খুবি’র আবাসন সংকট সমাধানে দুটি হল নির্মাণে প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত হচ্ছে

0
321

নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা। আবাসন সংকট দূরীকরণে দুটি হলের বর্ধিতাংশের চলমান নির্মাণ কাজ শেষ হলে আগামী এপ্রিল মাসে ২৫০ জন ছাত্রীর ও ২০০ জন ছাত্রের আবাসন নিশ্চিত সম্ভব হবে। এছাড়া ১০ তলা বিশিষ্ট ২টি হল (১টি ছাত্র ও ১টি ছাত্রী) নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত করা হচ্ছে।
শুক্রবার বিকালে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি খতিয়ে দেখে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য গঠিত ৯ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক ড. শেখ মোঃ রজিকুল ইসলাম ও সদস্য সচিব মোঃ শরীফ হাসান লিমন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও জানানো হয়, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বর্তমান সময় থেকে ১ ঘন্টা বাড়িয়ে রাত ৮:৩০ মি: পর্যন্ত খোলা রাখার ব্যবস্থা নেয়া হবে। ২৪ ঘন্টা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের সুপারিশ করা হবে। সাধারণ জামানত গ্রহণ না করা/ ফেরত প্রদান করা ও অন্যান্য ফি সংক্রান্ত বিষয়ে আরো কিছু তথ্যাদি সংগ্রহ ও পর্যালোচনা পূর্বক সুপারিশ করা হবে। খাতা মূল্যায়নের চলমান পদ্ধতি পরিবর্তন করলে একাডেমিক ক্যালেন্ডার নির্বিঘ্ন রাখা সম্ভাবনা ও হতে পারে বিধায়, আরো পর্যালোচনা প্রয়োজন বলে কমিটি মনে করে। এছাড়া ছাত্র সংবিধির ধারা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও সার্বজনীন সুষ্ঠু-সুশঙ্খল শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রণীত। এ বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে কমিটি খতিয়ে দেখতে পারে।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- আবাসন সঙ্কটের দূরকরণ, বেতন ফিসের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বেতন কমানো, দ্বিতীয় পরীক্ষণের ব্যবস্থা ও কোডিং পদ্ধতির ব্যবস্থাকরণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি অধ্যাদেশের সংস্কার তথা সাংস্কৃতিক অবরুদ্ধতা থেকে মুক্তি ও মুক্তচিন্তা বিকাশে অধ্যাদেশের ব্যবস্থাকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত যেসব দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে তার প্রতিকার করা।
উলে¬খ্য, পাঁচ দফা দাবিতে গত ১৫ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের মাধ্যম উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। সেদিন ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ৭ দিন সময় নেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা বুক ভরা আশা নিয়ে ২১ তারিখ পুনরায় ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের সাথে সাক্ষাত করে। সেদিন দীর্ঘ আলোচনার পর শিক্ষার্থীদের সমস্ত দাবির যথার্থ বিবেচনা রেখে প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত বিবৃতি দেওয়ার জন্য আরো দশদিন সময় চাওয়া হয়। সেই দশদিন পার হয়ে গেছে গত ১ ডিসেম্বর। এরও একমাস পর ১ জানুয়ারি শীতকালীন ছুটির পর বিশ্ববিদ্যালয় খুললে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান নেয়। ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও সহকারি ছাত্রবিষয়ক পরিচালকগণ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং উপাচার্য ব্যাতীত কারো সাথে কথা বলবেনা বলে জানায়। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ পাশের গেটে অবস্থান নেয় এবং ফেস্টুন প্লাকার্ড সহকারে শ্লোগান দিতে থাকে। উপাচার্য সকল স্কুলের ডিনবৃন্দ ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে এবং সংশ্লিষ্ট কমিটিকে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে দাবিগুলো পর্যালোচনা পূর্বক জরুরী ভিত্তিতে সুপারিশ প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। ইতোমধ্যে সম্মানিত কিছু শিক্ষক ছাত্রদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে এবং অবস্থান ধর্মঘটে বক্তব্য রাখেন। গঠিত কমিটির আহবায়ক সকল সদস্যকে নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার প্রস্তাব দিলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ব্যাতীত অন্য কারো সাথে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায় এবং সম্মানিত ডিনবৃন্দদের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শনসহ অসৌজন্য আচরণ করে।
পরবর্তী দিন ০২/০১/২০২০, সকাল থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে উপাচার্যসহ অন্যান্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এ দিন দুপুর বারোটায় শিক্ষার্থী ছাড়াই উক্ত কমিটি কাজ শুরু করে। গঠিত কমিটি শিক্ষার্থীদের দাবীগুলো অনুযায়ী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি দীর্ঘ ৪ ঘন্টা ধরে পর্যালোচনা করেন এবং আরো কিছু তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করেন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শিক্ষার্থীরা তালা খুলে দিলে উপাচার্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী অবরোধমুক্ত হন।