কোটালীপাড়ায় পলি-থিনের নৌকায় বাড়ি যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

0
787

কোটালীপাড়া(গোপালগঞ্জ)প্রতিনিধি:
সবেমাত্র বোরো ধান কাটা শুরু। আকাশে প্রচুর মেঘ,একটু মেঘ হলেই নামে অঝোড়ে বৃষ্টি। ঝড়ো হাওয়াতো থাকছেই।এখানকার কৃষকের কোটি টাকার স্বপ্ন তরমুজ ফসলতো শেষ করে দিয়েছে আগেই। বাকি আছে ইরি বোরো ধান। হয়তো এটাও বুঝি নষ্ট হওয়ার পালা। তবুও কি করা যাবে সবই তো প্রকৃতির হাত। চারিদিকে বৃষ্টির পানিতে থৈ থৈ।কোটালীপাড়া উপজেলার কিছু নিচু এলাকায় বৃষ্টি ও খালের পানি এক হয়ে পাকা ধান পানিতে তলানো প্রায়। কৃষকরা অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে পাকা ধান ঘড়ে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু নিচু এলাকায় অল্প পানি হওয়াতে না চলে নাও না চলে পাও। আবার মাথায় করে কাটা ধান তুলতে সমস্য হচ্ছে পা নারম মাটিতে ঢুকে যাচ্ছে। তাই এখানকার কৃষকরা অল্প খরচে পাকা ধান কাটার পরে জমি থেকে পরিবহনের জন্য একটা অভিনব কায়দা তৈরি করছেন। এই কায়দাটা হল পলি-থিনের নৌকা। বাজার থেকে দুই থেকে তিন কেজি পলি-থিন কিনে লম্বা করার পরে ভিতরে কিছু হাওয়া ঢুকিয়ে দুই পাশে শক্ত হরে বেধে দেওয়া হয়। এরপর পলি-থিনের মাঝের যায়গাটায় ধানের আটি ভর্তিকরে রাখা হয় ঠিক যেন একটি নৌকা । ব্যাস হয়ে গেল পলি-থিনের নৌকা ।এবার পানিতে ভাসালেই হল।আগে থেকে কিছু হাওয়া আটকানোতে পানিতে এই নৌকা ভাসালেই ঐ হাওয়ায় ভারসাম্য রক্ষা করে। যতই ভর্তি করা হয় ততই নৌকা পানিতে ভাল চলে।এই কাটা ধান হাটু পানি থেকে শুরু করে খালের গভির পানির মধ্য দিয়ে পলি-থিনের নৌকা দুই-চার জনে বেয়ে নিয়ে যায় কৃষকের বাড়িতে। নৌকা ডুবে যাওয়ার কোন ভয় থাকেনা।
এব্যপারে কলাবাড়ী ইউনিয়নের বুরুয়া গ্রামের কৃষক পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, এই পলি-থিনের নৌকা তৈরির আগে কাটা ধান পরিবহনের জন্য আমাদের অনেক ঝামেলা হত যেমন নৌকা সহসা পাওয়া যেত না আর পাওয়া গেলেও গুনতে হত অনেক টাকা বা ধান । প্রতিদিন নৌকাপ্রতি এক থেকে দুই মণ ধান দিতে হত যা কৃষকের জন্য অত্যান্ত ব্যয় ছিল আবার সময় ও বেশী লেগে যেত। আর এখন পলি-থিনের নৌকা ব্যবহার করে কাটা ধান পরিবহনের জন্য অনেক সময় কম লাগে এবং ব্যয় ও কম।
পলি-থিনের নৌকা ব্যবহারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন,পলিথিনের নৌকায় কাটা ধান পরিবহনের জন্য ভাল । যেখানে অল্প পানিতে কাঠের নৌকা চলাচল করতে সমস্য হয় সেখানে পলি-থিনের নৌকা ব্যবহার করে কৃষকরা কাটা ধান পরিবহন করতে সুবিধা হয় ,ততবে পলি-থিন ফেটে যেতে পারে বলে এইটার ব্যবহারে ভয় থাকে।
সুশান্ত বর্ণিক কোটালীপাড়া