ক্ষতিকর গুঁড়ো দুধ : পরীক্ষা ছাড়া বিক্রি নয়

0
682

দেশে কিছু ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ভয়াবহ মাত্রায় হেভি মেটাল (লেড) পেয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এটা নিয়ন্ত্রণে আমদানি করা প্রতিটি গুঁড়ো দুধের চালানের নমুনা পরীক্ষার জন্য তিনটি পরীক্ষাগার নির্ধারণ করা হয়েছে। গুঁড়ো দুধে ক্ষতিকর সীসা পাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। কোনো অবস্থায়ই যেন পরীক্ষা ছাড়া এসব গুঁড়ো দুধ বাজারে না ছাড়া হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে কোনো ছাড় নয়।

এ সংক্রান্ত সংবাদ থেকে জানা যায়, আমদানি করা গুঁড়ো দুধ পরীক্ষা ছাড়া যাতে বাজারে না যায় সেজন্য সব কাস্টমস হাউজের কমিশনারদের নির্দেশনা পাঠিয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব খালেদ হোসেন স্বাক্ষরিত নির্দেশনা পত্রটি বৃহস্পতিবার কমিশনারদের কাছে পাঠানো হয়। নির্দেশনায় বলা হয়, দেশে কিছু ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধে ভয়াবহ মাত্রায় হেভি মেটাল (লেড) পাওয়া গেছে। যা বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। এ গুঁড়ো দুধ বাল্ক বা ব্যাগে বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে দেশে রি-প্যাকিং হয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তার জন্য আমদানি পর্যায়েই তা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

খাদ্যে ভেজাল একটি স্বাভাবিক প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। সেখানে গুঁড়ো দুধেও যদি ক্ষতিকর পদার্থ থাকে সেটি আরো উদ্বেগের ব্যাপার। বিশেষ করে শিশুরা গুঁড়ো দুধ খেয়ে থাকে। তাই বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর।

কাস্টমস হাউজগুলোকে বলা হয়েছে, আমদানি করা গুঁড়ো দুধের প্রতিটি চালান বন্দর থেকে খালাস করে ল্যাব টেস্টে সীসা পরীক্ষার ফলাফল না আসা পর্যন্ত গুদামজাত করে নিজ জিম্মায় রাখতে হবে এবং কোনো অবস্থাতেই বাজারজাত করা হবে না বলে সব আমদানিকারকের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামা নিয়ে চালান খালাস করতে হবে। আমদানি করা প্রতিটি চালানের নমুনা যথাযথভাবে সংগ্রহ করে শাহবাগের এটমিক এনার্জি, এলিফ্যান্ট রোডের বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), মহাখালীর ইন্সটিটিউট অব পাবলিক হেলথ (আইপিএইচ) এর পরীক্ষাগারকে গুঁড়ো দুধে লেডের মাত্রা পরীক্ষার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ অবস্থায় প্রতিটি চালানের নমুনা সীলগালা করে এ তিনটির যে কোনো একটি ল্যাবে পাঠিয়ে প্রতিটি চালানের বিপরীতে আমদানিকারকের দেয়া অঙ্গীকারনামা এবং ল্যাব টেস্টের ফলাফলের অনুলিপি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে চিঠিতে। ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে সব সংস্থার সহযোগিতা করার আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশনায়।
গুঁড়া দুধে সিসার সহনীয় মাত্রা হচ্ছে প্রতি কেজিতে ০.০২ মিলিগ্রাম। অথচ পরীক্ষায় পাওয়া গেছে সহনীয় মাত্রার ৫০ থেকে ২০০ গুণ বেশি পরিমাণে সিসা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মাত্রায় সিসা শরীরে গেলে কিডনি, লিভার বিকল হওয়াসহ দীর্ঘমেয়াদি অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আমদানি করা দুধের শতভাগ চালানে সিসা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে।

খাদ্যে ভেজাল একটি স্বাভাবিক প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। সেখানে গুঁড়ো দুধেও যদি ক্ষতিকর পদার্থ থাকে সেটি আরো উদ্বেগের ব্যাপার। বিশেষ করে শিশুরা গুঁড়ো দুধ খেয়ে থাকে। তাই বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এ ব্যাপারে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। কোনো অস্থায়ই যেন মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর গুঁড়ো দুধ বাজারে যেতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এর কোনো বিকল্প নেই।