খুলনায় পরকিয়ার জেরে যুবককে গলা কেটে হত্যা : আটক ২

0
466

ফুলবাড়ীগেট প্রতিনিধি:
নগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন তেলিগাতী মধ্যপাড়ায় আমজাদ শেখের পুত্র বাচ্চু শেখ (৩২) কে বৃহস্পতিবার ভোরে নিজ ঘরের মধ্যে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। স্বজন এবং এলাকাবাসী জানান, ফুফাতো ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে পরকিয়ার জেরে হত্যাকান্ড সংগঠিত হতে পারে। এই ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নবীরের স্ত্রী নাছরিন ও গুড্ডু নামের দু’জনকে আটক করেছে। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহতের লাশ খুমেক মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, তেলিগাতী মধ্যপাড়ার আমজাদ শেখের পুত্র বাচ্চু শেখ নিজ ঘরের মধ্যে ঘুমানো ছিলো। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টায় অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারী ধারাল অস্ত্র দিয়ে গলায় আঘাত করে। সে প্রাণ বাঁচাতে ঘর থেকে দৌড়ে বাইরে এসে পড়ে যায়। সেখানে তাকে গলা কেটে ফেলে রেখে যায়। পাশের ঘরে থাকা বাচ্চুর পিতা আমজাত শেখ ছেলের গোংগানোর শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে তাকে রক্তাত্ত অবস্থায় দেখতে পায়, এসময় তাকে তুলে নিয়ে নিজ ঘরের সামনে আনতেই সে মারা যায়। এই ঘটনায় বাচ্চুর মামাতো ভাইয়ের স্ত্রী নাছরিন কে যাব্দিপুর তার বাবার বাড়ী থেকে এবং গুড্ডুকে তেলিগাতী মধ্যপাড়া থেকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।
এলাকাবাসী আরও জানায়, বাচ্চু শেখ ৬/৭ বছর আগে আরব আমিরাতের দুবাই থেকে দেশে ফিরে আসে। সঙ্গ দোষে মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ে বাচ্চু পার্শবর্তি তার ফুফাতো ভাই নবীর ভূইয়ার বাড়ীতে অবাধে যাতায়াত ছিল। বাচ্চু শেখ মাদকাসক্ত থাকলেও তার তেমন কোন শত্রু ছিলনা। বিদেশ থেকে আসার পর পার্শবর্তি ফুফাতো ভাই নবীর ভ্ইূয়ার স্ত্রী এক সন্তানের জননী নাছরিন বেগম (২৫) এর সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে লোক জানাজানি হলে নবীর ব্চ্চাুকে তাদের বাসায় আসতে নিষেধ করে। গত ৬/৭দিন আগে নবীরের স্ত্রী নাছরিনের সাথে ব্চ্চাুর অবৈধ সম্পর্ক দেখে ফেলে তাদের একমাত্র সন্তান মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র মামুন (৯)। ঐ ঘটনার পরদিন নাছরিনের মা এসে মেয়েকে নিয়ে যায়। গত ৩/৪ দিন আগে নবীর তার ছেলেকে নিয়ে ঘরের মালপত্র ট্রাকে করে অন্যত্র চলে যায়। যাওয়ার সময় সে বাচ্চুকে এর চরম মাশুল দিতে হবে বলে হুমকি দেয়।
নবীরের মা গোলেনুর বেগম ও ভাই মহসিন ভূইয়া বলেন, নাছরিন একটা চরিত্রহীনা মহিলা। বাচ্চুর সাথে নাছরিনের অবৈধ সম্পর্ক ছিল এটা আমরা বুঝতে পেরে নবীরকে বোঝানোর চেষ্টা করি, কিন্তু সে বিশ^াস করতে চাইতো না। সর্বশেষ গত এক সপ্তাহ আগে নবীর কাজে চলে গেলে সকাল ১১টায় বাচ্চু নবীরের ঘরে প্রবেশ করে। নবীরের ছেলে মামুন বাইরে খেলা করছিল ঘরে এসে তার মায়ের সাথে ব্চ্চাুর আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। তখন ছেলেকে দুজনে গলা চেপে হত্যা করতে যায় তখন তার চিৎকারে আমরা ছুটে আসি এ সময় ব্চ্চাু পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর গত ৩দিন আগে ছেলে মামুনকে বাঁচাতে নবীর তার ছেলে মামুনকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে আড়ংঘাটা থানার অফিসার্স ইনচার্জ কাজী রেজাউল করিম বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কারণ অনুসন্ধান চলছে। তদন্তের পর হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তিনি বলেন, নিহত বাচ্চু শেখের নামে থানায় মাদকের মামলা রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে জন্য আটকের কথা তিনি স্বীকার করেননি। হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ডিসি নর্থ মোল্লা জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সোনালী সেনসহ উর্ধতন কর্মকর্তাগণ।