খুলনার আদালতসমূহ পরিচালনায় ২০ সিদ্ধান্ত

0
159

 নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সংক্রমন রোধকল্পে অধস্তন আদালত সমূহে শারীরিক উপস্থিতিতে স্বাভাবিক বিচার কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্য বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট কতৃক অবশ্য পালনীয় নির্দেশনার প্রেক্ষিতে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাথে আলোচনাক্রমে কতিপয় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. সাইফুল ইসলাম রবিবার (২০ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি লেখা তুলে ধরেন।

সেখানে উল্লেখিত সিদ্ধান্তসমূহ হচ্ছে-

১। আদালত প্রাঙ্গনে উপস্থিত প্রত্যেককে আবশ্যিক ভাবে সার্বক্ষণিক মুখাবরণ (Face Mask) পরিহিত থাকতে হবে।

২। শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ ব্যাতীত বিজ্ঞ বিচারক ও আইনজীবী বা বিচার প্রার্থীগন এজলাস কক্ষে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩। জ্বর, সর্দি, কাশি, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডজনীত অন্য কোন শারিরীক সমস্যা বা করোনা ভাইরাসের অন্য কোনো প্রকার উপসর্গ থাকলে আবশ্যই আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪। এজলাস কক্ষে ০৬ (ছয়) জনের অধিক লোক সমাগম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ঐ ০৬ জন এজলাস কক্ষ ত্যাগ করার পর পরবর্তীতে পুনরায় একই সংখ্যক বিজ্ঞ আইনজীবী এজলাস কক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন। এভাবে পালাক্রমে বিজ্ঞ আইনজীবী গন এজলাশ কক্ষে প্রবেশ করবেন।

৫। কোন মামলায় একপক্ষে কোন অবস্থাতেই ০২ (দুই) এর অধিক বিজ্ঞ আইনজীবী এজলাস কক্ষে অবস্থান করতে পারবেন না।

৬। এজলাসে কাজ শেষ হবার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে এজলাস কক্ষ ত্যাগ করতে হবে এবং অপেক্ষমান অন্যদেরকে এজলাস কক্ষে প্রবেশ করার সুযোগ করে দিতে হবে।

৭। আদালত ভবনে অধিক সংখ্যক প্রবেশদ্বার উম্মুক্ত রাখলে স্বাস্থ্যবিধি পালনে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এজন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রবেশদ্বার উম্মুক্ত রাখা হবে। ক) জেলাজজ আদাতন ভবনে দুইটি প্রবেশ দ্বার উম্মুক্ত রাখা হবে- যার একটি ভবনের সদর ফটকে এবং অন্যটি নামাজ ঘর সংলগ্ন প্রবেশ দ্বার। খ) সিজেএম ভবনে একটি প্রবেশ দ্বার উম্মুক্ত থাকবে। গ) পুরাতন জেলা জজ আদালত ভবনে দুইটি প্রবেশ দ্বার খোলা থাকবে- যার একটি বার ভবন থেকে কোর্ট ভবনে সরাসরি প্রবেশ দ্বার এবং অপরটি নতুন জেলা জজ আদালত ভবন থেকে পুরাতন ভবন হয়ে বার ভবনে যাবার প্রবেশ দ্বার। ঘ) অন্যান্য ভবনে একটি করে প্রবেশ পথ খোলা রাখা হবে।

৮। সকল ভবনে প্রবেশের সময় সংশ্লিষ্ট সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নির্দিষ্ট জ্বর পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে জ্বর পরিমাপের পর প্রবেশ করতে হবে।

০৯। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত সকল স্বাস্থ্য বিধি সংশ্লিষ্ট সকলকে মেনে চলতে হবে।

১০। আদালত প্রাঙ্গণে ভ্রাম্যমান কোন দোকান চালু রাখা যাবে না।

১১। আদালতের যাতায়াতের পথে সংক্রমনের ঝুকি হ্রাস করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।

১২। আদালত ভবনে প্রবেশের পূর্বে আবশ্যিকভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে বা নিজেদের সংগে থাকা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করে আদালত ভবনে প্রবেশ করতে হবে।

১৩। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত প্রচলিত কোর্ট বা গাউন (Robe) পরিধান অত্যাবশ্যক নয়। তবে এটি সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর স্বেচ্ছাধীন বিষয়। করোনাকালে বিজ্ঞ বিচারক ও বিজ্ঞ আইনজীবীগন সাদা সার্ট বা ক্ষেত্রমতে সাদা সাড়ী/সালোয়ার-কামিজ ও নেক ব্যান্ড/কালো টাই পরিধান করে এজলাশ কক্ষে বিচারকাজে অংশগ্রহন করতে পারবেন।

১৪। আদালত ভবনের দরজা, জানালা বা অন্য কোন স্হানে হাত লাগানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

১৫। পারতপক্ষে লিফ্ট পরিহার করতে হবে। তবে বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিগন লিফ্টম্যানের সাহায্যে নিয়ে লিফ্ট ব্যাবহার করতে পারবেন। তবে যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

১৬। আইনের বাধ্যবাধকতা না থাকলে বিচারপ্রার্থীগন এজলাস কক্ষে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকবেন। ১৭। উপস্থিতি অনাবশ্যক এমন ক্ষেত্রে পক্ষগনের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে হাজিরা প্রদান করতে হবে।

১৭। সংক্রমণপ্রবন স্থান সমূহ বার ও বেঞ্চ এর সমন্বয়ে জীবাণুনাশক দ্বারা জীবাণুমুক্ত করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।

১৮। বিজ্ঞ বিচারক ও বিজ্ঞ আইনজীবী ও আদালতে কর্মরত পুলিশ সদস্য সমন্বয়ে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করে আদালত প্রাঙ্গনে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালিত হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

১৯। এসবের বাইরে প্রতিটি আদালতের বিচারক সুরক্ষার জন্য যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

২০। কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস) একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে লাখ লাখ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেছেন। একমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে পারলে আমরা কোভিড-১৯ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। আসুন সবাই মিলে নিজেদের সুরক্ষিত রেখে বিচারপ্রার্থী মানুষের আইনগত অধিকার সুসংহত করি।

খুলনা টাইমস/এমআইআর