খুলনায় বেগুন চাষে জনপ্রিয় হচ্ছে ব্যাগিং পদ্ধতি

0
1467

এম জে ফরাজী-খুলনা টাইমস প্রতিবেদক
বেগুনের পোকা ও পাখি নিয়ন্ত্রণ খুলনার বটিয়াঘাটার কৃষকের দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ। বিভিন্ন ধরনের পোকা ও পাখির থেকে পরিত্রাণ না পেয়ে অনেকে বেগুন চাষ ছেড়েই দিয়েছে। এমনই সময়ে ব্যাগিং পদ্ধতি কৃষককে তাঁদের উৎপাদিত ফসল রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এটি একদিকে যেমন খুব সহযেই ক্ষতিকর পোকা ও পাখির আক্রমন থেকে বেগুনকে রক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছে অন্যদিকে খরচ হচ্ছে খুবই সামান্য এবং রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে না।
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়নের কৃষকদের কাছে তাই ব্যাগিং পদ্ধতি দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে। বেগুনের ফল ছিদ্রকারী পোকাসমূহ সাধারণত সিনথেটিক কীটনাশকে দমন করা সম্ভব নয়, ফলে প্রচুর পরিমানে ক্ষতিকর রাসায়নিক কীটনাশক বার বার প্রয়োগ করতে হয়। যা মাত্রাতিরিক্ত হারে খরচ বৃদ্ধি করে এবং অন্যদিকে সৃষ্টি করে মারাত্মক পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা। অন্যদিকে পাখি থেকে বেগুনকে রক্ষা করতে ক্ষেতে জাল ব্যবহার করতে হতো। এক্ষেত্রে বটিয়াঘাটার কৃষকদের আশার আলো দেখিয়েছে ব্যাগিং পদ্ধতি।
এ পদ্ধতিতে বেগুন মার্বেলাকৃতির হলেই এটিকে একটি ১২ ইঞ্চি বাই ৮ ইঞ্চি স্বচ্ছ পলিথিন ব্যাগে আটকে দিতে হয়। এটি খুব সহযেই বেগুনের বোটার সাথে হালকা করে বেঁধে দেওয়া যায়। বেগুন বিক্রির উপযোগী হলে পলিথিন খুলে অন্য বেগুনে পুনরায় ব্যবহার করা যায়। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কীটনাশকের তুলনার এক-চতুর্থাংশের কম খরচে অনেক বেশী ফসল পাওয়া সম্ভব। এটি ব্যবহার করলে বেগুনে পাখির আক্রমণও হয় না। বেগুনের রং এবং আকার হয় পূর্বের চেয়ে অনেক ভালো।
রাঙ্গেমারী গ্রামের কৃষক মনিমোহন মল্লিক বলেন, বেগুনের পোকা দমন খুবই কষ্টকর ছিল। ছোট অবস্থায় বেগুনে পোকা লেগে নষ্ট হয়ে যেত। পাখিও নষ্ট করতো বেশ পরিমাণে। মাসে ৪-৫ বার কীটনাশক স্প্রে করেও ভালো ফলন হতো না। বর্তমানে উপজেলা কৃষি অফিসের জীবন দা এর পরামর্শে বেগুনে ব্যাগ ব্যবহার করছি। পোকা লাগছে না, কীটনাশক দেওয়ার দরকার হচ্ছে না, ফলনও ভালো পাচ্ছি।
কৃষক শুশান্ত মন্ডল বলেন, আমার প্রায় আড়াই হাজার বেগুন গাছে ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছি। কীটনাশক খরচ নেই, জালের খরচ নেই। আগের চেয়ে ফসলও ভালো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুবায়েত আরা জানান, বেগুন চাষে ব্যাগিং পদ্ধতি একটি পরিবেশ বান্ধব কৃষি প্রযুক্তি। সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচীর আওতায় কৃষকরা এ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। উপজেলাব্যাপী এর সম্প্রসারণ কাজ চলছে।