ইংল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়া লড়াই মানেই ‘ঘটনা’

0
336

স্পোর্টস ডেস্কঃ

বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আজ লুকা মদরিচের মুখোমুখি হতে হবে হ্যারি কেইনকে। ছবি: টুইটারবিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আজ লুকা মদরিচের মুখোমুখি হতে হবে হ্যারি কেইনকে। ছবি: টুইটার
মস্কোর লুঝনিকিতে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে এর আগে কখনোই এই দুই দল মুখোমুখি না হলেও তাদের লড়াইয়ের ইতিহাসটা কিন্তু যথেষ্টই মশলাদার!

ইংল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসটা কেমন? খুব বেশি ম্যাচ এই দুই দল যদিও খেলেনি, কিন্তু তারপরেও ইংল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়ার খেলা মানেই নাকি ঘটনা! এ পর্যন্ত সাতবার মুখোমুখি হয়ে ক্রোয়েশিয়াকে চারবার হারিয়েছে ইংল্যান্ড। দুটি জয় ক্রোয়েশিয়ার। একটি ম্যাচ শেষ হয়েছে অমীমাংসিতভাবে। ২০০৭ সালে এই দুই দলের সর্বশেষ ম্যাচে জিতেছিল ক্রোয়াটরা। প্রিয় পাঠক আসুন, পরিসংখ্যানকে এক পাশে রেখে এই লড়াইয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর দিকে ফিরে তাকাই…
ছাতা মাথায় অসহায়ের মতো দলের হার দেখছেন ম্যাক্লারেন। ছবি: টুইটারছাতা মাথায় সেই লোকটি
২০০৭ সালে ওয়েম্বলির সেই বৃষ্টিস্নাত রাতটা ইংল্যান্ডের জন্য হতাশা হয়েই থাকবে। ২০০৮ ইউরো বাছাইপর্বে সেদিন ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল স্টিভ ম্যাক্লারেনের ইংল্যান্ড। হার এড়াতে পারলেই ইউরোর চূড়ান্তপর্বে উঠে যেত স্বাগতিকেরা। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-২ গোলের হারে ইংল্যান্ডের ইউরোর চূড়ান্তপর্বে খেলার স্বপ্নটা সেদিন বৃষ্টির সঙ্গেই ধুয়ে যায়। সে ম্যাচে ছাতা মাথায় গোটা ম্যাচেই ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইংল্যান্ড কোচ ম্যাক্লারেন। এতে ইংলিশরা ঠাট্টা করে ম্যাক্লারেনের নাম দিয়েছিল ‘ওয়ালি উইথ দ্য ব্রলি’। তবে সেদিন বৃষ্টির হাত থেকে নিজেকে বাঁচালেও কোচের চাকরি বাঁচাতে পারেননি ম্যাক্লারেন। সেই হারের পরই তাঁকে ছাঁটাই করে এফএ।

দুই দশকে সেমিতে ক্রোয়েশিয়াই এগিয়ে
ইংল্যান্ড কাগজে-কলমে ফুটবলের জনক হতে পারে কিন্তু গত দুই দশকে বিশ্বকাপে তাঁদের সেরা সাফল্য কোয়ার্টার ফাইনাল। ২০০২ ও ২০০৬ বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠেছিল ইংল্যান্ড। সে তুলনায় ক্রোয়েশিয়া কিন্তু এগিয়ে। ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা পায় দেশটি। স্বাধীন দেশ হিসেবে ১৯৯৮ সালে প্রথম বিশ্বকাপে অংশ নিয়েই সেমিফাইনালে উঠেছিল তারা। সুকার-বোবান-প্রসিনেস্কিরা সেবার দারুণ খেলেছিলেন। ২০ বছর পর এবার দ্বিতীয়বারের মতো ক্রোয়েশিয়াকে সেমিতে তুলেছেন মদরিচ-রাকিতিচরা এই দুই দশকে সেমিতে খেলার অভিজ্ঞতায় ক্রোয়েশিয়া ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে। ১৯৯০ সালে সর্বশেষ সেমিতে খেলেছিল ইংল্যান্ড।

জার্মানিকে হারিয়ে ’৯৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার পর সুকার ও তাঁর সতীর্থ। ছবি: টুইটারজার্মানিকে হারিয়ে ’৯৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার পর সুকার ও তাঁর সতীর্থ। ছবি: টুইটাররুনির আবির্ভাব
২০০৪ সালকে মানুষ অনেক কারণেই মনে রাখবে। সে বছরই যাত্রা শুরু হয়েছিল ফেসবুকের। মঙ্গলগ্রহে অভিযান চালায় নাসা আর হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন জর্জ ডব্লিউ বুশ। কিন্তু ইংলিশ ফুটবল সমর্থকেরা বছরটিকে মনে রাখবেন ওয়েন রুনির আবির্ভাবের বছর হিসেবে। ২০০৪ ইউরোয় ইংল্যান্ডের জার্সিতে মাত্র ১৮ বছর বয়সে অভিষেক ঘটেছিল রুনির। দলের ৪-২ ব্যবধানের জয়ে রুনির ছিল জোড়া গোল। আর হ্যাঁ প্রতিপক্ষ ছিল এই ক্রোয়েশিয়া!

ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অভিষেকেই জোড়া গোল করেছিলেন রুনি। ছবি: টুইটারক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অভিষেকেই জোড়া গোল করেছিলেন রুনি। ছবি: টুইটারএমন ভুল!
সেটিও ছিল ২০০৮ ইউরো বাছাইপর্বের ম্যাচ। জাগরেবে ক্রোয়েশিয়ার ঘরের মাঠে সেদিন ২-০ গোলে হেরেছিল ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচের শেষ গোলটা ছিল গ্যারি নেভিলের! আত্মঘাতী গোল করেছিলেন সাবেক এই ইংলিশ ডিফেন্ডার। কিন্তু তাতে গোলরক্ষক পল রবিনসনের ভূমিকাই বেশি ছিল। নেভিলের ব্যাকপাস ‘ক্লিয়ার’ করতে গিয়ে বলটা তিনি পায়েই লাগাতে পারেননি!

পল রবিনসনের সেই অবিশ্বাস্য ভুল। ছবি: টুইটারপল রবিনসনের সেই অবিশ্বাস্য ভুল। ছবি: টুইটারঘড়ি বদল
ভেদরান কোরলুকা ক্রোয়েশিয়ার জার্সিতে শতাধিক ম্যাচ খেললেও এবার রাশিয়া আসতে পারেননি। প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেলেও তাঁকে চূড়ান্ত স্কোয়াডে রাখেননি ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাতকো দালিচ। ৩২ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার একবার নৈশক্লাবের এক কর্মীর সঙ্গে ঘড়ি বদল করে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন। ২০০৮ সালে লন্ডনের মেফেয়ার অঞ্চলের একটি নৈশক্লাবে টটেনহাম সতীর্থদের সঙ্গে আড্ডা দিতে যান কোরলুকা। সেখানে এক বেয়ারা তাঁর ৩৬ হাজার পাউন্ড মূল্যের ঘড়িটির ভীষণ প্রশংসা করে। কোরলুকা তখনই সেই কর্মীর সঙ্গে নিজের সেই দামি ঘড়িটি অদল-বদল করেন। ৩৬ হাজার পাউন্ড মূল্যের ঘড়ির সঙ্গে ১৫০ পাউন্ডের ঘড়ি বদল করলে আলোচনা তো হবেই।