আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো চরমোনাই’র বাৎসরিক মাহফিল

0
547
শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, চরমোনাই ময়দান থেকে:
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ইসলামী মহাসম্মেলন তিনদিন ব্যাপী চরমোনাই মাহফিলের শেষ দিনে (১০ মার্চ) শনিবার আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন আমিরুল মুজাহিদীন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই। ২০ মিনিটের মোনাজাতে বিশ্ব মানবতার মুক্তি, দেশ-জাতির উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করেন।
এর আগে বাদ ফজর বয়ানে তিনি বলেন, নিজের মধ্য থেকে বড়ত্ব কমাতে হবে। ইমাম গাজ্জালী রহ. কাছে শয়তান এসে বললো আপনি তো অনেক বড় আলেম, আল্লাহ আপনাকে মাফ করে দিয়েছেন। তখন ইমাম গাজ্জালী রহ. বললেন ওরে শয়তান দূর হও আমার কাছ থেকে, এলেমের জন্য যদি মাফ করে দিতো হবে তুই শয়তান সবার আগে মাফ পেয়ে যেতি।
এছাড়াও মেয়েদের সম্পত্তি সঠিক ভাবে বন্টন করার আদেশ দেন। তিনি বলেন অনেকে আছে যারা ছেলেদের সব সম্পত্তি লিখে দেয়। বরং সম্পত্তির আসল মালিক আল্লাহ, সেই আল্লাহকে ভয় করো। ছেলে যেমন তার ভাগ পাবে তেমন মেয়ে তোর পিতার সম্পত্তির সঠিক ভাগ পাবে। অন্যথায় আল্লাহর কাছে জাবাবদিহীতা করতে হবে আর আল্লাহর জবাব দিতাহীতায় যদি কেহ পড়ে তবে তার নাজাতের কোন পথ থাকবে না।
তরিকার লোকদের সাবধান করে বলেন, আপনারা নিজেদের মধ্য থেকে অহংকার পরিহার করুন। চরমোনাই তরিকার আল্লাহর কুতুবগণ এই দ্বীনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছে শুধু মাত্র পথ ভোলা মানুষদের  আল্লাহর সাথে জুড়াইয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে, সুতরাং অহংকার গর্ব করলে ধ্বংস অনির্বায।এসব থেকে অবশ্যই ধূরে থাকতে হবে।
গত ৭ মার্চ মাহফিল শুরু হয়ে লাখো লোকের মিলন মেলা শনিবার শেষ হলো। আনুমানিক ৬০ লাখ মুসুল্লিদের সমাগম ঘটে । এবারের চরমোনাই মাহফিলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মুসুল্লির সমাগমে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জুমআর নামাজ৷
এবারও দেশ বিদেশের শীর্ষ স্থানীয় উলামায়ে কেরামগণ সম্মেলনে যোগ দান করেন। বিশেষ করেন দেওবন্দে শীর্ষ চারজন শায়েখ অবস্থান করেন মাহফিল ময়দানে।
এবারের মাহফিলে ৩ জন হিন্দু মুসলমান হয়, ৩০ জনের শুভ বিবাহ এবং ১৫ জন মুসল্লি ইন্তেকাল করেন।
মাহফিলের এই তিনদিন শরিয়াত, মারেফাত এবং মাদসার সম্পর্কে বয়ান করেন চরমোনাই পীর, দরবারের খলিফাগণ ও দেশবরেণ্য আলেমগণ। মোনাজাতের শেষে তরিকার নতুন পুরাতন মুরিদ মুজাহিদদের সবক আদায় করেন এবং নতুন সবক প্রদান করেন৷ মাহফিলের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি, তত্বাবধানে ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ ডাক্তার মোখতার হোসাইন ।
সুষ্ঠুভাবে মাহফিল সম্পন্ন হওয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন, মিডিয়া কর্মী, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সেচ্ছাসেবক বাহিনী ও সকল মুজাহিদকে ধন্যবাদ জানান।