কিশোরগঞ্জে ট্রেন থেকে পড়ে কলেজছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু

0
189

টাইমস ডেস্ক:
কিশোরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে ওঠার সময় পড়ে গিয়ে আন্তারা মোকাররমা অনিকা নামে এক কলেজ ছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। চোখের সামনে প্রিয় সন্তান যাওয়ার সময় ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়েও বাঁচাতে পারেননি মেয়েকে। তাইতো সঙ্গীত শিল্পী ও কলেজছাত্রী আন্তারা মোকাররমা অনিকার মা আসমা হোসেনের এমন বুকফাটা আর্তনাদ। পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থ নানাকে দেখতে ট্রেনে করে ঢাকায় যাওয়ার জন্য গতকাল শুক্রবার ভোরে রেলওয়ে স্টেশনে যান আন্তারা মোকাররমা আনিকা ও তার মা আসমা হোসেন। স্টেশনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয় আন্তঃনগর এগারসিন্ধুর প্রভাতি ট্রেন। দৌড়ে গিয়ে মা আসমা হোসেন ট্রেনে ওঠেন। হাতল ধরে ওঠার চেষ্টা করেন আনিকাও। কিন্তু পা পিছলে চাকার নিচে পড়ে যান তিনি। মুহূর্তেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার দেহ। এ অবস্থায় নিচে লাফিয়ে পড়েন মা। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ! চোখের সামনে সন্তানকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন আসমা। আসমা হোসেন জানান, ট্রেনটি ধীরে ধীরে যাচ্ছিল। আমারা দৌড়ে ট্রেনে উঠছিলাম। আনিকা আমাকে ট্রেনে উঠতে সাহায্য করে। এরপর হাতল ধরে সে ওঠার চেষ্টা করছিল। হঠাৎ আমার চোখের সামনে পা পিছলে চাকার নিচে পড়ে যায়। আমি ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ি। দেখতে পাই ট্রেনটি আমার মেয়েকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। কণ্ঠশিল্পী ও গুরুদয়াল সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আন্তারা মোকাররমা আনিকা ছিলেন শহরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ। গত বৃহস্পতিবারও তিনি শহরে ধর্ষণবিরোধী মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন। তার মৃতুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাংস্কৃতি অঙ্গনে। খবর পেয়ে শহরের খরমপট্টি এলাকায় ভাড়া বাসায় চলে আসেন সহপাঠিরা। এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে রেললাইন থেকে আনিকার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি আবদুর রহমান বিশ্বাস জানান, মেয়েটির বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। আন্তারা মোকাররমা আনিকার বাবা মোজাম্মেল হোসেন একজন ব্যবসায়ী। দুই সন্তানের মধ্যে আনিকা ছিলেন বড়। তার ছোট ছেলে ইশান দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। বাদ জোহর শহরের বত্রিশ এলাকায় সরকারি কবরস্থানে আনিকার দাফন সম্পন্ন হয়।