কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় হাইকোর্টের নির্দেশ

0
135

টাইমস ডেস্ক: আদালতের আগের রায়ের আলোকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রায় বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপে গ্রহণ করা হয়েছে, সে বিষয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদেরকে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৫ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করেন আদালত। আদালত অবমাননার মামলার শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) দায়ের করা রিট মামলায় ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট বেশকিছু নির্দেশনাসহ আদেশ দেন। হাইকোর্টের ওই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রক্ষার্থে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। ওই এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে ভবঘুরে ঘোরাফেরা করতে বা অসামাজিক কার্যকলাপ চলতে না পারে।
২. মূল বেদীতে কোনও মিটিং-সমাবেশ থেকে বিরত রাখতে নির্দেশ প্রদান করা হলো। বেদীর পাদদেশে মিটিং-সভা করতে বাধা-নিষেধ থাকবে না।
৩. ভাষা আন্দোলনে শহীদদের মরণোত্তর পদক ও জীবিতদের জাতীয় পদক প্রদান করতে হবে।
৪. যে সকল ভাষা সৈনিক জীবিত আছেন, তারা কেউ সরকারের কাছে কোনও আর্থিক সাহায্য চাইলে, তা প্রদান করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। ৫. বিশ্ববিদ্যালয় ও সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ ও মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।
৬. শহীদ মিনারের পাশে একটি লাইব্রেরিসহ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা এবং সেখানে ভাষা আন্দোলনের তথ্য সংক্রান্ত ব্রæসিয়ার রাখা, যাতে পর্যটকরা তথ্যাবরী জানতে পারেন।
৭. ভাষা সৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির জন্য বিবাদীদেরকে একটি কমিটি গঠন করা এবং ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হলো। এবং
৮. ভাষা সৈনিকদের সকল রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো এবং সাধ্যমতো সরকারি সুযোগ নিশ্চিত করা।
তবে ওই রায় সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে বাদীপক্ষ হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) গত ৪ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন জানায়।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আগের রায় প্রদানের পর ১০ বছর অতিক্রান্ত হলেও বাস্তবায়নের জন্য একাধিকবার আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। এমনকি কতিপয় নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলেও জাদুঘর প্রতিষ্ঠা, ভাষা সৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির কাজ এখনও সমাপ্ত হয়নি। তাই আদালত আদেশে বিবাদীদেরকে তাদের পদক্ষেপ এভিডেভিট আকারে দাখিল করার নির্দেশ দেন।’
মামলার বিবাদীরা হলেনÑ মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুক্তিযোদ্ধা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও চিফ ইাঞ্জনিয়ার, পূর্ত মন্ত্রণালয়ের চিফ আর্কিটেক্ট, আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্ট প্রমুখ।