আফগান ভীতি, সেরাটা দিতে ব্যর্থ টাইগাররা

0
647

ক্রীড়া ডেস্ক,খুলনাটাইমস:


আফগান মোকাবেলায় ভয়েই তটস্থ বাংলাদেশ! প্র্যাকটিস ম্যাচে আফগান ‘এ’ দলের বিপক্ষে যে হার হয়েছিল সেটাকে রিল্যাক্স ম্যাচ বলে যতই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলুক না কেন, বাংলাদেশ দলের যোগ্যতার এখনো ঘাটতি আছে আফগানদের হারানোর ক্ষেত্রে। সূচনা থেকেই যে ভীতি তারা ছড়িয়ে আসছে রশীদ খান, মুজিবুরকে নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সে ভয়েই শেষ। নিদাহাস ট্রফিতে যে ম্যাচ খেলেছিল তারা, কাল সেটা অনুপস্থিত ছিল দীর্ঘ গ্যাপে। অনেকটা সাদামাটা ক্রিকেট খেলেই হেরেছে বাংলাদেশ এ ম্যাচে ৪৫ রানের বড় ব্যবধানে। ওভারঅল আফগানরাই ভালো ক্রিকেট খেলেছে ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই। আসলে র‌্যাংকিংয়ে যে আফগানরা এগিয়ে তা পারফরম্যান্স দিয়েও প্রমাণ করে দেন।
প্রথম ব্যাটিং করতে নেমে স্মার্ট স্কোর সংগ্রহ করে ১৬৭/৮। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে একমাত্র সাকিব কিছুটা প্রভাব বিস্তার করেছেন। আর কেউই পারেনি আফগান ব্যাটসম্যানদের কন্ট্রোল করতে। সূচনা থেকেই একটা প্লান সামনে রেখেই খেলছিলেন তারা। যাতে ছিল সতর্কতা এবং টার্গেট স্কোরেরও তাড়া। সেটাতে সফল তারা দেরাদুনে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে। মোহাম্মাদ শাহজাদের দ্বায়িত্বপূর্ণ ৪০ রানের সাথে অপর ওপেনার উসমানের ২৬ রান ছিল উল্লেখযোগ্য। শেষের দিকে সামিউল্লাহ সেনোয়ারীর ১৮ বলে করা ৩৬ ও শফিকুল্লাহর ৮ বলে ২৪ রান আফগানদের স্কোর চলে যায় চ্যালেঞ্জিং পর্যায়ে। সামিউল্লার ইনিংসে ছিল তিন ছক্কা ও তিন চার। শফিকুল্লাহ হাঁকান তিন ছক্কা ও এক চার। সাকিব ১৯ রান দিয়ে নেন এক উইকেট। দুই উইকেট পেলে একটা রেকর্ড হয়ে যেত তার দ্রুততম ১০ হাজার রান ও পাঁচ উইকেট লাভের রেকর্ড। কিন্তু অপেক্ষায় তিনি পরের ম্যাচের জন্য। এ ছাড়া আবুল হাসান রাজু নেন দুই উইকেট। মাহমুদুল্লাহও এক ওভারে দুই উইকেট নিয়ে কিছুটা চাপে ফেলেছিল প্রতিপক্ষকে। কিন্তু তা ছিল সাময়িক।
এরপর ১৬৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস সুবিধা করতে পারেনি। লিটন ৩০ রান করে আউট হলেও তামিম প্রথম বলেই লেগ বিফোর হন মুজিবের বলে। সেখানেই অনেকটা বড় চাপ অনুভব করেন তারা। সাকিব নেমে এরপর এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও আউট হন বেশ দ্রুতই। এরপর যারা ব্যাটিংয়ে নামেন, তারা সবাই অভিজ্ঞ সূচনায় যারা নেমেছেন তাদের মতোই। কিন্তু দায়িত্ব নিতে পারেননি কেউই। কিছুটা ছন্নছাড়া ব্যাটিং করেই আউট হন একের পর এক। এতে প্রয়োজনীয় রান রেটও বেড়েছে ক্রমে। শেষ পর্যন্ত বিগ শট নেয়ার তাগিদে মাহমুদুল্লাহ আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে ম্যাচের সব আশা শেষ হয়ে যায়। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন তিনি ১১৮ রানে। ১৬৮ রানের টার্গেটে কী আর যাওয়া সম্ভব? ১ ওভার বাকি থাকতে ১২২ রানে অলআউট। তবে মার্জিন বেশ বড়ই হয়ে গেল ৪৫। এটা কমিয়ে পরের ম্যাচে হারের অর্থ সিরিজ হাতছাড়া। সিরিজ জিততে হলে আর হারা যাবে না। সাকিবরা তা পারবেন তো! ম্যাচে লিটন ছাড়া মাহমুদুল্লাহ করেছিলেন ২৯ রান। এরপর মুশফিকের ২০ রান উল্লেখযোগ্য। ম্যাচে মুস্তাফিজ ও মাশরাফির বড্ড অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে ব্যাটিংয়ে। ওটা থাকলে হয়তো ব্যাটিংটাও ভালো হতো। কেউ বলছেন হেড কোচের একটা অভাবও বড্ড অনুভব হয়েছে। ওয়ালশই বা কী করবেন। ১৬৮ রান যদি আফগানদের বিপক্ষে না করা যায় তাহলে যত বড় কোচই আসুক না কেন, তাতে কোনো সুফল আসবে বলে মনে হয় না। রশীদ খান তিন ওভারে নেন তিন উইকেট। এ ম্যাচে তিনি দ্রুত ৫০ উইকেট প্রাপ্তির রেকর্ডও করেন। এ ম্যাচ দিয়ে দেরাদুনের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটল।
আফগানিস্তান ইনিংস : ১৬৭/৮, বাংলাদেশ ইনিংস : ১২২/১০ (১৯ ওভার)
ফল : আফগানিস্তান ৪৫ রানে জয়ী

 

আল মামুন/টাইমস

সংবাদটি শেয়ার করুন।