আ. লীগের দুর্নীতির কথা অন্য কাউকে বলতে হচ্ছে না, নিজেরাই প্রমাণ করছে: ফখরুল

0
306

খুলনাটাইমস: আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেরাই নিজেদের দুর্নীতি প্রমাণ করছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ আওয়ামী লীগের যে দুঃশাসন, দুর্নীতি, নির্যাতন, নিপীড়ন; সেটি এখন অন্য কাউকে বলতে হচ্ছে না, নিজে নিজেই বাতাসে কল নড়া শুরু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত মানববন্ধনে এ কথা বলেন ফখরুল। এ সময় বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, আপনারা দেখেছেন, কয়েক দিন ধরে সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের লোকেরাই, যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতারাই নিজেরা নিজেদের দুর্নীতি প্রমাণ করছেন। আওয়ামী লীগ নিজেরাই প্রমাণ করছে, তারা বাংলাদেশের সম্পদ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। আপনারা লক্ষ করে দেখবেন, কদিন আগে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদক ধরা পড়লেন ‘ফেয়ার শেয়ার’ নিতে গিয়ে। সেই শেয়ার আবার এক দুই কোটি টাকা নয়, ৮৬ কোটি টাকা। ফখরুল আরো বলেন, মজার ব্যাপার হলো, যার সঙ্গে কথা হলো, অর্থাৎ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, তাঁর কথোপকথন এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। দেশকে আজ এই অরাজক অবস্থায় নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, যাঁদের আমরা সম্মান করি, মাথার ওপরে রাখি, অথচ তিনিও (জাবি ভিসি ফারজানা ইসলাম) আজ ঘুষ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। আজকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আন্দোলন করছেন। ভর্তি হচ্ছে বিনা পরীক্ষায়, অর্থাৎ সেখানেও দুর্নীতি চলছে। ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সবাই রাস্তায় নেমে পড়েছেন। গোপালগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। তাঁরা বলছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত। এ দেশের মানুষ তাহলে যাবে কোথায়? ভাইস চ্যান্সেলরদের কারা নিয়োগ দিয়েছে? এই অবৈধ সরকার বেছে বেছে সবচেয়ে খারাপ লোকদের এই পদে নিয়োগ দিয়েছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, আজ ঢাকা শহরে ৬০টি জুয়ার ক্যাসিনো। পত্রিকায় আসছে, এর প্রত্যেকটি চালাচ্ছে যুবলীগ আর আওয়ামী লীগের নেতারা। এখন নিজেরাই ধরা পড়েছে। তারা আবার অন্যান্যের দোষ ধরতে চায়। আজ প্রমাণিত হয়েছে, এই সরকার দুর্নীতিতে মদদ দিচ্ছে। আজ প্রমাণিত হয়ে গেছে, এই সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। আজ প্রমাণিত হয়ে গেছে, গত ১২ বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে লুটপাট করে শ্মশানে পরিণত করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ বুঝতে শুরু করেছে, এই সরকার যত দিন রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকবে, তত দিন দেশে আইন থাকবে না। ন্যায়বিচার থাকবে না। মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা থাকবে না। এমন একটি দেশ বানানো হয়েছে, একটি ছোট্ট শিশু পর্যন্ত ধর্ষিত হচ্ছে। আজ হত্যা করা হচ্ছে, খুন করা হচ্ছে, তার কোনো বিচার হচ্ছে না। চতুর্দিকে একটা অশান্তি-অনিশ্চয়তায় দেশ ভরে গেছে। মানুষের মনে একটা ভয় সৃষ্টি করেছে সরকার। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে ফখরুল বলেন, তিনি এখন হাঁটতে পারেন না। অন্যের সাহায্য নিয়ে তাঁকে উঠে দাঁড়াতে হয়। দেশনেত্রীর স্বাস্থ্যের অবস্থা এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ তাঁকে সুচিকিৎসা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না। বারবার আমরা বলেছি, সুচিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। সরকার তাতে কোনো কর্ণপাত করছে না। আমরা কিন্তু তাদের কাছে দয়া ভিক্ষা চাচ্ছি না। এই মুক্তি খালেদা জিয়ার ন্যায্য অধিকার। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুবদলের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর পাটোয়ারী ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ।