টাইমস বিদেশ :
জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয়দের জমি কেনার অধিকার দিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে জমি কেনা-বেচার আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে এখন থেকে সেখানে যে কোনো ভারতীয়ই জমি কিনতে পারবেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দারা। এমনকি উপত্যকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরকে ‘বেচার ব্যবস্থা’ করছে। কিন্তু এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে ক্ষমতাসীন বিজেপি বলছে, এতে জম্মু-কাশ্মীরে উন্নয়নের জোয়ার আসবে। গত বছরের আগস্টে ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়া হয়। এই পদক্ষেপের আগ পর্যন্ত শুধুমাত্র জম্মু-কাশ্মীরে স্থানীয় বাসিন্দারাই সেখানে স্থাবর সম্পত্তি কিনতে পারতেন। বুধবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কয়েকটি আইনে পরিবর্তন আনার ফলে এখন ভারতীয়রাও সেখানে জমি কেনার অধিকার পাচ্ছে। স্থাবর সম্পত্তি নিয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘জম্মু-কাশ্মীর উন্নয়ন’ আইনের ১৭ নম্বর ধারা প্রযোজ্য। সেই ধারায় ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের লে. গভর্নর মনোজ সিনহা জানান, কৃষি জমি কৃষক ছাড়া অন্যান্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। কিন্তু হাসপাতাল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য প্রয়োজনে কৃষিজমি ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে নতুন আইনে। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন বিচারক জেনারেল মুহাম্মদ ইশাক কাদরির মতে, ‘এখন বহিরাগতদের জম্মু-কাশ্মীরে জমি কেনার ক্ষেত্রে কোনও বাধা রইল না।’ অপরদিকে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লাহ বলছেন, ‘অন্য রাজ্যে বাসিন্দাদের অধিকার রক্ষায় যেটুকু ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাও এ ক্ষেত্রে নেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরকে বেচতে চাইছে।’ পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির মতে, কেন্দ্র আবারও জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে পদক্ষেপ নিল। সম্প্রতি লাদাখের পার্বত্য উন্নয়ন পরিষদের ২৬টি আসনের মধ্যে ১৫টি পেয়েছে বিজেপি। ওমর আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি নিশ্চিত ওই নির্বাচনের আগে এই ঘোষণা হলে বিজেপি একটিও আসন পেত না। ওরা তাই পেছনের দরজা দিয়ে এই পদক্ষেপ নিল। এতে জম্মু, কাশ্মীর, লাদাখের বাসিন্দাদের সম্মতি নেওয়া প্রয়োজন ছিল।’ তবে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পরে জানানো হয়েছে যে, এই আইন পরিবর্তন লাদাখের ক্ষেত্রে কার্যকর করা হবে না। বিজেপি নেতা কবীন্দ্র গুপ্তের মতে, ‘আইন পরিবর্তনের ফলে জম্মু-কাশ্মীরে উন্নয়নের জোয়ার আসবে। ৭০ বছর ধরে কংগ্রেস ও আঞ্চলিক দলগুলোর নীতির জন্য এই সুযোগ থেকে জম্মু-কাশ্মীর বঞ্চিত হয়েছে।’ নতুন আইন অনুযায়ী, জম্মু-কাশ্মীরের যে কোনও অংশকে ‘কৌশলগত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করতে সেনাবাহিনীর কোর কমান্ডার বা তার চেয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে অনুরোধ করতে পারবে প্রশাসন।