খুলনায় দলিল লেখক জাকির হত্যা মামলার অধিকতর তদন্তে পিবিআই

0
992

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতি’র কেন্দ্রীয় নেতা জাকির হত্যা মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন। মহানগর হাকিম মোঃ আমিরুল ইসলাম মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি ইন্সপেক্টর মীর আতাহার আলী মামলার সকল আসামীকে অব্যাহতি দান পূর্বক আদালতে চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেছিলেন। তার ওই রিপোর্টের বিরুদ্ধে ফরিয়াদী পক্ষ না-রাজি দরখাস্ত দাখিল করেন। অভিযোগ করেন-আসামীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে চুড়ান্ত রিপোর্টটি দাখিল করা হয়েছে। বেলা সোয়া ১১টার দিকে শুনানি শেষে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। বিকেলে আদালত থেকে আদেশের কপি পিবিআই কার্যালয়ে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছিল। আদালতের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
২০১২ সালের ২০ মে সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ৭টার দিকে ডিসি এবং এসপি অফিসের নিকটতম দূরত্বের কেসিসি মার্কেটস্থ চেম্বারের তালাবন্ধ করে খান মোঃ জাকির হোসেন বাড়ী ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হেলমেট পরিহিত দু’আততায়ী সেখানে এসে তার নাম জিজ্ঞাসা করে। নাম বলা মাত্রই তাদের একজন পিস্তল বের করে তাকে গুলি করে। ঘটায়- বোমা বিষ্ফোরন। দু’-তিনটি মোটর সাইকেলে ঘাতক দলের অন্য সদস্যরা জেলা পরিষদের সামনের সড়কে অপেক্ষা করছিল। তারা ওই দু’জনকে নিয়ে অকুস্থল ত্যাগ করে। যাবার আগে ওই রাস্তায় তারা আরও একটি বোমা ফাটায়। মামলার নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, ২২ মে নিহতের স্ত্রী জামিলা বেগম খুলনা সদর থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজন হিসেবে রেজাউল করিম বাবলু (৫৫), শেখ আলমগীর হোসেন (৩৫), শেখ আজিম উদ্দীন (৩৬), মোঃ জামির হোসেন ওরফে জামির শেখ (৪৩), জহিরুল ইসলাম ওরফে লাল্টু (৩৬), শেখ হাসান (৪৮) এবং মোঃ ফারুক হোসেন গ্রেফতার হয়। আরেক সন্দেহভাজন মোঃ বাহাউদ্দিন খন্দকার (৪৭) কে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতারের চেষ্টা করলে তিনি এবং ছাদিকুর রহমান ওরফে রনি (৩৫) উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন গ্রহণ করেন।
আদালতে দাখিল করা না-রাজি দরখাস্ত সূত্রে জানা গেছে, রায়েরমহল বাউন্ডারি রোডের বাসিন্দা অপর দলিল লেখক বাহাউদ্দিন খন্দকারের সাথে নিহত জাকিরের পূর্ব শত্রুতা ছিল। তিনি দলিল লেখক সমিতি’র যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হওয়ার পর এ শত্রুতা আরও তীব্র হয়। এর জের ধরে তিনি জাকিরকে হত্যার সব রকম পরিকল্পনা করে ১৮ মে নেপালের কাঠমভন্ডুতে পাড়ি জমান। সেখানে ২৫ মে পর্যন্ত অবস্থান করে তিনি আসামী ছাদিকুর রহমান রনির সাথে ফোনে যোগাযোগ করে অন্যান্য আসামীদের সহযোগীতায় এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেন। তারা যদি খুনের সাথে জড়িত না থাকত-তবে, কেন উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন? আগাম জামিন নেয়ার কারণ উল্লেখ করে ফরিয়াদী পক্ষের আইনজীবীরা তাদেরকে খুনের পরিকল্পনাকারী ও অর্থ যোগানদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করেন। ফরিয়াদী পক্ষে এ্যাডভোকেট আক্তার জাহার রুকু এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা’র জেলা সমন্বয়কারী এ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম আদালতে শুনানি করেন।