কৃষকের ক্ষতিপূরণের অর্থ দ্রুত প্রদান করা হবে : ডিসি সাতক্ষীরা

0
862

সেলিম হায়দার : সাতক্ষীরার তালায় ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প- প্রথম পর্যায়’ এর আওতাধীন পাখিমারা টিআরএমসহ সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম সোমবার সকালে পরিদর্শন করেন এবং মতবিনিময় সভায় মিলিত হন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন। এ সময় তালা কপোতাক্ষ নদের উপর ক্রসড্যাম স্থাপন, পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কার, পাখিমারা টিআরএম বিলের পলি ব্যবস্থাপনা ও ফসলের ক্ষতিপূরণ প্রদান সমস্যা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য তালা প্রেসক্লাব ও উপজেলা পানি কমিটির পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। পরে তিনি জালালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং “শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আজিজ সুশীল পল্লী” পরিদর্শন করেন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন মতবিনিময় সভায় জনগণের বিভিন্ন প্রশ্নের খোলামেলা উত্তর দেন।
এ সময় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন বলেন, টিআরএম প্রকল্প ২০২০ সাল পর্যন্ত চলবে। যে সকল কৃষকরা এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি তাদের দ্রুত এবং সহজ শর্তে টাকা প্রদান করা যায় তা আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন পদ্ধতি বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিলে স্থাপিত সকল নেট-পাটা স্ব-উদ্যোগে তুলে নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি আরও বলেন, ক্রসড্যাম নির্মাণে বিলম্ব হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কোন ধরণের অনিয়ম প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মতবিনিময়কালে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফরিদ হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী, তালা উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেবুন্নেছা খানম, সাতক্ষীরা জেলা আ’লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক ও তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রণব ঘোষ বাবলু, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরদার মশিয়ার রহমান, জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু, খেশরা ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক রাজিব হোসেন রাজু, তালা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডো কাউন্সিলের প্রাক্তন ডেপুটি কমান্ডার আলাউদ্দীন জোয়ার্দ্দার, উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ময়নুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, শালতা বাঁচাও কমিটির সভাপতি সরদার ইমান আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভা শেষে তালা প্রেসক্লাব সভাপতি প্রভাষক প্রণব ঘোষ বাবলু ও উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ময়নুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়- জনস্বার্থে ডিসেম্বর-জানুয়ারীতে অর্থাৎ শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে কপোতাক্ষ নদে ক্রসড্যাম না দিয়ে তিন মাস পর ক্রসড্যাম দেয়ার কারণ তদন্ত পূর্বক জড়িতদের বিচারের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি অতি দ্রুত এই ক্রসড্যাম স্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন করা। অতিদ্রুত বিল অধিবাসীদের ফসলের ক্ষতিপূরণ প্রদান সমাপ্ত করা। কারণ প্রকল্পের ১ম পর্যায়ের কার্যক্রমে শেষ হলেও কৃষকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ ১ম বছরের জন্য ৬২% ও ২য় বছরের জন্য ২৫.৫২% প্রদান করা হয়েছে। জরুরীভাবে বর্ষা মৌসুম শুরুর পূর্বেই পাখিমারা টিআরএম বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধের সংস্কার করা। কারণ বিগত বছরগুলোর ন্যায় যাতে বাঁধ ভেঙ্গে বা উপচিয়ে পার্শ্ববর্তী জনপদ প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এছাড়া গুরুত্ব প্রদান করে পাখিমারা টিআরএম বেসিনের দূরবর্তী পশ্চিমাংশে পলি অবক্ষেপনের ব্যবস্থা করা যাতে এলাকায় ভবিষ্যতে পরিবেশগত জটিলতা সৃষ্টি না হয়।
এ সময় কপোতাক্ষ নদ রক্ষায় উপরোক্ত দাবী সমূহ বিবেচনা পূর্বক অববাহিকার ২০ লক্ষ মানুষের জীবন জীবিকার নিরাপত্তার স্বার্থে এবং চরম দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে অবিলম্বে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসকের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক টিআরএম এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩৪ টি পরিবারকে উত্তরণ কর্তৃক নির্মিত শহীদ আজিজ-সুশীল পল্লী পরিদর্শন করেন এবং সেখানে দ্রুত বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ, কবরাস্থান ও পুকুর খননের আশ^াস প্রদান করেন।