আশাশুনি রেজিষ্ট্রি অফিসের খামখেয়ালিপনা চরম ভোগান্তিতে জমির দাতা-গ্রহিতা

0
290

মইনুল ইসলাম, আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের খামখেয়ালিপনায় চরম ভোাগান্তির শিকারে পরিণত হয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সংশ্লিষ্টরা। দলিল রেজিস্ট্রীর দিন তারিখ নিয়ে তালবাহনা এবং নানান অনিয়মের কারনে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ রেজিস্ট্রী অফিস সংশ্লিষ্টরা নাজেহাল ও চরম বিপত্তিতে রয়েছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে ৫দিন সরকারি কার্য দিবস। কিন্তু আশাশুনির মানুষ ৫ দিনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত দীর্ঘকাল। আগে সপ্তাহে ৩ দিন, ২ দিনও রেজিস্ট্রীর কাজ করা হতো। বর্তমানে ইতিহাস সৃষ্টি করে সপ্তাহে মাত্র একদিন (বৃহস্পতিবার) দলিল রেজিষ্ট্রি করার নিয়ম করা হয়েছে। একদিনের কার্য দিবসের ইতিহাস সৃষ্টিকারী নিয়মে পড়ে আশাশুনির মানুষ মহা ফাপরে পড়েছেন। তারপরও তারা অনেক ক্ষতি মেনে নিয়ে সারা সপ্তাহের দলিলের চাপ একদিনে মাথায় রেজিষ্ট্রির কাজে আশাশুনিতে জড়ো হচ্ছেন। ফলে কোন রকম সমস্যা হলে আবার এক সপ্তাহের জন্য অপেক্ষার পালা। এক সপ্তাহে দলিল রেজিষ্ট্রি কম হলে পরের সপ্তাহে পেছনের দলিলের সাথে নতুন দলিল একত্রিত হয়ে বেড়ে যায় দূরদুরান্ত থেকে আসা জমির দাতা ও গ্রহিতাদের ভোগান্তি। সপ্তাহে একদিন দলিল রেজিষ্ট্রি নিয়ম করায় দাতা গ্রহিতাদের জমি রেজিষ্ট্রি করতে বার বার ধর্ণা দিতে হয় রেজিষ্ট্রি অফিসে। আশশুনি উপজেলা থেকে প্রায় ৩৫ কিঃমিঃ দূরে প্রতাপনগর ইউনিয়নের আব্দুল গফুর সরদার জানান, তিনি কয়েক সপ্তাহ ধরে জমি রেজিষ্ট্রি করাতে আশাশুনি রেজিষ্ট্রি অফিস ধর্ণা দিচ্ছেন। কিন্তু দলিলের পরিমান বেশী হওয়ায় রেজিষ্ট্রি কাজ সম্পন্ন না করেই যেন খালি হাতেই বাড়ী ফিরে যেতে হচ্ছে তাকে। তিনি আরও বলেন, তার ক্রয়কৃত জমির মোট ৫জন দাতা। প্রতেক দাতারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত। দু’একদিনের জন্য ছুটিতে এসে জমি হস্তান্তর করতে না পেরে ফিরে যেতে হয়েছে তাদের। পরের সপ্তাহে জমি রেজিষ্ট্রির জন্য আবারও ছুটি নিয়ে আশাশুনিতে আসতে হয়েছে তাদের। রেজিষ্ট্রারের এ খামখেয়ালিপনায় আমাদের মূল্যবান সময় ও অর্থ দুুটোই নষ্ট হয়েছে। উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের বেউলা গ্রামের মতিয়ার রহমান বলেন, কাগজপত্র প্রস্তুত করে বুধবার রেজিষ্ট্রি অফিসে জমা দিলেও অজানা কারণে জমি রেজিষ্ট্রি করতে না পেরে জমির দাতাদের নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাকে। সরকারী ভাবে দেশের প্রতিটি জেলায় একজন করে জেলা রেজিষ্ট্রার ও প্রত্যেক উপজেলায় একজন করে সাব-রেজিষ্ট্রারের দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও আশাশুনি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়মিত সাব-রেজিষ্ট্রার না থাকায় জেলা থেকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সাব-রেজিষ্ট্রার (খন্ডকালীন) মোঃ রফিকুল আলম। ভূক্তভোগীরা জানান, টেবিলের উপর একাধিক দলিল পড়ে থাকলেও ঘড়িতে বিকাল ৫টা বেজে গেলেই দ্রুত অফিস থেকে জেলা শহরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান সাব-রেজিষ্ট্রার রফিকুল আলম। সব মিলিয়ে জমি রেজিষ্ট্রিতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যেন চরম আকারে ধারণ করেছে। অন্যদিকে, অফিসের বাইরে প্রতি বুধবার গণ-শুনানীর সাইনবোর্ড টানানো থাকলেও শুনানী তো দূরের কথা, উক্ত দিনে রেজিষ্টারই অফিসে থাকেন না। এব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা রেজিস্ট্রার আঃ হাফিজ বলেন, আগামী সপ্তাহ থেকে একজন সাব রেজিস্ট্রীর সপ্তাহে দু’দিন অফিস করবেন। আশাশুনি অফিসের পদ শূণ্যের বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সাব রেজিস্ট্রীার নিয়োগ পাবেন।