একসঙ্গে চারটি গানের রেকর্ডিং করলেন ন্যানসি!

0
195

টাইমস ডেক্স: একসঙ্গে চারটি গানের রেকর্ডিং করলেন ন্যানসি; এটা আহামরি কোনও ঘটনা নয়। শিল্পীর কাজই তো গাওয়া! চাইলে একসঙ্গে ১০ গানও রেকর্ড করতে পারেন। তবে ন্যানসির এই চার গান রেকর্ডিংয়ের ঘটনাটি দারুণ একটা ‘খবর’ বহন করছে বলে আগাম অনুমান করা যায়। গানগুলোর শিরোনাম থেকে সেই আভাস মিললো। এ শিল্পী জানান, আগে থেকেই এপ্রিলের প্রথম দিনটি তিনি তুলে রেখেছিলেন সংগীত পরিচালক ও শিল্পী আহমেদ রাজীবের জন্য। দুজনেই মাঝে ফোনে ফোনে প্রস্তুতি নিয়েছেন চারটি গানের। ১ এপ্রিল সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটলো দিনভর, ঢাকার একটি রেকর্র্ডিং স্টুডিওতে। গান চারটি হলো- ঐতিহাসিক দেশাত্মবোধক ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’, বৈশাখের থিম সঙ ‘এসো হে বৈশাখ’, মিতালী মুখার্জির গাওয়া ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন ততো বড় নয়’ এবং আহমেদ রাজীবের নিজের কথা-সুরে-গাওয়া নতুন গান ‘সাধ্য কি আর আছে বলো’। বৃহস্পতিবার দিনজুড়ে চারটি গানই একককণ্ঠে ধারণ করলেন ন্যানসি। সেই সঙ্গে জানান দিলেন, প্রায় পাঁচ বছর পর একসঙ্গে কাজ করলেন রাজীব-ন্যানসি। এদিকে গান চারটি প্রসঙ্গে ন্যানসির প্রতিক্রিয়া বেশ গভীর। শুক্রবার সকালেবলেন, ‘চারটি গানই পুরনো। এরমধ্যে প্রথম দুটি ঐতিহাসিক, একটি ৯০ দশকের তুমুল জনপ্রিয়, শেষটিও রাজীব ভাইয়ের অসাধারণ মৌলিক সৃষ্টি। আমি মনে করছি, এটা সৌভাগ্যের বিষয়- একসঙ্গে চার ধারার চার সময়ের চারটি গান কণ্ঠে তুলতে পারা।’ ন্যানসি জানান, এই গানগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য সংগীতায়োজন। তার ভাষায়, ‘‘খেয়াল করবেন কলকাতায় কিন্তু পুরনো গানগুলো নিয়ে প্রচুর এক্সপেরিমেন্ট হয়। যেটা এখানে খুবই কম। নতুন সঠিক সংগীতায়োজনের কারণে একটি হারিয়ে যাওয়া গান অথবা শুনতে শুনতে কান পচে যাওয়া গানও অসাধারণ জীবন পেতে পারে। যেমন আমার মেয়ের প্রজন্মের শ্রোতারা কিন্তু ‘মুক্তিরও মন্দিরও’ গানটির পুরনো ভার্সন পছন্দ করবে না। অথচ এই চেতনার গানগুলো তাদের শোনা খুব দরকারি- যদি মানুষ হতে হয়। এসব ভাবনা থেকেই আমাদের এই প্রজেক্টগুলো করা।’’ গানগুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশের কথা রয়েছে আসন্ন ঈদ-বৈশাখে সিএমএস, অনুপম ও সিএমভি’র ব্যানারে। যদিও গান প্রকাশ নিয়ে বছরের শুরু থেকে বেশ গাল ফুলিয়ে রেখেছেন ন্যানসি। ‘‘চারপাশে প্রচুর গান প্রকাশ হচ্ছে। অথচ আমার গানই সব আটকে আছে! অন্তত ১৫টা গান হবে- যেগুলো গত দেড়-দুই মাসে রেকর্ড করেছি। কিন্তু প্রকাশের আর খবর পাই না। কিছু বললেই বলে, ‘আপা করোনা বলে ছাড়তে পারছি না। সময়টা একটু ভালো হোক।’ এটাও অবশ্য সত্যি কথা। সময়টা তো সত্যিই খারাপ যাচ্ছে। তবে আশা করছি আসছে ঈদ-বৈশাখে বেশ কিছু ভিন্ন ধারার গান প্রকাশ হবে। সেই ভরসায় আছি।’’ যোগ করলেন ন্যানসি। ন্যানসি নিজের গান প্রকাশের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করলেও প্রযোজক-প্রকাশক হিসেবে ভালোই চমক দেখাচ্ছেন! গেল দুই সপ্তাহে মেয়ে রোদেলার গাওয়া দুটি গান প্রকাশ করেছেন তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে। গান দুটি হলো ‘আমায় ডেকো না’ ও ‘অলির কথা শুনে’। গান গেয়ে ভালোই করতালি পাচ্ছেন রোদেলা। সেটি ভালোই উপভোগ করছেন মা ন্যানসি। বলেন, ‘দেখুন এরচেয়ে আনন্দ তো আর কিছু নেই জীবনে- যখন দেখি আমারই মেয়ে গাইছে, প্রশংসা পাচ্ছে। আমি নিজের গানের জন্য কোনোদিন একটা পয়সাও খরচ করিনি। করার ইচ্ছেও নেই। যেটা অনেকেই করে ক্যারিয়ার চাঙ্গা করার জন্য! তবে রোদেলার জন্য আমি এখন একটু আধটু খরচ করছি। কারণ, ওকে গাইতে দেখার মধ্যে যে সুখটুকু আমি পাই, পৃথিবীর আর কিছুতে সেটি পাইনি।’ আপাতত ন্যানসির সুখের খবর এখানেই শেষ হলে স্বাভাবিক হতো! কিন্তু আলাপের শেষে আরও একটি বড়সড় সুখের খবর জানালেন এই কিন্নরকণ্ঠী। বললেন, ‘আমি সত্যিই ভাগ্যবতী। আলম স্যারের ডাক পেয়েছি। লিখছেন মনির স্যার। রেকর্ডিং এরমধ্যে হয়ে যাবে আশা করছি। শিল্পী হিসেবে এটা তো অনন্য পাওয়া, এমন দুজন লিজেন্ডারি মানুষের সঙ্গে গাওয়া।’ সরল ভাষায়, নন্দিত গীতিকবি মনিরুজ্জামান মনিরের কথায় কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক আলম খানের সুরে গান গাওয়ার ডাক পেয়েছেন ন্যানসি। তবে গানটির নাম, ধরন এবং প্রকাশের মাধ্যম সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নন ন্যানসি। উল্লেখ করা প্রয়োজন, রোববার ক্লোজআপ বাংলাদেশের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ন্যানসির গাওয়া ‘তোমাকে চাই’ গানটি কিন্তু ভালোই যাচ্ছে।