আগামী সপ্তাহের মধ্যে শ্রমিকদের মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন হবে : জেলা প্রশাসক

0
523

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকার পাটকল শ্রমিকদের সকল বকেয়া মজুরী, বেতন ও জাতীয় মজুরী কমিশন মেনে নিয়েছে এমন ঘোষণা দিলেন খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ হেলাল হোসেন। আজ আগামী দুই একদিনের মধ্যে মজুরী ও বেতন পরিশোধ করা প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন হবে। মজুরী, বেতন পরিশোধ, মজুরী কমিশন বাস্তবায়িতর ঘোষনা দিলেও আন্দোলনে মাঠ ছাড়ছেনা শ্রমিকরা। মজুরী কমিশনের বাস্তবায়ন চুড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিক মঞ্চ থেকে জানিয়ে দিয়েছে শ্রমিক নেতারা।
গতকাল শনিবার পাটকল শ্রমিকদের ১১ দিনের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে নতুনরাস্তা মোড়ে শ্রমিক মঞ্চে দাড়িয়ে শ্রমিকদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক মোঃ হেলাল হোসেন বলেন, আপনারা রমজান মাসে আর কষ্ট না করে কর্মস্থলে ফিরে যান, আপনাদের ১২ থেকে ১৪ সপ্তাহের মজুরী প্রদান করা হবে। এজন্য খুলনা ও যশোর অঞ্চলের পাটকল শ্রমিকদের জন্য ৬০ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে সরকার, এ সপ্তাহের মধ্যে মজুরী কমিশন বাস্তবায়িত হবে। অপনাদের কষ্টের কথা প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করে শ্রমিক-কর্মচারীদের সকল পাওনা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকার। এর আগে একই ঘোষনা দেন বিভাগীয় শ্রম দপ্তর খুলনার উপ পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান। তবে এ ঘোষণায় কর্মবিরতি ও অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করবে কি না এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি শ্রমিক নেতারা।
জেলা প্রশাসক শ্রমিক মঞ্চ ত্যাগ করার পর তারা ইফতারির পরে শ্রমিক সভায় মুজরী কমিশন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে আজ ক্রিসেন্ট জুট মিলস ওয়াকার্স ইউনিয়নে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিকলীগ ও ৯ জুট মিলের সিবিএ, নন-সিবিএ নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত বা শিথিল হলেও হতে পারে বলে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা অঞ্চলের আহবায়ক মোঃ মুরাদ হোসেন জানান। এদিকে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের ডাকে গতকাল ১১ দিনে কর্মবিরতি এবং সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি গতকালও পালন করেছে শ্রমিকরা। সড়কের উপর যথারীতি দুই ওয়াক্তের নামজ ও ইফতারি করেছে আন্দোলন কারীরা।
চলমান কর্মবিরতির পাশাপাশি বিকাল ৪টায় খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলের শ্রমিকরা বিকাল ৪টায় স্ব-স্ব মিল থেকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় খুলনা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি গাড়ি মিছিলের সামনে পড়ে। মিছিলকারীরা গাড়িটির সামনের ও পিছনের গ্লাস ভাংচুর করে। এ সময় গাড়ির চালক মোঃ সিদ্দকুর রহমান ও আঃ রহমান এবং আঃ সালামসহ খুলনা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩ কর্মচারী আহত হয়। তাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ট্যাংকলরী মোড়ে আরো ২/৩টি মটরসাকেল ভাংচুর করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। একই কর্মসূচি আলিম ইর্ষ্টান মিলের শ্রমিকরা আটরা শিল্প এলাকায় এবং কার্পেটিং, জেজেআই জুট মিলের শ্রমিকরা রাজঘাটে রাজপথ, রেলপথ কর্মসূচি পালন পালন করেছে। সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী শ্রমিকদেন ইফতারির আয়োজন করে বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি খুলনার নেতা কর্মীরা। তারাও শ্রমিক মঞ্চে শ্রমিকদের আন্দোলনে একমত প্রকাশ করে।
ইফতারির পরে শ্রমিক সভায় সভাপতিত্ব করেন মোঃ মুরাদ হোসেন। সভায় বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিকলীগের সভাপতি সরদার মোতাহার হোসেন, মোঃ সোহরাব হোসেন, বেল্লাল মল্লিক, আঃ মান্নান, আবু দাউদ দ্বীন মোহাম্মদ, শেখ মোঃ ইব্রাহিম, আক্তার হোসেন, হেমায়েত হোসেন, মাওঃ হেমায়েত উদ্দিন আজাদী, দ্বী ইসলাম, খলিলুর রহমান, সেলিম আকন, সেলিম শিকদার, সরদার আলী আহমেদ, মিজানুর রহমান মানিক, গাজী মাসুম। আজ ৯ পাটকলের সিবিএ, নন-সিবিএ নেতাদের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে শ্রমিক, শ্রমিক পরিবার ও শিল্প এলাকার সাধারণ মানুষরা।