খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো নির্বাচন হবে না-মির্জা ফখরুল

0
410

খুলনাটা্ইমস ডেস্কঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে কারাগারে রেখে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।

সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা এবং কারাগারে আদালত বসানোর প্রতিবাদে এই মানববন্ধন আয়োজন করে বিএনপি। ঢাকার মতো দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা, শহর ও পৌরসভায় একই সময়ে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

ঢাকার মানববন্ধন ঘিরে সকাল থেকে বিএনপি, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। তাদের অবস্থান একদিকে প্রেসক্লাব থেকে সুপ্রিম কোর্টের সামনের কদম ফোয়ারা, অন্যদিকে পল্টন মোড় পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। এতে করে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রভাব পড়েছে অন্যান্য সড়কেও। দেখা দিয়েছে যানজট।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে ফখরুল বলেন, এই সরকার গত ১০ বছর ধরে দেশকে ধ্বংস্তূপে পরিণত করেছে। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যা অর্জন করেছিলাম সব ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে। সংসদকে প্রহসনে পরিণত করেছে। কিছু গৃহপালিত লোক দিয়ে সংসদকে অকার্যকর করে রেখেছে। প্রশাসনকে পুরোপুরি দলীয়করণ করা হয়েছে। সাংবাদিকরা আজ স্বাধীনভাবে লিখতে পারেন না।তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দলকে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিতভাবে একটার পর একটা প্লট তৈরি করছে। সারা বাংলাদেশে ভৌতিক মামলা তৈরি করে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। গত কয়েকদিনে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে, প্রায় ১২ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশকে ভয়াবহ নরক, নির্যাতনকারী দেশে পরিণত করেছে। এ থেকে আমাদের মু্ক্তি পেতে হবে। এ জন্য সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আজকে আবার আমরা আহবান জানাচ্ছি, খালেদা জিয়া যে আহবান জানিয়ে গেছেন, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।তিনি বলেন, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, একটি নিরপেক্ষ সরকার তৈরি করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সরকার যদি খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয় তাহলে বোঝা যাবে এই সরকার নির্বাচন চায়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অংশ নেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, আবদুল আওয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, রুহুল আলম চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নাল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবীব, যুগ্ম-মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।

২০ দলের নেতাদের মধ্যে ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গোলাম মোস্তফা ভুইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এরপর থেকে তাকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

গত ৫ সেটেম্বর এই কারাগারেই আদালত বসিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে।