করোনা ভাইরাস: উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের অবদানে বাঁচতে পারে অর্থনীতি

0
484

খুলনাটাইমস অর্থনীতি :সমগ্র বিশ্ব আজ বৈশ্বিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ভিন্ন ভিন্ন সূত্র অনুসারে করোনা ভাইরাসের করাল থাবায় আজ বিশ্বের ১৭৭টি দেশ আক্রান্ত। প্রতিদিন খবরে আসছে আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে, বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সকল দেশ খুঁজে চলেছে বিশ্ববাসীকে রক্ষার উপায়। চিকিৎসাবিদরা দিনরাত এক করে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়ে চলেছেন। থেমে নেই রাষ্ট্রপক্ষ।সেই সাথে থেমে নেই আমাদের ব্যবসায়ীরাও। লাভ ও মুনাফার কথা চিন্তা না করে আমাদের ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন যার যার বাসা থেকে। আমাদের কর্মী বাহিনী নিজ নিজ অবস্থান থেকে লড়ে চলেছেন। কেন তারা লড়ছেন? কারণ তারা থমকে গেলে থেমে যাবে দেশের অর্থনীতি। দেশ মুখোমুখি হবে আর্থিক বিপর্যয়ের। এখন একমাত্র সচেতনতাই হতে পারে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ।একটু ভাবি কিভাবে নিজ সচেতনতায় রক্ষা পেতে পারে আমাদের পরিবার, দেশ ও জাতি। সকলেই আপনারা জানেন, কি ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। তবু মনে রাখার জন্য বলা, হেলথ ও হাইজিনের বিষয় মাথায় রাখি। বিশেষ কয়েকটি দিক বিবেচনায় রাখতে সকলকে অনুরোধ করছি।আমরা নগদ লেনদেন থেকে বিরত থাকি। কারণ, যে টাকা আমরা খরচ করছি তা কিন্তু হাজারো মানুষের সংস্পর্শে আসছে। আর টাকা গোনা বা স্পর্শ থেকে কিন্তু ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই আমরা নগদ লেনদেন না করে মোবাইল ওয়ালেট, বিকাশ, রকেট, নগদ, শিউরক্যাশ বা ডেবিট কার্ড ব্যবহারে সচেষ্ট হই।
নিজের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কথা ভেবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি মজুতকরণ থেকে বিরত থাকি।ব্যবসায়ী ভাইদের প্রতি অনুরোধ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকি।
আজ প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের সময়। নাগরিকরা আজ অনলাইনে নিজেদের প্রয়োজনীয় পণ্যের খোঁজ করে থাকবেন। আজ যদি আমরা সচেতনতার সাথে, সততার সাথে মানুষের পাশে দাঁড়াই, কাল তারাই আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবে। মনুষ্যত্ববোধের পরিচয় দেওয়ার সুযোগ এবং সময় এখনই।এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমাদের ব্যবসায়ীরা সহ আমরা কিভাবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমাজের প্রতি অবদান রাখতে পারিঃকর্মীদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান পরিকল্পনা করি – ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সাময়িক ভাবে বন্ধ ঘোষিত হয়েছে। এমন পরিকল্পনা করি যেন কর্মীরা বাসা থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। অনলাইনে ই-মেইল, স্ল্যাক বা ভিডিও কলের মাধ্যমে কর্মীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করি।ই-লার্নিং – যদিও এটা ছিল সময়ের দাবি, তারপরেও আমরা মোটেও সচেষ্ট ছিলাম না ই-লার্নিং এর প্রতি। যেহেতু এখন এই দুর্যোগের মুহূর্তে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িক ভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে, তার মানে এই না যে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা থেমে যাবে। আমাদের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উচিত আপগ্রেড হওয়া। ফিজিক্যাল শিক্ষার পাশাপাশি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এখনই উচিত ই-লার্নিং প্লাটফর্ম এর দিকে গুরুত্ব দেয়া। তাহলেই দুর্যোগের সাথে লড়াই করার পাশাপাশি আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে ও গতিশীল রাখতে পারবো।সম্মিলিত সভা এবং ভ্রমণ হ্রাস করুন – জনসমাগম ও ভ্রমণের মাধ্যমে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার সুযোগ রোধ করি। আপনার কর্মীরা যদি ভ্রমণ বা মিটিংয়ের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে তবে আপনি যেন দায়ী না থাকেন। কর্মীদের মনোবল বাড়ান। অসুস্থদের কাজ করা থেকে বিরত রাখুন।আপনার গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগে স্বচ্ছতা বজায় রাখুন – সকলেই আমরা একই সংকটের মুখোমুখি। সুতরাং আপনার ব্যবসায় পরিচালনায় সৎ ও স্বচ্ছ হন। গ্রাহকদের সাথে অনলাইনে যথাযথভাবে যোগাযোগ রক্ষা করুন। আপনি সহানুভূতিশীল হলে গ্রাহক ও সহনশীল থাকবে।আপনার বিক্রয় কৌশলটি অনলাইনে কাজে লাগান – যদি আপনাকে আপনার স্টোর বন্ধ রাখতে হয় তবে পণ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্রি করুন। আপনার ইমেইল তালিকাটি দেখে অনলাইনে অফার দিন। ভিডিও অ্যাড ব্যবহার করুন। আপনার কর্মচারীদের অনলাইনে কাজ করে বেতন নেওয়ার সুযোগ দিন।আসুন সচেতন হই সর্তক হই। নিজে বাঁচি ও অপরকে বাঁচাই। আমরা সৎ হলে জিতে যাবে মানবতা আর হার মানবে হাজারো মহামারি।
সাঈদ রহমান,
পরিচালক (যোগাযোগ),
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)