আক্ষেপ বাড়ল আবু জায়েদ-ইবাদতের বোলিংয়ে

0
271

খুলনাটাইমস স্পোর্টস: চেতেশ্বর পুজারার আউটের পর যেন খুশিই হলেন হলকার স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের খেলা দেখতে আসা কিছু দর্শক। বিক্ষিপ্ত কিছু হাততালিও শোনা গেল। ব্যাটিংয়ে যে আসছেন বিরাট কোহলি! কিন্তু ভারত অধিনায়ক টিকলেন ¯্রফে দুই বল। তাকে শূন্য রানে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট নিলেন আবু জায়েদ চৌধুরি। বাড়ালেন আক্ষেপ, এই উইকেটে কেন তিন পেসার নিয়ে খেলছে না বাংলাদেশ। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে কোহলি আভাস দিয়েছিলেন, তিন পেসার নিয়ে খেলবেন তারা। স্বাগতিকরা ঠিকই নেমেছে তিন পেসার নিয়ে। গুঁড়িয়েও দিয়েছে বাংলাদেশকে। ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে পেসারদের জন্য যথেষ্ট সহায়তা আছে, তারপরও বাংলাদেশ খেলছে দুই পেসার নিয়ে। প্রথম দিনের খেলা শেষে অধিনায়ক মুমিনুল হক জানান, যাদের ওপর আস্থা আছে তারা খেলছেন ইন্দোর টেস্টে। স্কোয়াডে থাকা বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ও ডানহাতি পেসার আল আমিন হোসেনের জায়গা হয়নি একাদশে। বোলিং আক্রমণে আবু জায়েদ-ইবাদতের সঙ্গে আছেন তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ভারতের খুব বেশি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান না থাকায় মিরাজের জায়গায় একজন পেসার খেলাতে পারতো বাংলাদেশ। বোলিংয়ের পাশাপাশি মিরাজের ব্যাটিংয়ের কথা চিন্তা করেই হয়তো এই অফ স্পিনারকেই খেলানো হয়েছে। ভারত খেলছে ছয় ব্যাটসম্যান ও পাঁচ বোলার নিয়ে। বাংলাদেশ একাদশ সাজিয়েছে সাত ব্যাটসম্যান ও চার বোলার নিয়ে। বাড়তি ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলা বাংলাদেশের বরাবরের অভ্যাস। নতুন কোচ এলেও সেই ধারা ধরে রেখেছে তারা। অনেক কাঠ খড় পেরিয়ে ভারত এখন আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। এক দিনে চূড়ায় ওঠেনি দলটি। প্রক্রিয়া মেনে ধাপে ধাপে নিজেদের এগিয়ে নিয়েছে তারা। এর একটি ছিল, একটু ঝুঁকি নিয়ে হলেও কার্যকর কম্বিনেশন তৈরি করা। ৬ ব্যাটসম্যান ও ৫ বোলারের কম্বিনেশন দারুণভাবে কাজ করছে তাদের ক্ষেত্রে। অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান নিষিদ্ধ থাকায় বাংলাদেশ ভাবছে ‘একজন কম’ নিয়ে খেলছে তারা। তাই সফরকারীরা হয়ে গেছে আরও রক্ষণাত্মক। প্রথম দিনের খেলা শেষে মুমিনুল জানান, বাড়তি ব্যাটসম্যান নিতে গিয়েই তিন পেসার নিতে পারেননি তারা। প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে গুটিয়ে গেলেও ইন্দোর টেস্টে যে লড়াই সম্ভব, আগের দিন শেষ বেলায় কিছুটা দেখিয়েছিলেন আবু জায়েদ ও ইবাদত। দারুণ লাইন ও লেংথে বোলিং করেন দুই পেসার। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দেননি সহজ কোনো রান। সেদিন শুরুতেই বিপজ্জনক রোহিত শর্মাকে ফিরিয়ে দেন আবু জায়েদ। আরেক ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালের উইকেটও পেতে পারতেন তিনি। স্লিপে সহজ ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি ইমরুল কায়েস।দ্বিতীয় দিন সকালে পিচ রিপোর্ট দেওয়ার সময় সুনীল গাভাস্কার বলেন, এদিন উইকেট হবে দারুণ ব্যাটিং সহায়ক। ঘাসের রং আর সবুজ নেই্। উইকেট অনেকটাই বাদামী রংয়ের হয়ে গেছে। এই উইকেটেও প্রাণ জাগালেন আবু জায়েদ। আরেক প্রান্তে আঁটসাঁট বোলিংয়ে চাপটা ধরে রাখলেন ইবাদত। প্রথম ঘণ্টায় প্রায় পুরোটা সময় নিজেদের নিংড়ে দিলেন দুই পেসার। সুইং বোলিংয়ে নিজেকে মেলে ধরলেন আবু জায়েদ। তার বলে কঠিন এক ক্যাচ দিয়ে একবার বেঁচে যান পুজারা। পরের ওভারেই ভারতের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন আবু জায়েদ। ক্রিজে গিয়ে বিরাট কোহলি প্রথম যে বলটি খেলেন সেটা ছিল দারুণ এক ইয়র্কার। আবার যখন স্ট্রাইক পান হলকার স্টেডিয়ামের দর্শক ‘কোহলি, কোহলি’ রব তুলেছিলেন। দারুণ এক ডেলিভারিতে সেই রব থামিয়ে দেন আবু জায়েদ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০ ইনিংসে প্রথমবার রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হলেন কোহলি। এলবিডব্লিউর সফল রিভিউয়ে ভারত অধিনায়ককে ফিরিয়ে উচ্ছ্বাসে মাতেন জায়েদ, আনন্দের উপলক্ষ পায় বাংলাদেশ। একই সঙ্গে তিন পেসার না খেলানোর আক্ষেপটাও হয়তো বাড়ে আরেকটু।