২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি মরিয়ম হত্যার আসামিরা

0
472

কেএইচএম:  বিষপানের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে মেয়ে মরিয়মকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়াসহ ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছেন আসামিরা। মেয়ের মা মনোয়ারা বেগম মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জেল্লাল হোসেন বলেন, আসামিরা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিছেন এমন কথা শোনা যাচ্ছে, তবে এ ধরনের কোন কাগজপত্র তার হাতে আসেনি। তাদের আটকের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গত ২৬ নভেম্বর মৃত মরিয়মের মা মনোয়ারা বেগম স্বাক্ষরিত বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানোর আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, নগরীর জোড়াগেট সিএন্ডবি কলোনী-এ-টাইপ-৯/৮ এর বাসিন্দা আঃ হাকিমের পুত্র আঃ রহিম। গত ২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর আঃ রহিমের সাথে মরিয়ম আক্তার বিয়ে হয়। বিবাহের পর তার মেয়ের গর্ভে হালিমা আক্তার রোদেলা জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই মরিয়মের স্বামী আঃ রহিম ও তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীসহ অন্যান্য সদস্যরা যৌতুকের জন্য তা মেয়েকে মারধর করতো। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তার প্রতিবন্ধী স্বামী কাশেম আলী শেখ ধার দেনা করে যৌতুকের টাকা দেন। পরবর্তীতে আবারও যৌতুকের জন্য চাপ দেয় মেয়ের জামাই ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পুনরায় যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় তার মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন বাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে তার মেয়ের বিনা অনুমতিতে আঃ রহিম পুনরায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
লিখিত আবেদনে মা মনোয়ারা বেগম উল্লেখ করেন, গত ৮ নভেম্বর নগরীর বড় বাজার থেকে মৃত মেয়ের শ্বাশুরী আকলিমা বেগম ইদুর মারা বিষ কেনেন। উক্ত বিষ সংরক্ষন রাখেন। গত ১১ নভেম্বর দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তার মেয়েকে একা ওই বাসায় তালা মেরে রাখেন। ওই দিন রাত ৯টার দিকে মেয়ের শ্বাশুরী আকলিমা বেগম রান্না করা সুজির সাথে বিষ মিশিয়ে তার মেয়েকে খাইয়ে দেয়। মেয়ে যখন বিষের যন্ত্রনায় ছটফট করে। পরদিন ১২ নভেম্ববর সকাল সোয়া ৯টার দিকে খুমেক হাসপাতালে তার মেয়েকে জ্বরের কথা বলে ভর্তি করায় মেয়ের স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এর আগে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে জানতে চাইলে মেয়ের শ্বাশুরী প্রতিবেশিকে জানায় মরিয়ম আক্রার স্টোক করেছে। ভর্তির করার পর মেয়ে যখন রক্ত বমি করে তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক বুঝতে পারে তাকে বিষাক্ত কোন পয়েজন বা বিষপান করানো হয়েছে। ওই সময় ডাক্তার বলেন মিথ্যা আশ্রয় না নিয়ে যদি সত্য কথা বলা হতো তাহলে মেয়েকে বাচানো সম্ভব হতো, এখন শেষ মুহুর্তে আর কিছুই করার নেই। পরবর্তীতে ওই মেয়েকে আইসিইউকে রেফার্ড করলে। পরবর্তীতে নেয়ার পথে মরিয়ম দুপুর ২টা ৫ মিনিটে মারা যান। মেয়ের মা মনোয়ারা বেগম দাবি করেন সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে চাইলে তাকে ভুল বুঝিয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি আত্মহত্যা মামলা দায়ের করান। যার নং মামলা নং-২০। তারিখ ১৫-১১-২০১৭। এরপর গত ২১ নভেম্বর  মেয়ের হত্যা মামলাকে আত্মহত্যা মামলায় রূপান্তরিত করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার প্রতিবাদে খুলনা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় তাদেরকে হুমকি প্রদার অব্যাহত রেখেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ নভেম্বর সকালে মরিয়ম আক্তার সোনিয়াকে তার স্বামী আঃ রহিম ও শাশুড়ি আকলিমা বেগম জ্বর ও সর্দির কথা বলে খুমেক হাসপাতালে সকাল সোয়া ৯টার দিকে ভর্তি করান। ওই সময় সোনিয়া বিষপান করা ছিল বিষয়টি চিকিৎসকদের কাছে গোপন করেন। খুমেক হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-২ ভর্তিকৃত সোনিয়াকে ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক যখন পরীক্ষা করতে যান তখনই বুঝতে পারেন সোনিয়া বিষ পান করা। কিন্তু তার আগেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। সোনিয়াকে হাসপাতালের আইসিইউতে রেফার্ড করা হলে নিতে নিতে সে বেলা ২টা ৫ মিনিটে মারা যায়। সোনিয়ার মৃত্যুর পরই হাসপাতাল থেকে আঃ রহিম পালিয়ে যান। পরববর্তীতে সোনিয়ার শাশুড়ি দুধের শিশু রোদেলাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসেন। স্থানীয় পুলিশ ওই দিন সোনিয়ার শ্বশুরবাড়ি সিঅ্যান্ডবি কলোনীতে গেলে দেখেন ঘরে তালা মেরে সবাই পালিয়ে যান। পরবর্তীতে মৃত মরিয়ম আক্তারের স্বামী আঃ রহিম, শ্বাশুড়ী আকলিমা বেগম, শ্বশুর আঃ হাকিম , মামা শ্বশুর মোঃ ইকবাল ও নোনদ শারমিন আক্তারকে আসামি করে আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করা হয়। মৃত মরিয়ম আক্তার হাসপাতালে মৃত্যুর পর থেকেই আসামিরা সবাই এখনও পলাতক রয়েছেন। হত্যা করেছে : বিভিন্ন দপ্তরে মায়ের আবেদন
# ২৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি আসামিরা
কেএইচএম
বিষপানের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে মেয়ে মরিয়মকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়াসহ ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছেন আসামিরা। মেয়ের মা মনোয়ারা বেগম মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জেল্লাল হোসেন বলেন, আসামিরা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিছেন এমন কথা শোনা যাচ্ছে, তবে এ ধরনের কোন কাগজপত্র তার হাতে আসেনি। তাদের আটকের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গত ২৬ নভেম্বর মৃত মরিয়মের মা মনোয়ারা বেগম স্বাক্ষরিত বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানোর আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, নগরীর জোড়াগেট সিএন্ডবি কলোনী-এ-টাইপ-৯/৮ এর বাসিন্দা আঃ হাকিমের পুত্র আঃ রহিম। গত ২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর আঃ রহিমের সাথে মরিয়ম আক্তার বিয়ে হয়। বিবাহের পর তার মেয়ের গর্ভে হালিমা আক্তার রোদেলা জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই মরিয়মের স্বামী আঃ রহিম ও তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীসহ অন্যান্য সদস্যরা যৌতুকের জন্য তা মেয়েকে মারধর করতো। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তার প্রতিবন্ধী স্বামী কাশেম আলী শেখ ধার দেনা করে যৌতুকের টাকা দেন। পরবর্তীতে আবারও যৌতুকের জন্য চাপ দেয় মেয়ের জামাই ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পুনরায় যৌতুকের টাকা না পাওয়ায় তার মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন বাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে তার মেয়ের বিনা অনুমতিতে আঃ রহিম পুনরায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
লিখিত আবেদনে মা মনোয়ারা বেগম উল্লেখ করেন, গত ৮ নভেম্বর নগরীর বড় বাজার থেকে মৃত মেয়ের শ্বাশুরী আকলিমা বেগম ইদুর মারা বিষ কেনেন। উক্ত বিষ সংরক্ষন রাখেন। গত ১১ নভেম্বর দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তার মেয়েকে একা ওই বাসায় তালা মেরে রাখেন। ওই দিন রাত ৯টার দিকে মেয়ের শ্বাশুরী আকলিমা বেগম রান্না করা সুজির সাথে বিষ মিশিয়ে তার মেয়েকে খাইয়ে দেয়। মেয়ে যখন বিষের যন্ত্রনায় ছটফট করে। পরদিন ১২ নভেম্ববর সকাল সোয়া ৯টার দিকে খুমেক হাসপাতালে তার মেয়েকে জ্বরের কথা বলে ভর্তি করায় মেয়ের স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এর আগে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে জানতে চাইলে মেয়ের শ্বাশুরী প্রতিবেশিকে জানায় মরিয়ম আক্রার স্টোক করেছে। ভর্তির করার পর মেয়ে যখন রক্ত বমি করে তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক বুঝতে পারে তাকে বিষাক্ত কোন পয়েজন বা বিষপান করানো হয়েছে। ওই সময় ডাক্তার বলেন মিথ্যা আশ্রয় না নিয়ে যদি সত্য কথা বলা হতো তাহলে মেয়েকে বাচানো সম্ভব হতো, এখন শেষ মুহুর্তে আর কিছুই করার নেই। পরবর্তীতে ওই মেয়েকে আইসিইউকে রেফার্ড করলে। পরবর্তীতে নেয়ার পথে মরিয়ম দুপুর ২টা ৫ মিনিটে মারা যান। মেয়ের মা মনোয়ারা বেগম দাবি করেন সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে চাইলে তাকে ভুল বুঝিয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি আত্মহত্যা মামলা দায়ের করান। যার নং মামলা নং-২০। তারিখ ১৫-১১-২০১৭। এরপর গত ২১ নভেম্বর  মেয়ের হত্যা মামলাকে আত্মহত্যা মামলায় রূপান্তরিত করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার প্রতিবাদে খুলনা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় তাদেরকে হুমকি প্রদার অব্যাহত রেখেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ নভেম্বর সকালে মরিয়ম আক্তার সোনিয়াকে তার স্বামী আঃ রহিম ও শাশুড়ি আকলিমা বেগম জ্বর ও সর্দির কথা বলে খুমেক হাসপাতালে সকাল সোয়া ৯টার দিকে ভর্তি করান। ওই সময় সোনিয়া বিষপান করা ছিল বিষয়টি চিকিৎসকদের কাছে গোপন করেন। খুমেক হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-২ ভর্তিকৃত সোনিয়াকে ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক যখন পরীক্ষা করতে যান তখনই বুঝতে পারেন সোনিয়া বিষ পান করা। কিন্তু তার আগেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। সোনিয়াকে হাসপাতালের আইসিইউতে রেফার্ড করা হলে নিতে নিতে সে বেলা ২টা ৫ মিনিটে মারা যায়। সোনিয়ার মৃত্যুর পরই হাসপাতাল থেকে আঃ রহিম পালিয়ে যান। পরববর্তীতে সোনিয়ার শাশুড়ি দুধের শিশু রোদেলাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসেন। স্থানীয় পুলিশ ওই দিন সোনিয়ার শ্বশুরবাড়ি সিঅ্যান্ডবি কলোনীতে গেলে দেখেন ঘরে তালা মেরে সবাই পালিয়ে যান। পরবর্তীতে মৃত মরিয়ম আক্তারের স্বামী আঃ রহিম, শ্বাশুড়ী আকলিমা বেগম, শ্বশুর আঃ হাকিম , মামা শ্বশুর মোঃ ইকবাল ও নোনদ শারমিন আক্তারকে আসামি করে আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করা হয়। মৃত মরিয়ম আক্তার হাসপাতালে মৃত্যুর পর থেকেই আসামিরা সবাই এখনও পলাতক রয়েছেন।