কাভানির জোড়া গোলে রোনালদোদের বিদায়

0
326

স্পোর্টস ডেস্ক:
আগের ম্যাচেই রাশিয়া থেকে এক নক্ষত্র বিদায় নিয়েছিল। এবার আরেকটিও খসে পড়লো। আস্তে আস্তে তারকা শূন্য হয়ে পড়ছে রাশিয়া। অন্তত বিশ্বকাপকে ঘিরে যে বিশাল তারকার হাট বসেছিল তা ভাঙতে শুরু করেছে। এবারের বিশ্বকাপে অনেক তারকাই ছিল। কিন্তু বিশেষ করে সকলের দৃষ্টি ছিল লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও নেইমারের প্রতি।

ফ্রান্সের কাছে হেরে বললে ভুল হবে মূলত আর্জেন্টিনা হেরেছে এমবাপের কাছে। তার কাছে পরাজয়ের পর মেসি নামক নক্ষত্রের পতন হয় কাজান থেকে। এবার সোচি থেকে পতন ঘটলো রোনালদো নামক নক্ষত্রের। আগের ম্যাচে আলবেসিলেস্তেদের পরাজয়ের কারণ এমবাপে হলে এবারের ম্যাচে পর্তুগিজদের পরাজয়ের কারণ কাভানি।

নক আউট রাউন্ডের প্রথম দুই ম্যাচ থেকেই দুই তারকা খসে যাওয়ায় জৌলুস হারাতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ এটা বলা যায়। যদিও দুই ম্যাচেই আর্জেন্টিনা কখনো বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে হারেনি অপরদিকে পর্তুগালও কখনো বিশ্বকাপে উরুগুয়ের কাছে হারেনি। কিন্তু উভয় দলই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে পারেনি। বরং নতুন ইতিহাস গড়েছে প্রতিপক্ষ দলগুলো।

সোচির ফিশ্ট স্টেডিয়ামে নক আউট পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় পর্তুগাল ও উরুগুয়ে। আগের ম্যাচে মেসির বিদায়ের পর রোনালদোকে নিয়ে শঙ্কায় ছিল পর্তুগিজরা। শেষ পর্যন্ত সেই শঙ্কাই বাস্তবে রূপ নিলো। খেলা শুরুর সাত মিনিটেই এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। বাম উইং থেকে লুইস সুয়ারেজ লম্বা ক্রস নেন। বলটি ভেসে আসে পর্তুগালের বক্সের মধ্যে। দৌড়ে এসে অসাধারণ দক্ষতায় করা কাভানির হেড জড়িয়ে যায় পর্তুগাল জালে।

এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। কিন্তু গোল আর পরিশোধ করতে পারেনি পর্তুগাল। উল্টো প্রথমার্ধের শেষ দিকে ভাগ্যগুনে গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় পর্তুগিজরা। এক গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় দু’দল।

বিরতি থেকে ফিরে পর্তুগালকে সমতায় ফেরান পেপে। কর্নার কিক থেকে বল নিয়ে গুয়েরেরো উরুগুয়ের ডি বক্সে চিফ ফেলেন সেখানে অসাধারণ ভঙিমায় হেড করেন পেপে। তার আগে অবশ্য লাফিয়ে উঠেছিলেন রোনালদোও। কিন্তু পেপে মাথা লাগিয়ে বল জড়িয়ে দেন উরুগুয়ের জালে।

গোল খেয়ে মরিয়া উরুগুয়ে শোধ করার নেশায় আক্রমণ চালায়। আর এর ফল হিসেবে তারা ৬২ মিনিটে গোলও পেয়ে যায়। এবার বেনতাঙ্কুরের ক্রসকে বক্সের বাম কোন থেকে অসাধারণ এক প্লেসিং শট নেন কাভানি। আর এতেই এগিয়ে যায় উরুগুয়ে।

উরুগুয়ের হয়ে এটি কাভানির পঞ্চম বিশ্বকাপ গোল। শুধু অস্কার মিগুয়েজ (৮), লুইস সুয়ারেস (৭), এবং দিয়েগো ফোরলান (৬) উরুগুয়ের হয়ে বেশি গোল করেছেন।

৭০তম মিনিটে গুয়েরেরোর চিপ এগিয়ে এসে ধরতে গিয়ে তালগোল পাকান উরুগুয়ে গোলরক্ষক মুসলেরা। সুযোগ এসে যায় বার্নার্দো সিলভার সামনে। কিন্তু ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার অনেক ওপর দিয়ে মেরে দলকে হতাশ করেন।

পিছিয়ে পড়ার পর আরেকবার গোলের জন্য পাগল হয়ে ওঠে পর্তুগাল। বারবার আক্রমণে দারুণ চাপে ফেলে উরুগুয়ের রক্ষণভাগকে। কিন্তু কাজের কাজটি হচ্ছিলো না। রক্ষণভাগকে যেন দুর্গ বানিয়ে রেখেছিল উরুগুয়ে।

দুর্ভাগ্য, একের পর আক্রমণ করে কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি পর্তুগাল। ভালো খেলেও শেষমেশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রোনালদো ও পর্তুগালকে।