আশাশুনিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে

0
413
  • মোবাইল কোর্টে জরিমানা করেও জনসমাগম থামানো যাচ্ছে না, বাজার ও চা স্টোলে উপচে পড়া ভীড়!

মইনুল ইসলাম, আশাশুনি প্রতিনিধি: করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে আশাশুনি প্রশাসনের নিয়মিত বাজার মনিটরিং এবং মোবাইল কোর্টে জরিমানা করেও বাজারে এবং চা স্টোলে কোনো ভাবে থামছে না জনসমাগম। এ যেনো কে শুনে কার কথা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পেলেও জনসাধারণের মধ্যে নেই কোনো সচেতনতা। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং, সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করণ, লোকসমাগম না করতে, বিদেশ অথবা অন্য জেলা থেকে আগতদের হোম কোরেন্টিয়েন নিশ্চিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু প্রশাসনের গৃহীত ব্যবস্থা লংঘন করে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ভোরবেলা থেকে সকাল ৮টা, বিকাল থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত চা স্টোল গুলোতে উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। আর এ চা খেতে একত্রিত জনসমাগম হচ্ছে জনসাধারণ। অথচ, চা স্টোল গুলো বন্ধ রাখার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সকাল হলে চোখে পড়বে বুধহাটা বাজারে এসব চা স্টোলে চা খাওয়ার হিড়িক। শুধু চা স্টোলগুলো নয়, বাজারের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান, মাছ বাজার, কাঁচা বাজারসহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভীড়।
এছাড়া, উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শত শত মানুষের সমাগম হচ্ছেন। প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতের জন্য গোল সার্কেল থাকলেও সেটা মানছে না কেউ। ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ একেবারেই কাছাকাছি, পাশাপাশি ও মুখোমুখি অবস্থানের মাধ্যমে নিজেরাসহ এলাকার মানুষকে নিরাপত্তাহীনতায় ফেলানোর কাজটি করে যাচ্ছে। এসব বাজারে দূরদূরান্ত থেকে মাছ ক্রেতা-বিক্রেতা, কাঁচা মালামালসহ নিত্য পণ্যের ক্রেতা-বিক্রেতারা সমাগম ঘটে। শত শত মানুষ একসাথে একেবারেই নিকটে থেকে গাঁ ঘেষাঘেষি অবস্থায় কেনা-বেঁচা করে থাকেন। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাক্সও থাকেনা। সরকার করোনাভাইরাসের হাত থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে সিভিল ও স্বশস্ত্র বাহিনী সাধারণ মানুষকে সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করা, মুখে মাক্স ব্যবহার করা, হাত-মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে খাদ্য খাওয়াসহ যে সমস্ত নির্দেশনা প্রদান করেছেন, তার অধিকাংশ নির্দেশনা মানছেন না সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে, সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কেউ কর্মের সন্ধ্যানে, কেউ বিনা প্রয়োজনে বাজার ও মোড়ে ঘোরাঘুরি করছে। স্থানীয় সচেতন মহলের প্রশ্ন, প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস কি সন্ধ্যার ৬টার পরে আক্রমন করে? দিনে বেলায় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দেখলেই দ্রুত অলিতে গলিতে লুকিয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এ যেন চোর পুলিশের খেলা। অপরদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর আলিফ রেজা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন সুলতানা এবং সেনা সদস্য, পুলিশ সদস্যের টিম মোবাইল কোর্টের সাথে থেকে নিয়মিত উপজেলার প্রতিটি বাজারে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকরণ, বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা ও জনসচেতনতা মূলক কাজ করে যাচ্ছেন। অভিযান পরিচালনা কালে সরকারি আদেশ অমান্য করায় এবং অকারনে ঘরের বাইরে ঘুরাঘুরি করায় জরিমানাও করা হচ্ছে। কিন্তু অভিযান শেষ করে চলে যাওয়ার পরপরই আগের অবস্থায় ফিরে আসতে দেখা যাচ্ছে বাজারগুলোর দৃশ্য। এমতাবস্থায়, উপজেলাবাসীর করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে উপজেলার প্রতিটি বাজার, মোড় ও প্রধান প্রধান সড়কে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের টহল জোরদার করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।