কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত মিথ্যাচার অব্যাহত

0
456

কপিলমুনি প্রতিনিধি: পাইকগাছার কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হরেকৃষ্ণ দাশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বাস্তবায়নকৃত নানা উন্নয়ন প্রকল্পে দূর্নীতি-অনিয়মের পর এবার প্রতিষ্ঠানের ইট আত্নসাৎ ও নিয়োগ বাণিজ্যেরও অভিযোগ তুলে অপপ্রচার ও তৃণমূলে কানভারী শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ও অপপ্রচারে সাড়া না পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে কথিত মানববন্ধনেও বাঁধার মুখে মূলত কোণঠাসা হয়ে পড়ে ষড়যন্ত্রকারীরা। এরপর ফের ইট আতানসাৎ ও নিয়োগ বাণিজ্যের মিথ্যা অভিযোগ তুলে অপপ্রচারের চুপসে যাওয়া পালে হাওয়া লাগানোর ব্যর্থ অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন চাকুরী মেয়াদের একেবারে শেষ প্রান্তে দাঁড়ানো অভিযুক্ত খোদ হরেকৃষ্ণ দাশ।
হরে কৃষ্ণ দাশ (ইনডেক্স নং- ২০৮৯৭৬)। ২০০৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দিরে নিয়োগ পান। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারী দায়িত্বভার গ্রহন করেন। দীর্ঘ ১৫ বছরের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের পরিসমাপ্তির আর মাত্র ৮ দিন বাকি। সে হিসেবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর তার শেষ কার্য দিবস।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, দক্ষিণ খুলনার সুন্দরবন উপকূলীয় ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনির প্রাণ কেন্দ্রে (বিনোদগঞ্জ) আধুনিক কপিলমুনির প্রতিষ্ঠাতা স¦র্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু সুন্দরবন উপকূলীয় দক্ষিণ জনপদের সাধারণ মানুষের শিক্ষা প্রসারে ১৯২৬ সালে সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগ ও অর্থায়নে নিজ মাতা সহচরী দেবীর নামানুসারে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন,কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দির। প্রতিষ্ঠা পরবর্তী অদ্যবধি পিছিয়ে পড়া জনপদের সাধারণ মানুষের মধ্যে জ্ঞাণের আলো পৌছে দিতে বিদ্যাপীঠটি আলোকবর্তীকা হিসেবে অবিরাম ভূমিকা রেখে চলেছে।
ইতোপূর্বে হরেকৃষ্ণ দাশের অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ তুলে তাকে অপসারনের দাবিতে একটি মহল জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও করেছিল। পরবর্তীতে অভিযোগসমূহ সত্য প্রমাণে ব্যর্থ হয় ।
গত ১৫ বছরে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠটির শ্রীবৃদ্ধির পাশাপাশি আয়ের উৎস্য হিসেবে পরিচালনা পরিষদকে সাথে নিয়ে স্কুলের জায়গায় পরিকল্পিত উপায়ে একাধিক মার্কেট নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে স্কুলের মালিকানাধীন দোকানের সংখ্যা ৮৫ টি। যেখান থকে প্রতি মাসে আসে মোটা অংকের অর্থ। এর মধ্যে স্কুলের পুকুরের উপর পরিকল্পিত উপায়ে পুকুর বজায় রেখে তার উপর নির্মাণ করেছেন একটি দ্বিতল বানিজ্যিক বিপণী (মার্কেট)। যা পাইকগাছা-খুলনা প্রধান সড়কের পার্শ্ববর্তী ঐ পুকুরের একটি বড় অংশ ভাসমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দখল প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্থ করে। মার্কেটটি নির্মাণ করায় একদিকে যেমন স্কুলের কোটি কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তির দখলমুক্ত হয়েছে অন্যদিকে বিদ্যালয়ের ঐ এলাকায় সীমাণা বেষ্টনীর পাশাপাশি প্রতিমাসে আসছে বরাদ্দকৃত দোকানের ভাড়া।
এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর স্ত্রী সরোজিনী দেবীর নামানুসারে আরো একটি মার্কেট নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যাপীঠের প্রশাসনিক ভবনের শুরুতে প্রতিষ্ঠাতার মূর্তি স্থাপন ও সেখানে অবকাশ যাপনে আকর্ষণীয় বিনোদ চত্ত্বর নির্মাণ করেছেন। যা পর্যটক থেকে শুরু করে বিনোদ বিহারী সম্পর্কে জানতে আরো বেশী অনুপ্রাণিত করবে। এছাড়া কোয়ার্টার থেকে শুরু করে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবন উন্নয়নের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিস্তারে কতৃপক্ষের নির্দেশে বিদ্যালয়টি উন্নীত করেছেন কলেজিয়েট পর্যায়ে। এক কথায় তার যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজ করছে দৃশ্যমান শৃঙ্খলাবোধ। তবে বরাবরের মত তার দ্বারা সুবিধা বঞ্চিতরা তার বিদায় মূহুর্তে তাকে ফেয়ার ওয়েলের পরিকল্পনার পরিবর্তে ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নতুন করে প্রতিষ্ঠানের ইট আত্নসাৎ ও নিযোগ বাণিজ্য প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক হরেকৃষ্ণ দাশ বলেন, তার দায়িত্ব গ্রহনের পূর্বে কে কি করেছেন সেটা তার বিষয়না। তার দায়িত্ব গ্রহনের পর উন্নয়ন প্রকল্পে প্রয়োজনীয় ইট ক্রয়ে পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্তে নগদ টাকা ও চেক প্রদান করা হয়।
তাছাড়া আবাসিক কোয়ার্টার নির্মাণের সময় ২০০৯ সালে অভিযোগকারী অনুপম সাধুর বাবা সাধন চন্দ্র সাধু পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও উক্ত প্রকল্প কমিটির সভাপতি হিসেবে সব কিছু করেছিলেন। এছাড়া ২০১৪ সালে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দিরের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজী) পদে নিয়োগে উক্ত অনুপম সাধুর স্ত্রী মিতা সাধুকে নিয়োগ না দিতে না পারায় সেই থেকে তারা আমার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করে আসছেন। সর্বশেষ সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহকৃত তথ্য তারই বহি:প্রকাশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।