অবশেষে সাঁপমারা খালের পুনঃখননে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মাঠে প্রশাসন

0
362

আব্দুর রব লিটু, দেবহাটা: অবশেষে সাঁপমারা খালের পুনঃখননে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্রভাবশালীদের হাত থেকে দখলদার মুক্ত হচ্ছে খালের দু’পাড়। শত চেষ্টায়ও রক্ষা করতে পারলো না অবৈধ স্থাপনা। প্রভাবশালীদের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি কাগজ দেখিয়ে মন গড়া ফতোয়াবাজির অবসান ঘটিয়ে বহু আকাঙ্খিত পারুলিয়া সাপমারা খালের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছে প্রশাসন। সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, যুগ যুগ ধরে প্রবহমান খালটির তলদেশে পলিমাটি ভরাট হয়ে চরাঞ্চলের সৃষ্টি এবং স্থানীয় অবৈধ দখলদারদের দখল প্রবণতায় নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছিলো ইছামতি নদীর সাথে সংযুক্ত সাপমারা খাল। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছিলো। তাছাড়া খালের পানি প্রবাহের স্বাভাবিক ধারা মুখ থুবড়ে পড়ায় ডোবা নালার মতো জমাট বাধা হাটু পানিতে ময়লা আবর্জণা পচে তীব্র দুর্গন্ধে দুষিত হয়ে উঠেছিলো এলাকার পরিবেশ। জলাবদ্ধতা নিরসন সহ উদ্ভুত সমস্যা সমাধান এবং পুনরায় সাপমারা খালটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে দেবহাটার ভাতশালা এলাকার ইছামতি নদীর সংযোগস্থল থেলে শুরু করে খালটির ১৯ কিলোমিটার বিস্তৃর্ন এলাকা নদী খনন পর্যায়ে খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে দুটি প্যাকেজে ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। সরকারী বরাদ্দ অনুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে চলতি অর্থ বছরের মাঝামাঝিতে খনন কার্যক্রম শুরু করে দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সার্বিক তত্বাবধানে বেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে খনন কাজটি। কিছু কিছু জায়গায় দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে খালের দুই পাড়। প্রাথমিক পর্যায়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও তাতে অনেক ভূমিহীন পরিবার অসহায় হয়ে পড়ে। সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়ে পরিবার গুলোর অনেকেই। কোন প্রভাব প্রতিপত্তি না থাকায় এবং এলাকার মানুষের বৃহৎ স্বার্র্থে সরকারের চলমান এ কর্মসূচীকে সঠিক ভাবে বাস্তবায়নের পথে তারা হয়নি কোন অন্তরায়। আশাশুনি শালখালি থেকে শুরু হয়ে দেবহাটার ভাতশালা পর্যন্ত খালের দু’পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসন পায়নি তেমন কোন বাধা। কিন্তু পারুলিয়া প্রধান সড়কের ব্রীজ হতে মায়াজাল শপিং কমপ্লেক্স সংলগ্ন সখিপুর-পারুলিয়ারর অপর সড়কের মধ্যবর্তী মাত্র ৪/৫ শত গজ এলাকা ছিল প্রভাবশালীদের দখলে। আর তাতে পন্ড হতে চলেছিল এই এলাকার খনন ক্জা। চলমান খনন কাজে প্রতিবন্ধকতা হয়ে ওঠে খালপাড় দখল করে থাকা অবৈধ স্থাপনা। কোন েেতায়াক্কা না করে সকল প্রতিবন্ধকতা দুরীকরণে সোমবার সারা বাংলাদেশের সাথে একযোগে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন। এর পূর্বে খালের দুপাড়ের অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ ও মাইকিং করা হয়। কিন্তু অনেকেই তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিলেও প্রভাবশালী চক্রের সদস্যরা তোয়াক্কা না করে তাদের কাজ চলামান রেখেছিল। এরই প্রেক্ষিতে পুন:রায় আবারো সরিয়ে নেওয়ার ঘোষনা দেওয়া হয় স্থাপনা। এতে কোন কর্ণপাত করেনি প্রভাশালীরা। সরকারি নিয়ম অনুসারে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এক যোগে সারাদেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের নির্দেশ ক্রমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌর্থ অভিযান পরিচালনা করেন এনডিসি দেওয়ান আকরামুল হক। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের, পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদুজ্জামান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান, কার্যসহকারী শেখ নুরুল্লাহ ও জাহাঙ্গীর হোসেন। আর এসময়ের দেবহাটা থানার ওসি তদন্ত উজ্জল কুমার মৈত্রের নের্তৃন্তে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে পুলিশ।