খুলনায় মাদক ব্যবসায় নিত্য নতুন কৌশল : ধরা ছোঁয়ার বাইরে তালিকাভূক্তরা

0
648

এম জে ফরাজী: সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান চললেও খুলনায় নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে চলছে মাদক ব্যবসা। একেক রকম ব্যবসার আড়ালে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা। কখনো চায়ের দোকানে, কখনো স্যালো মেশিনে, কখনো ফুটপাতে চপ বিক্রির আড়ালে, আবার কখনো ইজিবাইক চালানোর আড়ালে কিংবা ভুয়া অনলাইন খুলে নিজেদের সাংবাদিক দাবি করে এ ব্যবসা পরিচালনা করছে কয়েকটি মহল। প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে দিনের পর দিন এ ব্যবসা পরিচালনা করছে তারা। স¤প্রতি খুলনায় চপ বিক্রির দোকান ও ইজিবাইক চালকের বাসা থেকে ইয়াবার বড় চালান আটক হওয়ায় মাদক বিক্রির আসল চিত্র ফুটে উঠেছে।
জানা গেছে, গত ২৮ জুন বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নগরীর রূপসা মাছবাজার সংলগ্ন শশ্মানঘাট এলাকায় ব্লক রেইড দিয়ে ফুটপাতে চপ বিক্রির আড়ালে মাদক বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৬। প্রথমে নগরীর রূপসা স্ট্যান্ডে একটি খাসির চপের দোকানে অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবাসহ রিপন ফকির (২০) ও নয়ন ব্যাপারী (১৯) নামের দুই মাদক বিক্রেতাকে ৫০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে। এরপর তাদের বাসা তল­াশী করে আরো ১৫ পিস ইয়াবা, ইয়াবা তৈরির নকল পাউডার ২৫০ গ্রাম ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। তাদের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শাহ আলম শিকদার (৫০) নামের আরও একজনকে আটক করা হয়। অভিযোগ রয়েছে আটককৃতরা দীর্ঘদিন ধরে খাসির চপ, ফুসকা, চটপটি বিক্রির আড়ালে ইয়াবা বিক্রি করে আসছিলো।
অপরদিকে গত রবিবার নগরীর মুন্সীপাড়া ও লবনচরা থানাধীন দারোগা লীজ নামক রায়পাড়া রোডস্থ এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ৭ হাজার ৬ শত ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। প্রথমে সনগরীর মুন্সীপাড়া ৩য় গলিতে অভিযান চালিয়ে ১১০ পিস ইয়াবাসহ মিলন মল্লিক নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। এরপর তার স্বীকারোক্তিতে নগরীর লবনচরা থানাধীন দারোগা লীজ নামক রায়পাড়া রোডস্থ মিন্না’র বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া ইজিবাইক চালক সেলিম গাজীর ঘর তল্লাশি চালিয়ে ৭ হাজার ৫শ’ পিস ইয়াবাসহ সেলিম গাজীর স্ত্রী সুরমা বেগম কে আটক করেন। আটক মহিলার স্বামী ইয়াবা ব্যবসার মূল হোতা ইজিবাইক চালক মোঃ সেলিম গাজী (২৮) অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে পলাতক সেলিম দীর্ঘদিন ধরে ভাড়ায় চালিত ইজিবাইকের আড়ালে প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। সে রূপসা উপজেলা রহিমনগর এলাকার বাসিন্দা মৃত মান্নান গাজীর পুত্র।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান জানান, ইজিবাইক চালক মোঃ সেলিম গাজী ভাড়ায় চালিত ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। এর আড়ালে প্রশাসনে চোখ ফাকি দিয়ে সে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করেন। সে মুলত ইয়াবা পাইকারি বিক্রেতা। এছাড়া নগরীতে স¤প্রতি বিভিন্ন ব্যবসার আড়ালে মাদক বিক্রির খবর পাওয়া যাচ্ছে। প্রশাসন তাদের গ্রেফতারে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে।
র‌্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, খুলনায় কয়েকটি চক্র ভিন্ন ভিন্ন ব্যবসার আড়ালে মাদক বিক্রি করে আসছে। র‌্যাব মাদক নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে। অনেক মাদক ব্যবসায়ী আমাদের নজরদারিতে আছেন। প্রমাণসহ এদের গ্রেফতার করা হবে।