কপিলমুনিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে কুপিয়ে জখম,ঘটনার নায়ক কামাল ধরা-ছোঁয়ার বাইরে!

0
814

শেখ নাদীর শাহ্:


বাড়ির লোকদের অনুপস্থিতির সুযোগে চুরি করতে গিয়ে আব্দুর রহমান বাদশা(১৭) নামে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কিশোরের হাতে ধরা পড়ায় নিজেকে বাঁচাতে তাকে ধারালো দা দিয়ে পৈশাচিকভাবে কুপিয়ে মারাত্নক আহত করেছে কামাল সরদার (৫৫) নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ জুন দুপুর ১২ টার দিকে পাইকগাছা উপজেলার কাশিমনগর এলাকায়। এসময় তার আত্নচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে ধারালো দাঁসহ রক্তস্নাত অবস্থায় কামাল পালিয়ে যায়। এসময় তারা বাদশাকে উদ্ধার করে প্রথমে কপিলমুনি হাসপাতাল ও পরে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে।
এদিকে বাদশাসহ তার পরিবার ফের হামলার আশংকায় ভীতসন্ত্রস্থ হয়েে পড়েছে।

অভিযোগে জানাযায়, উপজেলার কপিলমুনির কাশিমনগর গ্রামের স্থানীয় সার্ভেয়ার রহমত আলী গাজী ও তার স্ত্রী মরিয়াম বেগম ঘটনার দিন বাড়িতে না থাকার সুযোগে দুপুর আনুমানিক ১২ টার দিকে প্রতিবেশী মৃত আব্দুল মজিদ সরদারের ছেলে মোস্তফা কামাল সরদার (৫৫) হাতে ধাঁরালো দা নিয়ে ঐ বাড়িতে হানা দেয়। এসময় বাড়িতে উপস্থিত রহমত গাজীর বড় ছেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আব্দুর রহমান বাদশা (১৭) বাড়িতে কামালের উপস্থিতি বুঝতে পেরে তার পরিচয় জানতে চায়। উপায়ন্তর না পেয়ে কামাল তার পরিচয় দিয়ে তার বাবা-মা কোথায় জানতে চায়। এক পর্যায়ে সে ঘরে ঢুকতে চাইলে বাদশা তাকে বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে কামাল জোরপূর্বক ঘরে ঢোকার চেষ্টা করলে বারান্দায় বাদশা তাকে ঝাপটে ধরে এসময় কামাল নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে প্রথমে হাতে থাকা দাঁয়ের উল্টো পিঠ দিয়ে সজোরে তাকে আঘাত করে। কিন্তু এতেও বাদশা তাকে ছেড়ে না দেয়ায় ধারালো দাঁ দিয়ে সজোরে তার মাথায় কোপ বসিয়ে দিলে সে গুরুতর জখম অবস্থায় আত্নচিৎকার দেয়। এসময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে কামাল দাঁসহ রক্তমাখা অবস্থা দ্রুত দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক বাদশাকে উদ্ধার করে প্রথমে কপিলমুনি হাসপাতালে নিলে তারা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পরামর্শ দিলে তাকে সেখানে নেয়া হয়। বর্তমানে বাদশাকে বাড়িতে নেয়া হলেও শঙ্কামুক্ত নয়।

এলাকাবাসী জানায়, কামাল একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও উগ্র প্রকৃতির লোক। ইতোপূর্বে বিভিন্ন অপকর্ম ঘটিয়ে একাধিকবার জেলও খেটেছে। তবে তার স্বভাবের পরিবর্তন ঘটেনি এতটুকু। স্থানীয়রা জানায়, এরআগে কামাল নিজ স্ত্রীকে বটি দিয়ে কুপিয়ে তার পুচ্ছদ্বার ক্ষত-বিক্ষত করে,চাচাতো ভাই মাহবুব আনোয়ার শিরোকে দাঁ দিয়ে কোপায়,ছোট ভাই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মুয়াজ্জিন মোস্তফা শামছুল হুদা বাবুকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয়,মসজিদের লাইট জা্বালানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কিশোর সাদিসহ অন্যান্যদের পিটায়,নিজ শাশুড়ি,শ্যালকসহ অন্যান্যদের পিটিয়েও সমালোচনার পাত্র হন। এছাড়া নিজ শ্যালিকার বিয়ের অনুষ্ঠানে ঘটককে ঝাটাপিটা করে তোপের মুখে পড়েন কামাল। এছাড়া এলাকায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনকে মারপিট করে এলাকায় সিরিয়াল মারকুটে নামেও চিহ্নিত তিনি।

এদিকে ঘটনার শিকার প্রতিবন্ধী বাদশা পাইকগাছার বীর মুক্তিযোদ্ধা জি,এম আজিমুদ্দীনের দৌহিত্র ও স্থানীয় জনপ্রিয় সার্ভেয়ার রহমত আলী গাজীর ছেলে। পক্ষান্তরে মোস্তফা কামাল ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের দোষর স্থানীয় শান্তি কমিটির সেক্রেটারী ও দুর্ধর্ষ রাজাকার মৃত আব্দুল মজিদ সরদারের ছেলে। ঘটনায় সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ কামালের শাস্তি দাবি করেছেন।

ঘটনার শিকার বাদশার পিতা রহমত আলী গাজী জানান, ঘটনার দিন তারা স্বা-স্ত্রী বাড়িতে না থাকার সুযোগে কামাল তার বাড়িতে ঢুকে প্রতিবন্ধী ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়েছে। ঘটনায় সে কোন রকম প্রাণে বেঁচে গেলেও প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে এখনো শঙ্কামুক্ত নয়।

এছাড়া তার আশংকা,যেকোন সময় ফের কামাল তাকেসহ তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা করে বড় ধরণের দূর্ঘটনার জন্ম দিতে পারেন। এজন্য তিনি প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এব্যাপারে অভিযুক্ত কামালের প্রতিক্রিয়া জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইলে যোগাযোগ করতে চাইলেও মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।