অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরার রবিউল হকের বদলে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার

0
356

মেহেদী আলী সুজয়, সাতক্ষীরা: চার লক্ষাধিক টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে বাগেরহাটের মোল্ল্যারহাটের দীপন সংস্থার দায়েরকৃত মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামীর পরিবর্তে ভিন্ন নাম, ভিন্ন বাবার নাম ও ঠিকানার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরার কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপপরিদর্শক নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে। গত ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুরের নিজ বাড়ির সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুরের এসএম আমানউল্লাহ এর ছেলে রুহুল আমিন জানান, চার লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাত করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে বাগেরহাটের মোল্ল্যারহাটের দীপন এনজিও এর মালিক ২০১০ সালে কর্মচারি সাতক্ষীরা শহরের কাছারিপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা ও খুলনার বানরগাতির হাজী ইসমাইল রোডের ভাড়াটিয়া ডাঃ আনোয়ারুল হকের ছেলে রবিউল হক এর নামে সিআর-৭৯/১০ নং মামলা করেন। ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি আদালত আসামীকে দু’ বছরের সশ্রম কারাদ- ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। গত বছরের পহেলা মার্চ রবিউল হক এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
রুহুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, রবিউল হক কে কাছারিপাড়ায় না পেয়ে তার ভাই এসএম রবিউল ইসলামকে গত ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের বাড়ির পাশ থেকে গ্রেপ্তার করেন কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপপরিদর্শক নাসিরউদ্দিন। গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসএম রবিউল ইসলামই রবিউল হক । ভোটার আইডি কার্ড, নাগরিক সনদপত্র, পৌরসভার পানির বিলসহ বিভিন্ন কাগজপত্রাদি নিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও তিনি তার ভাই এসএম রবিউল ইসলামকে রবিউল হক বলে বুধবার আদালতের মাধ্যমে সাতক্ষীরা কারাগারে পাঠান। পরদিন বৃহস্পতিবার তাকে বাগেরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রহুল আমিন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, তার আইডি এর নামের সঙ্গে রবিউল হক এর নাম, বাবার নাম ও ঠিকানার গড়মিল রয়েছে। তার ভাই কখনো এনজিওতে কাজ করেননি বা খুলনার বানরগাতিতে থাকেনি। তার ভাইকে হয়রানিমূলক গ্রেপ্তারের বিষয়টি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তকাফিজুর রহমানকে অবহিত করা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। একপর্যায়ে গত ১১ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম হুমায়ুন কবীরের কাছে জামিনের আবেদন করে বিষয়টি অবহিত করা হলেও কোন প্রতিকার পাননি তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিবারের স্বজনরা বাগেরহাটের ডেপুটি জেলর নাহিদের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি অবহিত করেছেন। আগামি রোববার জজ কোর্টের অবকাশকালিন বেঞ্চে তারা ভাই এর জামিন আবেদন জানাবেন। একইসাথে হয়রানিমূলক গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করবেন।
জানতে চাইলে বুধবার রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপপরিদর্শক নাসিরউদ্দিনের ০১৭১৬-৬৪৬৩৬৭ মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
একই ভাবে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মোবাইল ফোন কেটে দেন।