খুলনায় মণ্ডপে মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি : রং-তুলিতে ব্যস্ত কারিগররা

0
1580

এম জে ফরাজী : হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে খুলনা জেলা ও নগরীর পূজা মণ্ডপে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিমা তৈরির কারিগরদের নেই দম ফেলার সময়। শেষ মুহূর্তের ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে মণ্ডপের সাজ-সজ্জা ও প্রতিমা তৈরির সংশ্লিষ্ট কারিগররা।
আগামী ১৩ অক্টোবর (শনিবার) ষষ্ঠীপূজা, বোধনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার স্বর্গ থেকে মর্তলোকে আবির্ভাব ঘটবে। এর মধ্য দিয়েই শুরু হবে দুর্গাপূজা।
সোমবার সকালে সরেজমিনে বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দ্রুত এগিয়ে চলছে প্রতিমা তৈরি ও পূজার আয়োজন। প্রায় দুই মাস আগে থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন করিগররা। মাটির কাজ শেষ এখন শুধু রং করা বাকি। আবার অনেক মন্দিরে চলছে রঙসহ অলঙ্কার পরানোর কাজ।
নগরীর সোনাডাঙ্গা ময়লাপোতাস্থ হরিজন কলোনী পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি অসিত দাস ফেলা ও সাধারণ সম্পাদক রাজু দাস বলেন, ‘প্রতিবারের চেয়ে এ বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে, শিগগিরই রং ও অলঙ্কার পরানোর কাজ শেষ হবে’।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চলতি বছর খুলনায় ৯৬৮টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা আয়োজন করা হচ্ছে। এর মধ্যে নগরীর ১২৩টি ও জেলার ৯ উপজেলার ৮৪৫টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ এ উৎসবকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে গত ১৬ সেপ্টেম্বর খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে তাঁর সভাকক্ষে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জানানো হয়, নগরীর ১২৩টি মণ্ডপ ছাড়াও দাকোপ উপজেলায় ৭৫টি, বটিয়াঘাটায় ১১১টি, তেরখাদায় ৯৯টি, দিঘলিয়ায় ৬০টি, রূপসায় ৭৩টি, ফুলতলায় ৩১টি, ডুমুরিয়ায় ১৯৫টি, কয়রায় ৫৩টি, পাইকগাছা ১৪৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে।
খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুণ্ডু খুলনা টাইমসকে বলেন, ‘দুর্গাপূজার সামগ্রিক আয়োজনে আমরা সন্তুষ্ট। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপ শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও খুলনায় শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন’।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) সোনালী সেন জানান, ‘নগরীর মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। পূজা চলাকালীন পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন’। তিনি জানান, ‘কেএমপি’র পরবর্তী সভায় নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপের তালিকা উত্থাপন করা হবে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।