কপিলমুনি ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশে গাত্রদাহ, সাংবাদিক ম্যানেজে মিশন শুরু!

0
244

নিজস্ব প্রতিবেদক:

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউপির সচিব মোঃ আঃ গণি গাজীর বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগের ভিত্তিতে খবর প্রকাশে প্রশাসনে টনক না নড়লেও গাত্রদাহ শুরু হয়েছে সচিব গনি গাজীর। রীতিমত বিভিন্ন মহলে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে পরিষদ কার্যালয়ে দফায় দফায় মিটিং করতে দেখা গেছে তাকে। এমনকি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের ভূল তথ্য দিয়ে নিজের পক্ষে সাফাই গাওয়ার অপচেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে রেজিষ্ট্রারে মৃত ব্যক্তির নাম সংশোধনের জন্য উৎকোচ গ্রহন, জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে এন্ট্রির সময় পরিষদের ভূল কোড’র ব্যবহার, নিবন্ধনকারীর নাম, পিতা-মাতাসহ নানা ভ্রান্তির বিস্তর অভিযোগের মধ্যে মঙ্গলবার রাত ৮ টা অবধি ইউনিয়ন পরিষদে জাতীয় পতাকা উঠিয়ে রেখে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এবার অবশ্য জাতীয় পতাকা উঠা-নামার জন্য পরিষদের এক গ্রাম পুলিশ চাঁদ আলীকে দোষারোপ করেছেন তিনি।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে স্থানীয় নাছিরপুর এলাকার শেখ জিয়াউর রহমান নামে এক ব্যক্তি রেজিস্ট্রারে তার পিতার নাম সংশোধনীতে উৎকোচ গ্রহনের পরও কাজ না করায় পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী প্রোগ্রামার এ টু আই তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তর,পাইকগাছা মৃদুল দাশকে প্রেরন করেছেন বলে জানাগেছে।

সূত্র জানায়, সরকার নির্ধারিত কম রেটে অনভিজ্ঞদের দিয়ে জন্মনিবন্ধন অনলাইন এন্ট্রি কার্যক্রম পরিচালনা করায় নামসহ বিভিন্ন স্থানে ভূল এমনকি পরিষদের কোড পর্যন্ত ভূল এন্ট্রি হয়েছে। এসব বিষয়ে প্রায়শই তাকে সাধারনের সাথে বাক্-বিতন্ডায় লিপ্ত থাকতে দেখা যায়।

এসব বিষয়ে তার কাছে গেলে তিনি কখনো সার্ভার সমস্যা, কখনো উপজেলা আবার কখনো জেলা কতৃপক্ষের নিকট যোগাযোগ করতে বলছেন। সৃষ্ট সমস্যায় অনেকেই তাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি, পার্সপোর্টসহ বিভিন্ন কাজে জন্ম নিবন্ধন রেজিষ্ট্রার ভ্রান্তিতে চরম ভোগান্তির মুখে রয়েছেন।
এদিকে উপজেলার ২নং কপিলমুনি ইউনিয়নের নাছিরপুর গ্রামের শেখ জিয়াউর রহমান তার অভিযোগে জানান, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তার পিতা শেখ নুর ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা পরিষদের মৃত্যু রেজিষ্ট্রারে অন্তভুক্ত করেন। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান তার পিতার মৃত্যু সনদ নিতে গেলে নামের স্থলে তথ্যগত অসঙ্গতি দেখতে পান। এসময় তিনি রেজিষ্ট্রারে তার পিতার নাম সঠিকভাবে লেখার জন্য ইউপি সচিবকে অনুরোধ করেন।

তবে ইউপি সচিব গণি গাজী ইউএনও অফিসের দোহায় দিয়ে ভুক্তভোগীর নিকট থেকে ৭’শ টাকা গ্রহণ করলেও অদ্যাবধি তার পিতার নাম সংশোধন হয়নি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে ২০ এপ্রিল বেলা আড়াইটার দিকে জিয়াউর পরিষদে গিয়ে তার কাছে খোঁজ নিলে ইউপি সচিব গণি গাজী তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন জিয়াউর রহমান।

বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে তিনি গত ২২ এপ্রিল পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত ৮ টা পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে রাখার ঘটনায় কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আঃ গণি গাজী মুঠোফোনে এপ্রতিবেদককে জানান, বিষয়টির দেখা-শোনার দায়িত্ব রয়েছে গ্রাম পুলিশ চাঁদ আলীর। তিনি ঐদিন কাজে ব্যস্ত থাকায় পতাকা নামাতে ভূলে গিছিলেন।
তবে তার দায়িত্বহীনতায় তাকে শো-কস বা কোন প্রকার নোটিশ প্রদান করা হযেছে কিনা সেসব ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানকে অবগত করা হয়েছে তবে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

এরআগে জিয়াউর রহমান তার পিতার নাম সংশোধনের জন্য তার কাছে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও তার সাথে কোন প্রকার অর্থ লেন-দেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।