কয়রা থানার দারোগা মিন্টু ও সাইফুলের মত অশালিন অভদ্র ও বেয়াদবি আচরণ রাজনীতির ৪২ বছরে দেখিনি:মঞ্জু

0
220

নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, কয়রা থানার দারোগা মিন্টু ও সাইফুল যে ধরনের অশালিন অভদ্র ও বেয়াদবি আচরণ করেছে তা তাঁর রাজনীতির ৪২ বছরে ইতোপূর্বে দেখেনি। যার ইশারা ইঙ্গিতে এধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা পুলিশ ঘটিয়েছে তাকে প্রকাশ্যে আসার আহবান জানিয়ে পুলিশের এই ঔদ্ধত্যপুন আচরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।

রবিবার (১৩ জুন) দুপুর ১২ টায় বিএনপি কাযালয়ে কয়রা উপজেলায় বিএনপির ত্রাণ বহরে হামলা, মারপিট, হুমকি গালিগালাজ, নামাজ ও আহারে বাধা ও পাইকগাছায় ঢুকতে না দেয়ার প্রতিবাদে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহবান জানান। লিখিত বক্তব্যে মি. মঞ্জু আরো উল্লেখ করেন, শনিবার (১২ জুন) খুলনা জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় গিয়ে বেলা ১১টায় কয়রা উপজেলার কালনা আমিনিয়া মাদ্রাসায় ৫৫০ মানুষের মাঝে ত্রাণ হস্তান্তর করা হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা বাঁধ পরিদর্শন করে ফিরে আসার পর কয়রা থানার পুলিশ বিএনপির নেতাকমীদের ওপর চড়াও হয়, লাঠি নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুর দিকে তেড়ে আসে। এসময় পরিচয় দেওয়ার পরও তারা ত্রাণ বিতরণের লিখিত অনুমতি চায়; এসময় ডিসি সাহেবের অনুমতির কথা বললে পুলিশ কটুক্তি করে। দারোগা মিন্টু ও সাইফুল গালিগালাজ ও লাঠি নিয়ে মারতে উদ্যত হওয়া ও আমাদের তিন গাড়ীর ড্রাইভারদের গ্রেফতারের হুমকি ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে গাড়ী তাড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদ করলে তারা আরও মারমুখী হয় এবং দ্রুত স্থান ত্যাগ না করলে গ্রফতারের ভয় দেখায়।

জোহরের নামাজ পড়তে চাইলে তারা বাধা দেয়। আমরা ভ্যানে করে তিন কিলোমিটার পথ এসে গাড়ীতে উঠে রওনা হয়ে দশ কিলোমিটারের মাথায় চাদআলী ব্রীজ পার হয়ে কমরউদ্দিন কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে পার্শ্বের মসজিদে জোহরের নামাজ আদায়ের প্র¯‘তি কালে পুলিশ সেখানে এসে হামলা চালায় এতে ত্রাণকর্মী শামিম আশরাফ ও মেহেদী হাসান মিলন আহত হয়। তখন পুলিশ সদস্য মিন্টু বলে নামায এখানে পড়া যাবে না, কথা না শুনলে থানায় যেয়ে নামাজ পড়তে হবে। বিকালে পাইকগাছায় ত্রাণ বিতরণের কর্মসূচী থাকলেও পাইকগাছার পুলিশও ঢুকতে দেয়নি। মঞ্জু আরো উল্লেখ করেন, বিএনপির সংগ্রামী মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্থ উপকূলীয় জনগণকে রক্ষায় তাদের দাবীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন।

গত বছরও এমনি সময় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ উপকূলীয় অঞ্চলের খুলনা ও সাতক্ষীরার উপজেলা সমূহের নিরন্ন আশ্রয়হীনদের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছিলো বিএনপি। খুলনা বিএনপি সব সময় মানবিক সাহায্য নিয়ে জনগণের পাশে থেকেছে, এছাড়া দুই দফা করোনাকালীন সময়ে খাদ্য সাহায্য কর্মসূচীতে আমরা ২৫ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি। ২৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে আমাদের করোনা কল সেন্টার এখনও চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নরেখে বলেন, আপনারা সকলেই অবগত আছেন যে, খুলনা বিএনপি উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি ত্রাণ কমিটি গঠন করে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতিপূর্বে আমরা উপকূলবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী বাস্তবায়নে খুলনার সম্মানিত জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের কাছে ৭ দফা দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেছি। গত ৮ জুন ২০২১ তারিখ দাকোপের চালনায় দূর্গত দের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছি। ত্রাণের মত এ ধরণের মানবিক কাজে কেন এহেন অমানবিক আচরণ? এরকমই যদি হয় তাহলে উপকূলের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে আর কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন সহযোগিতার হাত নিয়ে দাঁড়ানোর ঝুঁকি গ্রহণ করতে চাইবে কী? যুদ্ধ চলাকালীন সময়েও পৃথিবীর কোথাও ত্রাণ কার্যক্রমে কোন বিঘœ সৃষ্টি করার নজীর নেই।

উল্লেখ্য ইতিপূর্বে উপকূলে টেকসই বাঁধসহ ঐ অঞ্চলের দূর্গত মানুষের ন্যায্য দাবীসমূহের পক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচীতে একাধিকবার স্থানীয় সরকারি দলের পান্ডারা হামলা চালিয়েছে। কয়রার ভাঙ্গন কবলিত প্রত্যেকটি স্থানে স্থানীয় এমপি তার নিজস্ব আত্মীয়-স্বজন দিয়ে কাজ করায় বলে উপকূলবাসীর অভিযোগ রয়েছে। দায়সারা গোছের কাজ করে অর্থ লোপাট করায় বারবার এসব দূর্বল বাঁধ ভেঙ্গে যেয়ে জনদূর্ভোগ চরমে উঠেছে – একথা সর্বজনবিদিত। তিনি পুলিশের এমন অশালিন অভদ্র ও বেয়াদবি আচরণে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন ও ভবিষ্যতে বিএনপির ত্রাণ কার্যক্রম বিনা বাঁধায় পরিচালনা করার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা, মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনি, জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আমীর এজাজ খান, শেখ মুশাররফ হোসেন, জাফরুল্লাহ খান সা”চু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আব্দুর রশিদ, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, আরিফুজ্জামান অপু, আঃ রাকিব মল্লিক, এড. মোমরেজ, সিরাজুল হক নান্নু, জিএম কামরুজ্জামান টুকু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মহিবুজ্জামান কচি, জালু মিয়া, ইকবাল হোসেন খোকন, মেহেদী হাসান দিপু, একরামুল কবির মিল্টন, হাসানুর রশিদ মিরাজ, মিজানুর রহমান মিলটন, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, জাফরী নেওয়াজ চন্দন, শাহনাজ পারভিন, গোলাম কিবরিয়া, শরিফুল ইসলাম বাবু, আবু সাঈদ শেখ, ম শ আলম, নাজির উদ্দিন নান্নু, খন্দকার ফারুক হোসেন, চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক, আফসার মাষ্টার, ইশহাক তালুকদার, শাহাবুদ্দিন মন্টু, রবিউল ইসলাম রবি, মেজবাহ উদ্দিন মিজু, আঃ আলিম, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম লিটন, রেহানা আক্তার, মোহাম্মাদ আলী, জামাল উদ্দিন মোড়ল, জাকির হোসেন, তানভীরুল আজম রুম্মান, রাহাত আলী লা”চু, শামসুল বারি পান্না, শামীম আশরাফ, শরিফুল ইসলাম, আল আমিন প্রিন্স, সাজ্জাদ হোসেন জিতু, সেলিম বড়মিয়া, হেদায়েত হোসেন হিদু, জসিম উদ্দিন, বায়জিদ হোসেন প্রমূখ।খবর বিজ্ঞপ্ত

খুলনা টাইমস/এমআইআর