দিন পর কাজী তাফসিন হোসেন তয়ন (৩২) নামের এক স্কুল শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোর ৫টায় বড় বয়রার পুলিশ লাইনের পিছনে একটি ডোবা থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত তয়ন মুজগুন্নি কাজী পাড়ার কাজী ফেরদৌস হাসান তোতা’র ছেলে। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম গাজী (২১) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত জের ধরে ঘটতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করলেও, মাদক সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তয়নকে অপহরণের পুর খুন করা হয়েছে বলে পরিবার দাবী করেছে।

নিহত স্কুল শিক্ষক তয়ন…
জানা গেছে, নগরীর আইডিয়াল স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষকের পাশাপাশি সাউথ এশিয়ান ক্রাইম ওয়াচ নামে একটি সংগঠনের খালিশপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করতেন তয়ন। গত ২৮ আগষ্ট বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে তিনি বাসা থেকে বের হলে এরপর থেকে তয়নের আর কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলনা। তার সন্ধান চেয়ে গত ২৯ আগষ্ট তার মামা কামরুল ইসলাম খালিশপুর থানায় একটি জিডি করেন। পুলিশ ৯ দিন পরেও তয়ন নিখোঁজের কোন ক্লু বের করতে না পারায় তয়নের পিতা ৮ সেপ্টেম্বর তার ছেলেকে অপহরণ করার অভিযোগ এনে তার নিকটতম আত্মীয় কাজী মুরাদ হোসেনকে আসামী করে খালিশপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর তয়নকে খুঁজতে জোরেসোরে মাঠে নামে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় মুজগুন্নি কাজী পাড়া এলাকার হাসান গাজীর ছেলে সাইফুল গাজীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল তয়ন হত্যাকান্ডে তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
তার দেওয়া তথ্যমতে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় পুলিশ সাইফুলকে নিয়ে বয়রা পুলিশ লাইনের পিছনে কালাম পুলিশের বাড়ির সামনে একটি ডোবা থেকে বাস ও খুটি দিয়ে বাঁধা তয়নের ডোবানো মরদেহ উদ্ধার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শেখ মিজানুর রহমান জানান, তয়নকে ডোবার কাছে নিয়ে প্রথমে মাথায় আঘাত করা হয়। তারপর তাকে গলায় দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে ডোবায় পুঁতে রাখা হয় বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল জানায়। মঙ্গলবার খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আতিকুস সামাদের আদালতে হাজির করলে সাইফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে বলে তদন্তকারী কর্মর্কতা জানান।
এ বিষয়ে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশরাফে হোসেন জানান, জমিজমা সংক্রান্ত জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে। তয়নকে ৪/৫ মিলে খুন করে ডোবায় বেঁধে রেখে আসে। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তবে মামলার তদন্তর স্বার্থে অন্য আসামীদের নাম বলতে তিনি অপরগতা প্রকাশ করেন।
এদিকে তয়ন সাউথ এশিয়ান ক্রাইম ওয়াচ নামে একটি সংগঠনের খালিশপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনকালে তিনি মাদক নিরাময় অভিযান করতেন। এতে এলাকার মাদক সেবী ও বিক্রেতারা তয়নের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এ ক্ষিপ্ততার জের ধরে তয়নকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করেছেন তয়নের পিতা কাজী ফেরদোস হোসেন তোতা।