আমনের উৎপাদন নিয়ে অনিশ্চয়তা, প্রয়োজনে চাল আমদানি: কৃষিমন্ত্রী

0
233

টাইমস ডেস্ক:
এ বছর বন্যার কারণে আমনের উৎপাদন নিয়ে সরকার অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, বন্যার কারণে আমনের উৎপাদন কম হবে। তাই বোরো ধান আসার আগ পর্যন্ত চালের একটা ঘাটতি হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন হলে চাল আমদানি করা হবে। তবে আমরা আরও ১৫/২০ দিন দেখব তারপর সিদ্ধান্ত নেব। গতকাল ব”হস্পতিবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি হলেও হাহাকার হবে না। যদি আমনের বেশি ঘাটতি হয়ে যায়- তাহলে চাল আমদানি করতে হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এজন্য সীমিত পরিসরে চাল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। সেখানে হয় তো ৫ থেকে ৬ লাখ মেট্রিকটন চাল আনা লাগতে পারে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ করে চাল ও আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয় থেকে কী পদক্ষেপ নেয়া হ”েছ- জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘গত বোরো মৌসুমে আমাদের বোরো খুব ভালো হয়েছে। কৃষকরাও ভালো দাম পেয়েছে। এরপর আউশের জন্য এ বছর ২ লাখ হেক্টর বেশি জমিতে আউশ চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম এবং সেটা অর্জনও করেছি। তবে আগাম বন্যার কারণে আউশের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির কারণ বা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছি সেটা হলো আমন। কারণ দীর্ঘ সময়ের বন্যার জন্য নিচু এলাকাতে আমন চাষ করা যায়নি। শেষের দিকে কিছু আমন ধান লাগালেও হঠাৎ আশ্বিন মাসের বন্যায় তা নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, কাজেই আমনের উৎপাদন নিয়েও আমাদের মধ্যে একটা অনিশ্চয়তা আছে। তবে আশা করছি, সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে উঁচু জমিগুলোতে আমন ভালো হবে। এই পরি¯ি’তিতে যদি কিছু ঘাটতিও হয় আমি মনে করি না- বাংলাদেশে কোনো হাহাকার পড়বে। যে পরিমাণ খাদ্য আছে তা দিয়ে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে কম ও বিনামূল্যে সাধারণ দরিদ্র মানুষের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যদি আপনের বেশি ক্ষতি হয়ে যায় বা ভালো উৎপাদন না করতে পারি তাহলে প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে কিছু চাল আমদানির জন্য প্রধানমন্ত্রী নীতিগত অনুমোদনও দিয়ে রেখেছেন চার আমদানির জন্য। তবে সেটা এখনই কিছু বলা যা”েছ না। আমরা আরও ১৫/২০ দিন দেখবো তখন বোঝা যাবে যে চাল আমদানি করতে হব কি না। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় যে কাজ- ক্ষয়ক্ষতির ফলে চাষিরা যেন বিপদগ্রস্ত হয়ে না পড়ে। তাদের পুনর্বাসনের জন্য রবি ফসলের ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছি। আগামী বোরোতে কী হবে- এর জন্য আমরা এখন থেকেই কর্মসূচি নিয়েছি। এবার বিনামূল্যে আরও বেশি করে হাইব্রিড বীজ চাষিদের দেয়া হবে যাতে উৎপাদন ব”দ্ধি করা যায়। মন্ত্রী বলেন, এখন সাধারণ মানুষ সরুচাল খেতে চায়। তবে এ বছর করোনার কারণে অনেক মানুষ মোটা চাল খেয়েছে তাই হাইব্রিড চালের চাহিদা বেড়েছে। এই মোটা চালের দাম কম থাকায় মানুষ পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতো। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এবার হাইব্রিড দিয়ে উৎপাদন বাড়াব। যাতে আগামী বোরোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চালের উৎপাদন ব”দ্ধি করতে পারি। একইসঙ্গে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের জন্য ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছি। এতে করে আমন ও বোরো মৌসুমে ধান কাটা সহজ হবে। কৃষকের উৎপাদন খরচ কমে আসবে। ফলে আমরা মনে করছি, আগামী বোরো মৌসুমে ব্যাপকহারে ধানকাটার মেশিন দিতে পারব। এতে কৃষি শ্রমিকের মজুরি কিছুটা সহনীয়সহ চাষিরা লাভবান হবে বলে জানান তিনি। বোরো ওঠা পর্যন্ত চালের ক্রাইসিস থাকবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আমনটা দেখি কেমন উৎপাদন হয়। তবে ব্যাপক ক্রাইসিস হবে না। প্রধানমন্ত্রী খাদ্য মন্ত্রণালয়কে চাল আমদানির একটা নীতিগত অনুমোদন দিয়ে রেখেছেন। যদি দেখা যায় যে বেশ দাম বেড়েছে সে ক্ষেত্রে অত্যন্ত সীমিত পরিমাণ তবে ওপেন না, ৫ বা ৬ লাখ টন সুনির্দিষ্ট পরিমাণ চাল আমদানি করা হতে পারে। তবে সেটা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।