খুলনায় সোনার প্রলোভন দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ

0
701

নিজস্ব প্রতিবেদক
কথায় আছে লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। মানুষকে ফাঁদে আটকে লোভের বর্শি গিলিয়ে লুটে নিচ্ছে অর্থ-সম্পদ। পথে পরে থাকা দামী সোনার কয়েন কুঁড়িয়ে পাচ্ছে চালক, আর সেই সোনা ক্রয় করছে যাত্রী। খুলনার সোনাডাঙ্গা, গল্লামারী, জিরোপয়েন্ট ও লবণচরা এলাকা ঘিরে এসব চালকের বিচরন। এ ফাঁদের কারিগর চালক একা নয় রয়েছে আরো সদস্য। তাদের ফাঁদে আটকে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। কখনও অটোরিক্সা আবার কখনও পায়ে চালিত রিক্সার চালক হয়ে অবুঝ সরল মনের মানুষ সেঁজে যাত্রীদের কাছে থাকা অলঙ্কার ও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ মাসেই এমন ঘটনা ঘটেছে পাঁচ-ছয়বার। থানায় অভিযোগ করেছেন অনেকেই।
গত রবিবার বিকেল ৩টায় বটিয়াঘাটা যাওয়ার উদ্দেশ্যে গল্লামারী থেকে অটোরিক্সায় ওঠেন শাবানা হাসান (৪৫)। যাত্রা পথে অটোরিক্সা চালক রাস্তায় কুড়িয়ে পান কাগজে মোড়ানো একটি কয়েন। কাগজ খুলে দেখেন শ্রী জুয়েলার্স এর একটি মেমোতে চিঠি লেখা। চালক চিঠিটি পড়তে দেন যাত্রী শাবানা হাসানকে। চিঠি পড়ে তিনি বুঝতে পারেন, এটি সাধারণ কয়েন না। দু’ভরি ওজনের সোনা। যার বাজার মূল্য এক লাখ টাকা। তিনি চালককে বলেন, তোমার কপাল খুলে গেছে। চালক যাত্রা পথে আরো চার-পাঁচজনকে কয়েনটি দেখায়। তারা বলে এটি সোনার কয়েন। এর দাম অনেক। এটি আমাদের কাছে বিক্রি করো। চালক রাজি না হয়ে যাত্রীর কাছে বিক্রি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। শাবানা হাসান কয়েনটির দাম একহাজার টাকা বলেন। পরে চালক রাজি না হয়ে তার গলার চেন দাবী করেন। চালকের কথার ফাঁদে আটকে যান তিনি। নিজের গলায় থাকা এক ভরি ওজনের সোনার চেন দিয়ে দেন চালককে। পরে তাকে অন্য অটোতে উঠিয়ে দেন। বাসায় এসে শাবানা তার ভাইকে কয়েনটি দেখালে বুঝতে পারেন এটি পিতলের কয়েন। রাস্তায় থাকা অবস্থায় চালক তার নাম সুমন পরিচয় দেয় এবং দুটি মোবাইল নম্বর (০১৯৭৩৭৮৩৯২৪, ০১৯১১৩৭৮৩৯২) দেয়। তিনি বাসায় এসে সুমনকে কল দেয়। সে তার সাথে কথা বলে এবং দেখা করার জন্য শিববাড়ী মোড়ে ডাকে। এরপর থেকে নম্বরটি আর খোলা পাওয়া যায়নি।
এবিষয় শাবানা হাসান লবণচরা থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। লবণচরা থানার ডিউটি অফিসার আসাদুজ্জামান জানান, এমন ঘটনা এ মাসে আরো কয়েকবার ঘটেছে। থানায় গিয়ে দেখা যায়, এমন ঘটনায় ১৮-১৯দিন আগে আটক হয়েছেন গল্লামারী এলাকার রিক্সা চালক ইয়াসিন(৩৫)। তাকে আদালত থেকে লবণচরা থানায় দু’দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। তার ভাষ্যমতে, তিনি আগে কয়রা থেকে এসেছেন। কয়েকজন রিক্সা চালকের পাল্লায় পরে তিনি এমনটা কয়েছেন। তিনি বলেন, সোনাডাঙ্গা এলাকায় আলমগীর, শাহিন, মিরাজ নামের এমন আরো অনেক রিক্সা চালক রয়েছে। যারা এসব প্রতারণা চক্রের সাথে জড়িত।