কেসিসি’র উচ্ছেদ অভিযান সরে গেলেই পুনরায় হচ্ছে দখল! 

0
835

কামরুল হোসেন মনি:
খুলনা সিটি করপোরেশন(কেসিসি)’র উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত অভিযান কার্যত কোন কাজে আসছে না। কেসিসি’র উচ্ছেদ অভিযান সরে গেলেই পুনরায় হচ্ছে দখল। সোমবার নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত অভিযানের পর এই চিত্র চোখে পড়ে।
এ ব্যাপারে কেসিসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আব্দুল হালিম সোমবার সন্ধ্যায় সার্বিক বিষয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, শুধু অভিযান পরিচালনা করলেই দখরমুক্ত হবে না। সেক্ষেত্রে স্থানীয় সাধারণ জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের অভিযানের পাশাপাশি তাদেরকেও দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তাদের এ অভিযান চলবে উল্লেখ করে বলেন, কেউ যদি একই অপরাধ পুনরায় করেন তাহলে তাকে দ্বিগুন জরিমানা করানো হবে।


কেএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন, ইজিবাইকের পাশাপাশি সড়কের ফুটপাত মৌসুম ব্যবসায়ীর পাশাপাশি চায়ের দোকানীদের দখলে থাকায় যানজটের অন্যতম কারন উল্লেখ করেন। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, সাধারণ জনগনের জন্যই ফুটপাতে যাতায়াত। যখন মানুষ ফুটপাতে হাটতে না পেরে রাস্তায় নেমে যাবেন তখনই দুর্ঘটনায় পড়ার আশংকা রয়ে যায়। দিনকে দিন জনসংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে পাশাপাশি বিভিন্ন ছোট-খাট যানবহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কোন না কোন সড়কে যানজট লেগেই থাকে।


এ ব্যাপারে কেসিসি’র স্ট্রেট অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার সোমবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদককে বলেন, উচ্ছেদ অভিযানের পরেও একই জায়গায় দখল হচ্ছে স্বীকার করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এবার দ্বিগুন জরিমানা করা হবে।
তিনি বলেন, সোমবার নগরীর জেলা পরিষদ, আহসান আহমেদ রোড, মৌলভী পাড়া, রয়েল থেকে শিববাড়ি রোড পর্যন্ত, খুমেক হাসপাতাল থেকে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করার জন্য উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দখলকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানা আদায় করা হয়।


সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার নগরীর জেলা পরিষদের সামনে কেসিসি’র কেসিসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আব্দুল হালিম এর নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান শুরু করেন। ওখান থেকে শিশু হাসপাতাল হয়ে আহসান আহমেদ রোডে দিকে যান। ওই টিমটি যখন শিশু হাসপাতালের রোড আসার মাত্র ওই জায়াগর আশেপাশে ফুটপাত দখলকৃত মালামাল মুহুর্তের মধ্যে সরিয়ে নিয়ে যান। ওই টিমটি চলে যাওয়ার মাত্রই একে একে আবার দখল হতে শুরু করেন। কেউ ফুটপাতে চা বিক্রি করছেন, কেউ বা প্লাস্টিক জিনিসপত্র পসরা বসিয়ে বিক্রি করছেন। ফলে পুনরায় দখলের চিত্র ফুটে ওঠে।
সূত্র মতে, কেসিসি’র উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলেই ওখান থেকে আগে থেকে জানিয়ে দেয়া হয় কোন কোন এলাকায় বা কোন কোন রোডে কেসিসি’র টিম উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবেন। এই ম্যাসেজ পাওয়ার পর বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন সড়ক ও ফুটপাতগুলো দখলে থাকা অস্থায়ী ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে কেসিসি’র উচ্ছেদ অভিযানে গেলে ওই সময়ই আর দখলদের পাওয়া যায় না। ফলে কেসিসি’র এই উচ্ছেদের সফল বেস্তে যায়। এক পাশে রাস্তা দখল করে দাড়িয়ে থাকে ইজিবাইক অন্যদিকে ফুটপাত দখলে থাকে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের।
কেসিসি সূত্র জানায়, খুলনা সিটি করপোরেশনের এক হাজার ২১৫টি সড়ক রয়েছে। যার মোট দৈর্ঘ্য ৬৪০দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। এ সব সড়কের মধ্যে সিংহভাগ সড়ক ও ফুটপথ বেদখলে রয়েছে। দেখা গেছে,  বিআরডিসি রোডের দু’পাশ, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফেরিঘাট মোড়, ক্লে রোড, সিমেট্রি রোড, খানজাহান আলী রোড, শেরে বাংলা রোড, স্টেশন রোড, জব্বার সরণি, জিয়া হলের আশপাশ, মজিদ সরণি, জলিল সরণি, কদমতলা মোড়, কেডি ঘোষ রোড, খুলনা প্রেসক্লাব সংলগ্ন স্যার ইকবাল রোডসহ নগরীর অধিকাংশ সড়কগুলোর ফুটপাথ দখল করে চায়ের দোকান, অস্থায়ী কাপড়ের দোকান, কাঠ, দালান নির্মাণ সামগ্রীসহ নানা জিনিসপত্র রেখে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। ডাকবাংলা থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত অর্থাৎ সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন সড়কের পাশে অস্থায়ীভাবে সারি সারি অসংখ্য কাপড়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা করায় ওই এলাকায় আসা সকল গাড়ি পার্কিং মূল সড়কের মধ্যে চলে আসছে। দখলদাররা বহাল তবিয়তে ব্যবসা পরিচালনা করে চলেছেন। এই সব জায়গায় কেসিসি’র একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান করলেও পুনরায় সেই দখলের চিত্রই চোখে পরে। ফলে ভেস্তে যাচ্ছে যানজট ও দখলমুক্ত করার লক্ষে কর্পোরেশনের নেয়া উচ্ছেদ অভিযানের উদ্যোগ। #