কপোতাক্ষ নদের ভেড়িবাঁধের মাটি যাচ্ছে ইটের ভাটায়

0
808

সেলিম হায়দার, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি, খুলনাটাইমস :
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে থেকে অবাধে মাটি কেটে ইট ভাটায় নেওয়া হচ্ছে। এজন্য বাঁধের পাশেই পুকুর কাটছে ভাটা মালিকরা। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভেড়িবাঁধ ধস্বে বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংক্কা করছে এলাকাবাসি।
অথচও ওই বাঁধের ওপর কোনো ধরনের কার্যক্রম করা যাবে না মর্মে হাইকোর্টের আদেশ থাকলেও ভেড়িবাঁধের পাশে থেকে মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছে আরবিএস ইট ভাটা মালিক।
তালা উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্ব দিকে গোনালী আরবিএস ইট ভাটা। ভাটার সীমানা গোনালী খেয়াঘাট সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধের পাশে থেকে এ মাটি কাটা হচ্ছে ।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কপোতাক্ষ নদের সীমানা মধ্যে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। নদ ভরাট হয়ে জেগে ওঠা চরের জমি ভাটার লোকজন দখল করে রেখেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে পুকুর খনন করে ভাটার জন্য মাটি তোলা হয়েছে।
গোনালী গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ২০১১ সালে এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। প্রাায় ছয়-সাত মাস কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে বিভিন্ন এলাকায় মানবেতর জীবন যাপন করে। চলতি বছর ওই এলাকার আরবিএস ইট ভাটার জন্য ভেড়িবাঁধের পাশে থেকে মাটি কাটছে। এজন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মূখে রয়েছে।


মাটিকাটার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, আরবিএস ইট ভাটার ম্যানেজার সুদেল ইকবালের নেতৃত্বে শ্রমিক হিসেবে তারা মাটি কাটছেন। গত পাঁচদিন যাবত তাদের এ মাটি কাটা চলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শ্রমিক জানান, যে ভাবে মাটি কাটা হচ্ছে, তা সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্যানিয়ন্ত্রণ ভেড়িভাঁধ ধস্বে পড়বে। এতে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হবে।
দক্ষিণ নলতা গ্রামের ময়েজ উদ্দীন ও তফেলউদ্দিন জানান, গোনালী এলাকায় কপোতাক্ষ নদের তীরের উত্তর পাশে সাতক্ষীরা শহরের চালতেতলা এলাকার আতিয়ার রহমান কয়েক বছর আগে ২৫ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে আরবিএস ইটের ভাটা প্রতিষ্ঠা করেন। পরে কপোতাক্ষ নদের ভরাট হওয়া প্রায় ১০-১৫ বিঘা জমি দখল করে চালাচ্ছেন ভাটার কার্যক্রম।
আরবিএস ভাটার ম্যানেজার সুদেল ইকবাল হোসেন জানান, মাটি কাটার কোনো অনুমোদন নেই। প্রতিবছর কাটি তাই এ বছরও কাটছি। কোনো অনুমোদন নেওয়া নেই। তবে লিখে লাভ হবে না। সবার সাথে কথা বলা আছে।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাসান হাফিজুর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই । তবে কেউ বাঁধের থেকে মাটি কাঁটলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফরিদ হোসেন বলেন, কপোতাক্ষ নদের বাঁধ থেকে মাটি কাটা অন্যায় । কেউ মাটি কাটলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহ প্রকৌশলী প্রবীর গোস্বামী জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের থেকে মাটি কাটলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
#