খুলনায় জাল সার্টিফিকেট উদ্ধারে ৬ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

0
560

ফুলবাড়ীগেট (খুলনা) প্রতিনিধি:
নগরীর খানজাহান আলী থানাধীন বাদামতলার মোড়ল মার্কেটের আরাফাত মোটর ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল, আরাফাত ফটোষ্ট্যাড এবং প্রতিষ্ঠানের মালিকের বাড়ীতে র‌্যাপিট এ্যাকশান ব্যাটালীয়ান র‌্যাব-৬এর অভিযানে বিআরটিএ’র ড্রাইভিং ল্ইাসেন্স. গাড়ীর কাগজপত্র নবায়ন ও গাড়ীর মালিকা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় বিপুল পরিমান জাল সার্টিফিকেট ও সীল উদ্ধারের ঘটনায় খানজাহান আলী থানায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে ছয়জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে (মামলা নং ২০, তাং ২৯/৩/১৮)। মামলায় প্রতারক চক্রের মূল হোতা মনিরুলকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরণ করেছেন। আগামীকাল রবিবার রিমান্ড শুনানীর দিন ধার্য আছে।
রাবের নায়েব সুবেদার মোঃ রাজু আহম্মেদ বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরণে জানাগেছে, র‌্যাব- ৬ গোপন সংবাদের জানতে পারে শিরোমণি কেডিএ আবাসিকের জনৈক শেখ মনিরুল ইসলামের বাড়ীতে কিছু দালাল নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ীর কাগজপত্র নবায়ন ও গাড়ীর মালিকানা পরিবর্তনের জন্য আসা বিভিন্ন লোকদের কাজ করে দেওয়ার আশ^াস দিয়ে অবৈধ ভাবে টাকা পয়না নিচ্ছে। এই কাজে তারা বিভিন্ন ডাক্তার, নোটারী পাবলিক, এ্যাডভোকেটের সীল ও স্বাক্ষর জাল করে করে ব্যবহার করছে। এ সময় র‌্যাব মনিরুলের বাড়ী ঘেরাও করে শেখ মনিরুল ইসলাম(৫০) তার পুত্র বাসিত হোসেন(২১), আড়ংঘাটা থানা এলাকার মৃত চাঁদ আলী খানের পুত্র মোঃ আব্দুর সবুর খান(৫১), গিলাতলার অসীম মজুমদারের পুত্র সঞ্জয়(২৫), দৌলতপুর থানা এলাকার মনিন্দ্র সাহার পুত্র সুবাস সরকার(৫৭) এবং একই এলাকার দুর্গা দাসের পুত্র বিদ্যুৎ মজুমদার(৫৪)কে আটক করা হয় । এ সময় তার বাসায় তল্লাসী চালিয়ে বিভিন্ন নাম ও পদবী ব্যবহার করা সীল, ডাক্তার কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও সীল দেওয়া মেডিকেলের সার্টিফিকেট, কেসিসি ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আড়ংঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও সীল মারা এবং ৫নং আড়ংঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সীল ও স্বাক্ষরিত নাগরিক সনদপত্র, ডাক্তার কর্তৃক স্বাক্ষরিত শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফরম, ১০০ টাকা মুল্যমানের নন জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্প এবং ৫০টাকার, নোটারী ষ্টিকার সহ এই কাজে ব্যবহৃত একটি সিপিইউ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে খানজাহান আলী থানায় ৪১৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭৩ ধারায় মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই রোকনুজ্জামান জানিয়েছেন অন্যের রুপ ধারণ করিয়া প্রতারণার মাধ্যমে মূূল্যবান জামানত, জাল জালিয়াতি করার অপরাধে এই চক্রেরমূল হোতা শেখ মনিরুল ইসলামকে ৫দিনে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতে আগামীকাল রবিবার শুনানীর দিন ধার্য রয়েছে।
এদিকে শেখ মনিরুল ইসলাম র‌্যাবের হাতে আটকের পর বিআরটিএ.র কিছু অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর সাথে মনিরুলের ঘনিষ্ট সম্পর্কের কথা বেরিয়ে আসছে। স্থানীয় একাধীক ব্যবসায়ী এবং অফিসে সুবিধা নিতে আসা গ্রাহকরা এই প্রতিনিধিকে জানান, এই চক্রের হোতা মনিরুল দীর্ঘদিন ধরে বীর দর্পে এই কাজ চালিয়ে আসছিল যা সকলের জানা ছিলো। আর এটার পিছনে হাত ছিলো খোদ বিআরটিএ’র কিছুর স্বার্থনাশী ও সুবিধা ভোগী ব্যক্তি। তারা আরো জানান, বিআরটিএ’র অনেকের যাতায়াত ছিলো মনিরুলের বাসায়। তারা মনে করে বিআরটিএ’র দুনীর্তি এবং অনিয়ম দূর করতে এই চক্রের সাথে কাদের যোগাযোগ রয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখার সময়ের দাবী ।
উল্লেখ্য গত ২৮ মার্চ শিরোমণি বাদামতলায় বিআরটিএ অফিস সংলগ্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার র‌্যাব-৬ খুলনার স্পেশাল কমান্ডার এনায়েত হোসেন মান্নান, খুলনার সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন, র‌্যাব কর্মকর্তা এএসপি মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন উপস্থিতে অভিযান শেষে বিপুল পরিমান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যাক্তি, ডাক্তার, নোটারী পাবলিক, এ্যাডভোকেটের নাম পদবীর সীল সহ জাল সার্টিফিকেট উদ্ধার করা হয়।