খুলনায় সরকারি পুকুর ভরাট করে বিক্রির অভিযোগ : বেপরোয়া ভূমিদস্যু চক্র

0
614

ফুলবাড়ীগেট (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন গিলাতলা ২নং বিহারী কলোনীর সরকারি(খাস) জমি দখলকারী ভুমিদস্যু আবার স্বক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই চক্রটির বিরুদ্ধে কয়েকটি পুকুর ভরাট করে বিক্রি এবং মসজিদের পুকুরপাড় বালু ভরাট করে প্লট নির্মার্ণে লিখিত অভিযোগ রয়েছে। খাস জমি বিরোধে এর আগে মোর্তজা হোসেন ভুট্টো, মোয়াজ্জেম হোসেন, আটরা শ্রীনাথ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সরদার মুনজির আহম্মেদ এবং ইউপি সদস্য মোনজেল সিকদার সন্ত্রাসীদে হাতে নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের স্বীকার হয়েছে। হত্যাকান্ডের পর কয়েক বছর শান্ত থাকায় পুনরায় ভুমি দখল করে বিক্রি এবং মসজিদের পুকুর নিয়ে বিরোধে আবারো কলোনী এলাকা উত্তোপ্ত হয়ে উঠছে। যে কোন মুহুর্তে অনাকাংখিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটার আশংকা করছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিহারী কলোনী জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি ডীশ ব্যবসায়ী বিহারী মাহমুদ আলমের বিরুদ্ধে সরকারি পুকুর বালু ভরাট করে বিক্রি এবং এলাকাবাসী ও মসজিদের মুসল্লিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মসজিদের পুকুর লিজ দিয়ে ব্যবহার অনুপযোগি করে এলাকার পরিবেশ অশান্ত করার লিখিত অভিযোগ পাওয়াগেছে। অভিযুক্ত মাহমুদের বাড়ী থেকে বেশ কিছুদিন পুর্বে মাদকদ্রব এবং পাকিস্থানী অত্যাধুনিক ক্যামেরা সহ পুলিশ একজনকে আটক করেন।
এলাকাবাসী অভিযুক্ত মাহমুদ আলম এবং তার পিছনের প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে কয়েকটি পুকুর ভরাট করে বিক্রিসহ বিভিন্ন কুকৃর্তি তুলে ধরে খুলনা আইন সহায়তা কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। অভিযোগকারীদের মধ্যে আতিকুর রহমান জানান বিহারী মাহমুদ আলম দূর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রণালয়ের একটি কাগজ দেখিয়ে মানুষকে বোকা বানিয়ে সিটাইফ কলোনীর এজিএম স্কুল সংলগ্ন সরকারি পুকুর ভরাট করে শাহজাহান ও দাউদ মীরের কাছে বিক্রি করা হয়েছে বর্তমানে যেখানে দ্বিতলা বিন্ডিং নির্মিত হয়েছে। কবরস্থান মার্কেট সংলগ্ন কারবালার সরকারি পুকুর ভরাট করে ট্রাক ড্রাইভার মুন্নার কাছে বিক্রি করা হয়েছে বর্তমানে যেখানে বিল্ডিং নির্মিত হচ্ছে। বিষয়টি স্বীকার করে মুন্না বলেন তিনি ৩০ বাই ৩০ ফিড জায়গাটি মাহমুদ আলমের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি। কলোনীর কনসনের পুকুর বালু ভরাট করে ফেলেছে এবং বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে। কলোনী জামে মসজিদের পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে বালু ভরাট করে ১৬টি প্লাট নির্মাণ করেছে এছাড়া তিনি মসজিদের মুসল্লিদের এবং কলোনীবাসীর অভিযোগের কোন কর্ণপাত না করে ক্ষমতার দাপটে মসজিদের পুকুরটি জনৈক শাহাদাত হোসেনকে লিজ দিয়ে পুকুরে সার, মুরগীর বিষ্ঠা, গোবর ব্যবহার করে পুকুরে ওজু গোসল সহ এলাকাবাসী এবং মুসল্লিদের ব্যবহার সম্পুর্ণ অনুপযোগি করে ফেলেছে। সরেজমিনে গিয়ে এর সত্যতা যায় এবং পুকুরের পানি ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে দূর্গন্ধে পুকুরের পাশে দাড়ানো যায় না। এ ব্যাপারে মসজিদের ইমাম মাওঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, পুকুর যাদের জন্য তারা যদি ব্যবহার করতে না পারে তাহলে পুকুর থেকে লাভ কি। এছাড়া তিনি পুকুর পাড়ের দোকনসহ বিভিন্ন ইমারত নির্মাণ সম্পর্কে বিষয়টি তিনি যে কোন কারণে এড়িয়ে যান।
অভিযুক্ত মাহমুদ আলম বলেন এখানে অনেকে বহু জমি কেনা বেচা করেছে । দুটি পুকুর ভরাট করে বিক্রির কথা স্বিকার করে তিনি বলেন কারবালা এবং মজিদের উন্নয়নের জন্য বিক্রি করা হয়েছে। তিনি অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে পাল্লা অভিযোগ করে বলেন একটি গ্রুপ জমি দখল করে বিক্রি করছে আমি বাধা দেওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্য অপবাদ ছড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে এলাকার জনপ্রতিনিধি মাহমুদ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা স্বিকার করে বলেন সরকারি সম্পত্তি ক্রয় বিক্রয় করার ক্ষমতা কারো নাই কিন্তু এখানের জমি কৌশলে বিক্রি হচ্ছে। কি ভাবে বিক্রি করছে তা আপনাদের খুজে বের করতে হবে। মসজিদের পুকুরের বিষয়ে তিনি বলেন এক ব্যাক্তির সাথে মুসল্লিদের বিরোধ চলে আসছে।
এ ব্যাপারে ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাশরুবা ফেরদৌস প্রতিনিধিকে বলেন সরকারি জায়গা বিক্রির সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্তপুর্বক দোষিদের প্রয়োজনিয় ব্যবস্থ নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে বিহারী কলোনীর সরকারি(খাস) জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে এর আগে ২০০২ সালের ১৬ জানুয়ারী গিলাতলায় মোর্তজা হোসেন ভুট্টো ও মোয়াজ্জেম হোসেনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আটরা শ্রীনাথ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সরদার মুনজির আহম্মেদ বোমা হামলায় নিহত হয়। এর পর নিহত হয় সাবেক ইউপি সদস্য মোনজেল সিকদার বোমা হালায় নিহত হয়। এক ঘটনায় বেগ ফারুখ আহত হয়ে এখন মৃত পথযাত্রী। বেশ কিছু দিন শান্তিপুর্ণ ভাবে থাকার পর পুনরায় একটি চক্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এলাকাবাসী শংসয় প্রকাশ করে বলেন চার মাডারের পর এবার যে কোন মুহুর্তে অনাকাংখিত ঘটনার সন্ত্রাসীদের টার্গেটে কে পরিনত হয়।
এলাকাবাসীর দাবী জরুরী ভিত্তিতে খাস জমি বিক্রির হোতা, মসজিদের পুকুর নিয়ে বিরোধের কারণ তদন্তপুর্বক এলাকার পরিবশে শান্ত রাখতে অভিযুক্ত মাহমুদ আলমসহ অন্তরালে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক সহ প্রশাসনের উর্ধতনমহলের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।